সারচার্জে নাকাল হবেন ধনীরা

.
.

এবার সারচার্জে আরও নাকাল হবেন ধনীরা। সারচার্জ আরোপে নতুন করে দুটি স্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। ফলে এটি চার স্তরে উন্নীত হচ্ছে।
দুই থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত মূল্যের সম্পদ থাকলে ওই ব্যক্তি বা করদাতার দেওয়া আয়করের ওপর আরও ১০ শতাংশ সারচার্জ হিসেবে এখন আদায় করা হয়৷ আর ১০ থেকে ২০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে এই হার ১৫ শতাংশ।
তবে অর্থমন্ত্রী চাইছেন এখন ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা পর্যন্ত সম্পদ থাকলে আয়করের ওপর ২০ শতাংশ হারে সারচার্জ আদায় করতে। আর ৩০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে ৩০ শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হবে। বর্তমানে সারচার্জ আরোপের ক্ষেত্রে শেষ দুটি স্তর নেই।
উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, কোনো ব্যক্তির যদি ৩৫ কোটি টাকার সম্পদ থাকে আর ওই ব্যক্তি যদি এক কোটি টাকা বছরে আয়কর দেন, তাহলে তাঁকে সারচার্জ হিসেবে এক কোটি টাকার ওপর ৩০ শতাংশ বা ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে। এর মানে হলো, ওই ব্যক্তিকে আয়কর ও সারচার্জ মিলিয়ে এনবিআরকে বছরে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে।
সারচার্জ কোনো কর নয়। এটি অতিরিক্ত সম্পদ থাকার কারণে একধরনের মাশুল আরোপ। অভিজাত এলাকায় বিলাসবহুল জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপন এখন অনেকটাই গা সওয়া হয়ে গেছে। কোটি টাকার বেশি দামি ফ্ল্যাট কিংবা বাড়িতে থাকেন অনেকেই। তাঁরা অহরহ বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ, লেক্সাস ব্র্যান্ডের গাড়ি চালান। কিন্তু আয়কর বিবরণীতে এগুলোর চিত্র উঠে আসে না। এসব সম্পদশালীর বেশির ভাগই তাঁদের আয়কর নথিতে এসব সম্পদ দেখান না। অনেকেই প্রকৃত মূল্যের অনেক কম দেখান। আবার এসব সম্পদের সঠিক বর্তমান বাজারমূল্যও উঠে আসে না আয়কর নথিতে।
সারচার্জ মূলত সম্পদের হস্তান্তর বা লেনদেন মূল্য দিয়েই হিসাব করা হয়। এভাবে সম্পদের মূল্যমান নির্ধারণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আবার জমি বা ফ্ল্যাট কেনার সময় নিবন্ধনমূল্যকেই সম্পদের মূল্য ধরা হয়। এতে নিবন্ধন করার সময় যে টাকায় জমি বা ফ্ল্যাট কেনা হয়, তার চেয়ে অনেক কম দেখানো হয় বলে বহুলভাবে অভিযোগ রয়েছে।
এনবিআরের সর্বশেষ হিসাবমতে, দেশে মাত্র পাঁচ হাজার ৬৬২ জন করদাতা রয়েছেন, যাঁরা দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক। ২০১২-১৩ করবর্ষের বার্ষিক আয়কর বিবরণীতে এরা সবাই দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদ দেখিয়েছেন। এতে এনবিআরের রাজস্ব প্রাপ্তি হয়েছে ৬০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।