৪০ লাখ গ্রাহকের নেক্সাস পে

সব ব্যাংকের গ্রাহকেরা ব্যবহার করতে পারেন। কোনো ব্যাংকের ডিজিটাল সেবা ব্যবহারে ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের এই অ্যাপসই শীর্ষে। এই ই–ওয়ালেটে প্রতি মাসে লেনদেন ৬০০ কোটি টাকা।

ডিজিটাল আর্থিক সেবার যুগে প্রতিটি ব্যাংক নিজস্ব অ্যাপস চালু করছে। এসব অ্যাপস দিয়ে ওই ব্যাংকের গ্রাহকেরা মুঠোফোন বা ট্যাবের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সেবা নিতে পারছেন। তবে বেসরকারি খাতের ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের ই-ওয়ালেট সেবা নেক্সাস পে হয়ে উঠেছে সব ব্যাংকের গ্রাহকের কাছে পছন্দের অন্যতম মাধ্যম। কারণ, এই অ্যাপসে যে কেউ হিসাব খুলতে পারছেন। আর ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক ছাড়াও এই অ্যাপসে টাকা আনা যাচ্ছে যেকোনো ব্যাংকের ভিসা ও মাস্টারকার্ড থেকে। এর ফলে তিন বছরেই প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক তৈরি করেছে নেক্সাস পে। আর এই অ্যাপস দিয়ে প্রতি মাসে লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। নেক্সাস পে অ্যাপস এখন দেশের সব ব্যাংকের ডিজিটাল সেবার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। সেটা গ্রাহক ও লেনদেন উভয় হিসাবেই।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে বিকল্প সেবা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নেক্সাস পে অ্যাপস চালু করে ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংক। ধীরে ধীরে এই অ্যাপসে যুক্ত করা হয় নানা ধরনের সেবা। যেকোনো গ্রাহক সহজেই গুগল প্লেস্টোর থেকে নেক্সাস পে অ্যাপস ডাউনলোড করতে পারছেন। এরপর নিজের ছবি তুলে, জাতীয় পরিচয়পত্র স্ক্যান করে নিবন্ধনের মাধ্যমে নেক্সাস পে ব্যবহার করতে পারছেন। নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে এই অ্যাপসে লয়্যালটি পয়েন্টস কার্ড নামে একটি ভার্চ্যুয়াল কার্ড ডাউনলোড হয়ে যায়।

অ্যাপস ব্যবহারকারী ডাচ্‌বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক না হলেও যেকোনো ব্যাংকের ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে টাকা আনা যায়। ডেবিট ও ক্রেডিট উভয় ধরনের কার্ড ব্যবহার করে টাকা স্থানান্তর করা যায়। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা (এমএফএস) রকেট গ্রাহকেরাও এই নেক্সাস পে অ্যাপস ব্যবহার করতে পারছেন। এরপর মোবাইল টপ আপ, বিভিন্ন পরিষেবা বিল পরিশোধ, অন্য হিসাবে টাকা পাঠানো ও অনলাইনে কেনাকাটার লেনদেনে নেক্সাস অ্যাপস ব্যবহার করা যায়।

নেক্সাস পে অ্যাপ ব্যবহার করে যেকোনো সময় পরিষেবা বিল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন, সিটি করপোরেশনের বিল, ক্রেডিট কার্ড বিল, ডিশের লাইনের বিল, ইনস্যুরেন্স, ইন্টারনেট বিল, টেলিফোন বিল ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে। এ অ্যাপে টোল কার্ড নামে একটি ভার্চ্যুয়াল কার্ড যুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত গাড়ির তথ্য দিয়ে টোল কার্ড রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা যায়। এখন সারা দেশে ৯টি সেতুর টোল এই কার্ড দিয়ে পরিশোধ করা যাচ্ছে।

জানা গেছে, চলতি মে মাসে নেক্সাস পের গ্রাহক ছিল ৪০ লাখ। এ মাসে অ্যাপটি ব্যবহার করে বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৯৭ কোটি টাকার। অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা, কেনাকাটা হয়েছে ১১ কোটি টাকা ও মোবাইল রিচার্জ হয়েছে ৯ কোটি টাকা। ফলে এক মাসেই ৫৯৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কোনো কোনো মাসে এ লেনদেন ৬০০ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে গেছে।

ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, একসময় নেক্সাস পে হবে সব লেনদেনের মাধ্যম। এর মাধ্যমে অন্য ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর করা যাবে। আবার এ অ্যাপস দিয়ে কার্ড ছাড়া এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন সুবিধা চালু করা হবে। এ কার্ড দিয়ে ই-কমার্স লেনদেন চালু হবে, এ জন্য কোনো কার্ডের তথ্য দিতে হবে না। প্রতিটি লেনদেনের জন্য আলাদা কার্ড নম্বর তৈরি হবে, যাতে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি না হয়।