বিসিএস মৌখিক পরীক্ষায় যেসব কাগজপত্র লাগবে

৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল বেরিয়েছে। এখন মৌখিক পরীক্ষা শুরুর পালা। এই পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় কী কী কাগজপত্র আনতে হবে, তা জেনে নিন।

লিখিত পরীক্ষায় পাস করাই মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের একমাত্র যোগ্যতা নয়। মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে আপনি যদি নির্দেশনা অনুযায়ী কাগজপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

মৌখিক পরীক্ষার দিন বোর্ডে প্রবেশের আগেই বোর্ডপ্রধানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আপনার কাছ থেকে দুই সেট কাগজপত্র বুঝে নেবেন। তাই বাসা থেকে বের হওয়ার আগেই দুই সেট কাগজপত্র ভালোভাবে গুছিয়ে নেবেন। কাগজপত্র বেশি করে নিয়ে গেলে কোনো সমস্যা নেই। যেহেতু পিএসসির আশপাশে কোনো ফটোকপির দোকান নেই, তাই কম করে নিয়ে গেলেই বরং সমস্যায় পড়বেন। তা ছাড়া অনেকের বাসা পিএসসি থেকে অনেক দূরে। কাগজপত্র কম থাকলে ওই সময় বাসায় গিয়ে তা আনতেও পারবেন না। এ কারণে টেনশনে পরীক্ষা খারাপ হতে পারে। নিচে দুই সেট কাগজপত্রের নমুনা দেওয়া হলো।

প্রথম সেট (মূল কাগজপত্র)
১. প্রবেশপত্র (Admit Card) এক কপি। প্রবেশপত্রটি http://bpsc.teletalk.com.bd ওয়েবসাইট থেকে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ডাউনলোড করে নেবেন।

২. মৌখিক পরীক্ষার সাক্ষাৎকারপত্র এক কপি। সাক্ষাৎকারপত্রটি পিএসসির ওয়েবসাইটে পিডিএফ ফাইল আকারে আপলোড করা থাকবে। ডাউনলোড করে নেবেন।

৩. সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র এক কপি। আবেদনের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে যেসব ডিগ্রির কথা উল্লেখ করেছিলেন, শুধু সেগুলোর সনদপত্র দিলেই চলবে।

৪. ইকুইভ্যালেন্স সনদ এক কপি। যাঁরা বিদেশ থেকে প্রকৌশল, মেডিকেল ও সাধারণ বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তাঁরা যথাক্রমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ইকুইভ্যালেন্স বা সমমান সনদ গ্রহণ করতে পারবেন।

৫. কোটা থাকলে কোটার সমর্থনে সব কাগজপত্র এক কপি। আবেদনের সময় যদি কোনো কোটার কথা উল্লেখ করে থাকেন, তাহলে কোটার সমর্থনে যাবতীয় প্রমাণ হাজির করতে হবে।

৬. ছাড়পত্র/ইস্তফাপত্র/অপসারণ আদেশ এক কপি। আবেদনের সময় যদি চাকরির কথা উল্লেখ করে থাকেন, তাহলে বর্তমানে সেই চাকরিতে থাকলে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছাড়পত্র নেবেন। আর চাকরি থেকে ইস্তফা নিলে ইস্তফাপত্র বা অপসারিত হলে অপসারণপত্র নেবেন।

৭. অবতীর্ণ সনদ (Appeared Cirtificate) এক কপি। যাঁরা অবতীর্ণ সনদ দিয়ে আবেদন করেছিলেন, তাঁরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা শুরু ও শেষের তারিখসংবলিত অবতীর্ণ সনদ সংগ্রহ করবেন।

৮. মূল সনদে চার বছর মেয়াদি ডিগ্রির কথা উল্লেখ না থাকলে সে-সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র এক কপি। যাঁদের অনার্সের সার্টিফিকেটে চার বছর মেয়াদি ডিগ্রির কথা বলা নেই, তাঁরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এই প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করবেন।

৯. ডাক্তারের নিকট থেকে ওজন, বুকের মাপ ও উচ্চতার প্রত্যয়নপত্র এক কপি। বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) রেজিস্টার্ড কোনো ডাক্তারের কাছ থেকে এই প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করবেন।

১০. বিপিএসসি ফরম-০৩ এক কপি। পিএসসির ওয়েবসাইটে গিয়ে এই ফরম পূরণ করে প্রিন্ট করে নেবেন।

১১. বিপিএসসি ফরম-০১ (Applicant’s Copy) দুই কপি। প্রবেশপত্রটি http://bpsc.teletalk.com.bd ওয়েবসাইট থেকে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ডাউনলোড করে নেবেন।

১২. প্রাব্‌–চাকরিবৃত্তান্ত যাচাই ফরম (Police Verification Form) দুই কপি। ফরমটি পিএসসির ওয়েবসাইটে পিডিএফ ফাইল আকারে আপলোড করা আছে। ডাউনলোড করে নেবেন।

দ্বিতীয় সেট (সত্যায়িত ফটোকপি)
১. তিন কপি সত্যায়িত ছবিসহ বিপিএসসি ফরম-০২ তিন কপি। ফরমটি পিএসসির ওয়েবসাইটে পিডিএফ ফাইল আকারে আপলোড করা আছে। ডাউনলোড করে নেবেন।

২. সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র এক কপি।

৩. ইকুইভ্যালেন্স সনদ এক কপি।

৪. কোটা থাকলে কোটার সপক্ষে সব কাগজপত্র দুই কপি।

৫. ছাড়পত্র/ইস্তফাপত্র/অপসারণ আদেশ এক কপি।

৬. অবতীর্ণ সনদ (Appeared Certificate) এক কপি।

৭. মূল সনদে চার বছর মেয়াদি ডিগ্রির কথা উল্লেখ না থাকলে সে-সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র এক কপি।

৮. ডাক্তারের কাছ থেকে ওজন, বুকের মাপ ও উচ্চতার প্রত্যয়নপত্র এক কপি।

৯. বিপিএসসি ফরম-০৩ এক কপি।

১০. বিপিএসসি ফরম-০১ (Applicant’s Copy) এক কপি।

১১. প্রাস্‌–চাকরিবৃত্তান্ত যাচাই ফরম (Police Verification Form) এক কপি।

১২. নাগরিকত্ব সনদপত্র। স্থায়ী ঠিকানার সমর্থনে মেয়র/ওয়ার্ড কমিশনার/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এই সনদপত্র সংগ্রহ করবেন।

পরিশেষে বলতে চাই, প্রতিটি কাগজের ওপর রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখবেন। নিজ দায়িত্বে সাক্ষাৎকারপত্র ও যাবতীয় নির্দেশাবলি ভালোভাবে পড়ে নেবেন। নির্দেশনা অনুযায়ী সব কাগজপত্র সঙ্গে নেবেন। সবার জন্য শুভকামনা রইল।

লেখক: বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত