সংকটকালে নেতৃত্ব কেমন হবে

যেকোন সংকটকালে সমস্যাসংকুল পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা অনেকখানিই নির্ভর করে নেতৃত্ব নৈপুণ্যের ওপর। রাষ্ট্রীয় কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্ব—সবখানেই প্রয়োজন হয় যোগ্য নেতার। যিনি সংকটকেও সমাধানের পথ খোঁজেন; কঠিন পরিস্থিতি সামলে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যান। করোনার এ ক্রান্তিকালে পাল্টে যাওয়া পৃথিবীতে তাই আবার প্রশ্ন উঠেছে যোগ্য নেতৃত্বের। সংকটকালে সমস্যা মোকাবিলায় নেতৃত্ব কেমন হওয়া দরকার, সে বিষয়ে গবেষণা করে সফল নেতৃত্বের সাতটি নীতি বা গুণের কথা তুলে ধরেছেন হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ইমেরিটাস প্রফেসর এবং মায়ামি হার্বার্ড বিজনেস স্কুলের সম্মানিত ডিন জন কুয়েলচ। এগলোকে সংক্ষেপে 7C (Calm, Confidence, Communication, Collaboration, Compassion, Community, Cash) বলা হয়। প্রফেসর কুয়েলচের এই সাত নীতির ওপর ভিত্তি করে এই লেখা প্রস্তুত করা হয়েছে।

শান্ত থাকা
আপনি যদি একজন নেতা হয়ে থাকেন, তবে এই কঠিন ও অনিশ্চিত সময়ে আপনাকে ধীরস্থির ও শান্ত থাকতেই হবে। অশান্ত ঢেউ উঠলেও যে মাঝি শান্ত ও অবিচল থাকতে পারেন, তিনিই তো যোগ্য কান্ডারি। সবাইকে অকূলপাথারে ভাসিয়ে গা বাঁচানো লোক কখনোই কারও আস্থা অর্জন করতে পারেন না; নেতা হয়ে ওঠেন না। মনে রাখবেন, আপনার অধীন কর্মী কিংবা অনুসারীরা আপনার দিকেই তাকিয়ে আছেন। আপনার নেতৃত্বধীন প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক, সুবিধাভোগী, সরবরাহকারী—যেই হোন না কেন, সবাই তেমন আচরণই করবেন, যেমনটি আপনি করবেন। সংকট যত দীর্ঘই হোক, সময়োপযোগী কার্যকর কর্মপরিকল্পনা অনেকখানি সহায়ক হতে পারে।

আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা
আপনাকে অবশ্যই শান্ত ও ধীরস্থির হতে হবে বটে, তাই বলে এক গ্লাস পানির মতো নিশ্চল নয়। দুই চাকার সাইকেল কখনো স্থির অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না, গতি যা–ই হোক, চলতেই হয়। তাই এই দুর্যোগেও দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে। ফলাফল যা–ই হোক, নেতা হিসেবে আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা, মনোবল ও কার্যকর সিদ্ধান্ত সহকর্মী ও স্টেকহোল্ডারদের অতিরিক্ত ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।

যোগাযোগ রক্ষা করা
আপনাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যেতে হবে, কোনো বিকল্প নেই। তবে তা যেন হয় অর্থপূর্ণ ও কার্যকর। ককপিটে বসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সবাই নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে পারেন। তা ছাড়া সংকটের সময়ে অনেক গুজব রটবে। আশপাশের অনেকে পরিস্থিতির জল আরও ঘোলাটে করে তুলতে পারে। এগুলো এড়িয়ে চলতে চায় যথাযথ যোগাযোগ, যোগ্য নেতার মতো আচরণ। এ জন্য আপনাকে প্রয়োজনে কৌশল অবলম্বন করতে হবে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের গঠন ও চালনানীতির সঙ্গে জড়িত সবার সঙ্গেই যোগাযোগ চালিয়ে যেতে হবে। মনে রাখবেন, এই সময়ে নীরবতা বা চুপচাপ থাকাটাই সবচেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ, নীরবতাই গুজব তৈরির সুযোগ তৈরি করে দেয়, নেতৃত্বের দুর্বলতা সামনে নিয়ে আসে।

সহযোগিতা নেওয়া
আপনার কাছে সব প্রশ্নের উত্তর না থাকাটাই স্বাভাবিক। সব সমাধানও হয়তোবা সাধ্যের বাইরে। কেউ আপনার কাছ থেকে তা আশাও করেন না। তবে সংকটের সময়ে আপনি আপনার কর্মী ও অনুসারীদের কীভাবে সাহস জোগান, কতটুকু শক্তিতে পরিণত করতে পারেন, তার ওপর নির্ভর করে সমস্যা মোকাবিলাই আপনার সফলতা। কর্মীদের সক্ষমতা ও দক্ষতা অনুসারে তাঁদেরকে বিভিন্ন টাস্কফোর্স ও সাব-টাস্কফোর্সে ভাগ করে দিন। প্রত্যেকের কাজ নির্দিষ্ট করে দিন, যাতে করে প্রত্যেকেই এই সংকটকাল অতিক্রম করতে ভূমিকা রাখতে পারেন। কর্মীদের দ্রুত কাজে নিয়োজিত করে ফেলতে পারলে গুজব তৈরির আশঙ্কা এমনিতেই কমে যাবে।

সমাজে সম্পৃক্ত থাকা
আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো সমাজে বসবাস করি। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন এক একটি সমাজের অংশ, তেমনি আমাদের স্কুল-কলেজগুলোও। একইভাবে রাষ্ট্রও বৈশ্বিক সমাজের অংশ। আমরা শুধু আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে নেতৃত্ব দিচ্ছি তা নয়, সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিজেদের সমাজকেও নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছি আমরাই। যেহেতু আমাদের সমাজ এখন একটি সংক্রামক ভাইরাসে প্রায় পর্যুদস্তু; সুতরাং নেতা হিসেবে আপনার উচিত এমন কিছু সমাজবান্ধব ও সহায়ক আচরণ করা, যাতে অন্যরা বেচে থাকার শক্তি ও সাহস পায়। অন্যদের জন্য সেগুলো উদাহরণ হিসেবে থেকে যায়।

সহানুভূতিশীল হওয়া
এই সময়ে সহানুভূতিটা খুব বেশি করে দরকার। আমাদের হাতে যদি একদল দক্ষ কর্মী থাকেন, তাহলে হয়তোবা আমরা এই চলমান অবস্থা থেকে একদিন মুক্তি পেতেও পারি। কিন্তু এটা মনে রাখা জরুরি যে আমাদের সব কর্মী হয়তোবা এই দুর্যোগে সমান স্বচ্ছন্দ না–ও হতে পারেন। তাঁদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর মাধ্যমে তাঁদের উদ্বেগের কারণটা জানুন, যতটা সম্ভব কমান। হতে পারে তাঁদের মধ্যে কারও বাড়িতে বয়স্ক বা অসুস্থ পিতা-মাতা আছেন; খাদ্যের কিংবা অর্থের অভাব আছে। তাঁরা এ সময় দ্বিগুণ চিন্তিত থাকবেন অনাগত অনিশ্চিত সময়ের কথা ভেবে। যেহেতু ভাইরাসের সংক্রমণ অসুস্থদের বেশি আক্রান্ত করছে, স্বাস্থ্যগতভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে, তাই তাঁরা নিজেদের ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে দুশ্চিন্তায়। তাঁদের যদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা কিংবা স্বজনদের দেখাশোনার জন্য সময় বা ছুটির দরকার হয়, অথবা তাঁরা যদি বাড়িতে থেকে কাজ করতে চান, তবে তাঁদেরকে সেই সুযোগটা দিন। সংকটে সহানুভূতি দেখানো নেতৃত্বের বড় গুণ।

অর্থপ্রবাহ
সংকটের সময় অর্থকড়ি আসলেই রাজা বনে যায়। প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করা উচিত। শুধু আবেগের ওপর ভর করে আপনার কর্মী, অনুসারী বা সুবিধাভোগী গ্রাহক বেশি দিন টিকে থাকবেন না। তাঁরা আর্থিক অবস্থার ব্যাপারেও আপনাকেই বিবেচনা করছেন। আপনি যেভাবেই অর্থ সংগ্রহ বা সঞ্চয় করুন না কেন, সেটা যেন সংকটে কাজে লাগে। সংকটের এই সময়ে আপনার আর্থিক পরিকল্পনা ও নীতির ওপরই নির্ভর করবে আগামীর সক্ষমতা; ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা।

লেখক: পেশাবিষয়ক লেখক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক।

সংকটকালে নেতৃত্ব কেমন হবে

নাজমুল হুদা

যেকোন সংকটকালে সমস্যাসংকুল পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা অনেকখানিই নির্ভর করে নেতৃত্ব নৈপুণ্যের ওপর। রাষ্ট্রীয় কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্ব—সবখানেই প্রয়োজন হয় যোগ্য নেতার। যিনি সংকটকেও সমাধানের পথ খোঁজেন; কঠিন পরিস্থিতি সামলে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যান। করোনার এ ক্রান্তিকালে পাল্টে যাওয়া পৃথিবীতে তাই আবার প্রশ্ন উঠেছে যোগ্য নেতৃত্বের। সংকটকালে সমস্যা মোকাবিলায় নেতৃত্ব কেমন হওয়া দরকার, সে বিষয়ে গবেষণা করে সফল নেতৃত্বের সাতটি নীতি বা গুণের কথা তুলে ধরেছেন হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ইমেরিটাস প্রফেসর এবং মায়ামি হার্বার্ড বিজনেস স্কুলের সম্মানিত ডিন জন কুয়েলচ। এগলোকে সংক্ষেপে 7C (Calm, Confidence, Communication, Collaboration, Compassion, Community, Cash) বলা হয়। প্রফেসর কুয়েলচের এই সাত নীতির ওপর ভিত্তি করে এই লেখা প্রস্তুত করা হয়েছে।

শান্ত থাকা 

আপনি যদি একজন নেতা হয়ে থাকেন, তবে এই কঠিন ও অনিশ্চিত সময়ে আপনাকে ধীরস্থির ও শান্ত থাকতেই হবে। অশান্ত ঢেউ উঠলেও যে মাঝি শান্ত ও অবিচল থাকতে পারেন, তিনিই তো যোগ্য কান্ডারি। সবাইকে অকূলপাথারে ভাসিয়ে গা বাঁচানো লোক কখনোই কারও আস্থা অর্জন করতে পারেন না; নেতা হয়ে ওঠেন না। মনে রাখবেন, আপনার অধীন কর্মী কিংবা অনুসারীরা আপনার দিকেই তাকিয়ে আছেন। আপনার নেতৃত্বধীন প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক, সুবিধাভোগী, সরবরাহকারী—যেই হোন না কেন, সবাই তেমন আচরণই করবেন, যেমনটি আপনি করবেন। সংকট যত দীর্ঘই হোক, সময়োপযোগী কার্যকর কর্মপরিকল্পনা অনেকখানি সহায়ক হতে পারে।

আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা 

আপনাকে অবশ্যই শান্ত ও ধীরস্থির হতে হবে বটে, তাই বলে এক গ্লাস পানির মতো নিশ্চল নয়। দুই চাকার সাইকেল কখনো স্থির অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না, গতি যা–ই হোক, চলতেই হয়। তাই এই দুর্যোগেও দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে। ফলাফল যা–ই হোক, নেতা হিসেবে আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা, মনোবল ও কার্যকর সিদ্ধান্ত সহকর্মী ও স্টেকহোল্ডারদের অতিরিক্ত ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।

যোগাযোগ রক্ষা করা 

আপনাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যেতে হবে, কোনো বিকল্প নেই। তবে তা যেন হয় অর্থপূর্ণ ও কার্যকর। ককপিটে বসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সবাই নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে পারেন। তা ছাড়া সংকটের সময়ে অনেক গুজব রটবে। আশপাশের অনেকে পরিস্থিতির জল আরও ঘোলাটে করে তুলতে পারে। এগুলো এড়িয়ে চলতে চায় যথাযথ যোগাযোগ, যোগ্য নেতার মতো আচরণ। এ জন্য আপনাকে প্রয়োজনে কৌশল অবলম্বন করতে হবে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের গঠন ও চালনানীতির সঙ্গে জড়িত সবার সঙ্গেই যোগাযোগ চালিয়ে যেতে হবে। মনে রাখবেন, এই সময়ে নীরবতা বা চুপচাপ থাকাটাই সবচেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ, নীরবতাই গুজব তৈরির সুযোগ তৈরি করে দেয়, নেতৃত্বের দুর্বলতা সামনে নিয়ে আসে।

সহযোগিতা নেওয়া 

আপনার কাছে সব প্রশ্নের উত্তর না থাকাটাই স্বাভাবিক। সব সমাধানও হয়তোবা সাধ্যের বাইরে। কেউ আপনার কাছ থেকে তা আশাও করেন না। তবে সংকটের সময়ে আপনি আপনার কর্মী ও অনুসারীদের কীভাবে সাহস জোগান, কতটুকু শক্তিতে পরিণত করতে পারেন, তার ওপর নির্ভর করে সমস্যা মোকাবিলাই আপনার সফলতা। কর্মীদের সক্ষমতা ও দক্ষতা অনুসারে তাঁদেরকে বিভিন্ন টাস্কফোর্স ও সাব-টাস্কফোর্সে ভাগ করে দিন। প্রত্যেকের কাজ নির্দিষ্ট করে দিন, যাতে করে প্রত্যেকেই এই সংকটকাল অতিক্রম করতে ভূমিকা রাখতে পারেন। কর্মীদের দ্রুত কাজে নিয়োজিত করে ফেলতে পারলে গুজব তৈরির আশঙ্কা এমনিতেই কমে যাবে।

সমাজে সম্পৃক্ত থাকা 

আমরা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো সমাজে বসবাস করি। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন এক একটি সমাজের অংশ, তেমনি আমাদের স্কুল-কলেজগুলোও। একইভাবে রাষ্ট্রও বৈশ্বিক সমাজের অংশ। আমরা শুধু আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে নেতৃত্ব দিচ্ছি তা নয়, সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিজেদের সমাজকেও নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছি আমরাই। যেহেতু আমাদের সমাজ এখন একটি সংক্রামক ভাইরাসে প্রায় পর্যুদস্তু; সুতরাং নেতা হিসেবে আপনার উচিত এমন কিছু সমাজবান্ধব ও সহায়ক আচরণ করা, যাতে অন্যরা বেচে থাকার শক্তি ও সাহস পায়। অন্যদের জন্য সেগুলো উদাহরণ হিসেবে থেকে যায়।

সহানুভূতিশীল হওয়া 

এই সময়ে সহানুভূতিটা খুব বেশি করে দরকার। আমাদের হাতে যদি একদল দক্ষ কর্মী থাকেন, তাহলে হয়তোবা আমরা এই চলমান অবস্থা থেকে একদিন মুক্তি পেতেও পারি। কিন্তু এটা মনে রাখা জরুরি যে আমাদের সব কর্মী হয়তোবা এই দুর্যোগে সমান স্বচ্ছন্দ না–ও হতে পারেন। তাঁদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর মাধ্যমে তাঁদের উদ্বেগের কারণটা জানুন, যতটা সম্ভব কমান। হতে পারে তাঁদের মধ্যে কারও বাড়িতে বয়স্ক বা অসুস্থ পিতা-মাতা আছেন; খাদ্যের কিংবা অর্থের অভাব আছে। তাঁরা এ সময় দ্বিগুণ চিন্তিত থাকবেন অনাগত অনিশ্চিত সময়ের কথা ভেবে। যেহেতু ভাইরাসের সংক্রমণ অসুস্থদের বেশি আক্রান্ত করছে, স্বাস্থ্যগতভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে, তাই তাঁরা নিজেদের ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে দুশ্চিন্তায়। তাঁদের যদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা কিংবা স্বজনদের দেখাশোনার জন্য সময় বা ছুটির দরকার হয়, অথবা তাঁরা যদি বাড়িতে থেকে কাজ করতে চান, তবে তাঁদেরকে সেই সুযোগটা দিন। সংকটে সহানুভূতি দেখানো নেতৃত্বের বড় গুণ।

অর্থপ্রবাহ 

সংকটের সময় অর্থকড়ি আসলেই রাজা বনে যায়। প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করা উচিত। শুধু আবেগের ওপর ভর করে আপনার কর্মী, অনুসারী বা সুবিধাভোগী গ্রাহক বেশি দিন টিকে থাকবেন না। তাঁরা আর্থিক অবস্থার ব্যাপারেও আপনাকেই বিবেচনা করছেন। আপনি যেভাবেই অর্থ সংগ্রহ বা সঞ্চয় করুন না কেন, সেটা যেন সংকটে কাজে লাগে। সংকটের এই সময়ে আপনার আর্থিক পরিকল্পনা ও নীতির ওপরই নির্ভর করবে আগামীর সক্ষমতা; ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা।

লেখক: পেশাবিষয়ক লেখক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক।