জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে থাকছে শতাধিক সুপারিশ: কমিশনপ্রধান
জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে কমিশনের প্রতিবেদনে শতাধিক সুপারিশ থাকছে এবং সেগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব। আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী এ তথ্য জানান। আগামীকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল গত মাসে, কিন্তু আমরা আমাদের কাজের কারণে পারিনি। কারণ, আমরা মাঠে গিয়েছি, লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গিয়ে আমরা কথা বলেছি, অনলাইনে আমরা মতামত নিয়েছি। এগুলোর ভিত্তিতে আজ আমরা প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে স্বাক্ষর করব। আগামীকাল (বুধবার) দুপুর সাড়ে ১২টায় আমরা প্রধান উপদেষ্টার অফিসে যাব এবং তাঁর কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করব। একই সঙ্গে আগামীকাল আইন কমিশনও তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।’ প্রতিবেদনে ১০০টির বেশি সুপারিশ থাকছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন এর বাইরে আমি কিছু জানাতে পারব না।’
এ সময় পাশে থাকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সেটি হবে পাবলিক ডকুমেন্ট। ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে, সবাই জানবেন। জমা দেওয়ার পরে সবাই জানুক, এতে ভুল–বোঝাবুঝির অসুবিধা থাকে না।’
কমিশনের প্রধানসহ সদস্যরা প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেছেন। স্বাক্ষর শেষে বের হওয়ার সময় আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যে সুপারিশ করেছি, সেগুলো সবই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। অসম্ভব কিছু হলে তো আমরা সেগুলো সুপারিশ করতাম না। সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কি না, সেটা তো এখন সরকার বুঝবে।’
গত বছরের ৩ অক্টোবর আট সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিশনের প্রধান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। পরে কমিশনের সদস্যসংখ্যা আরও তিনজন বাড়ানো হয়। জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা করে তুলতে এ কমিশন গঠন করা হয়।
৯০ দিনের (৩ মাস) মধ্যে প্রস্তুত করা প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়। এরপর তিন দফা বাড়িয়ে কমিশনের মেয়াদ ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় আগেই প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে কমিশন।
কমিশনে সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাবেক সচিব মোহাম্মদ তারেক এবং মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সচিব রিজওয়ান খায়ের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এ ফিরোজ আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা অধ্যাপক সৈয়দা শাহীনা সোবহান, নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ, শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ আমিনুর রহমান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেহেদী হাসান।