প্রাথমিকের মৌখিক পরীক্ষায় হাতের লেখা না মিললে প্রার্থিতা বাতিল

প্রতীকী ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় নির্বাচিত প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা চলছে। একেকটি উপজেলায় প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৭০ জনের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থীদের হাতের লেখাও যাচাই করা হচ্ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লিখিত পরীক্ষার সময় প্রার্থীরা ওএমআর শিটের টেক্সট বক্সে ইংরেজি ও বাংলায় যে দুটি অনুচ্ছেদ লিখেছেন মৌখিক পরীক্ষার সময় তা লিখতে বলা হবে। এভাবে প্রার্থীদের হাতের লেখার মিল-অমিল যাচাই করা হবে।

লিখিত পরীক্ষার সময় ওএমআর শিটের লেখার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষায় লেখা ইংরেজি ও বাংলা লেখার মিল পাওয়া না গেলে প্রার্থিতা বাতিলসহ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত সপ্তাহে মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছেন রওজাতুন জান্নাত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভাইভা বোর্ডে প্রবেশ করার পর একজন পরীক্ষক তাঁকে একটি কাগজ এগিয়ে দিয়ে ওএমআর শিটে লেখা ইংরেজি ও বাংলা বাক্য দুটি লিখতে বলেন।

রওজাতুন জান্নাত বলেন, কোনো প্রার্থী যদি ওএমআর শিটে লেখা বাক্য ভুলে যান, তাহলে পরীক্ষকেরা তা মনে করিয়ে দেন। হাতের লেখার মিল আছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।

তিন ধাপে লিখিত পরীক্ষা শেষে এখন উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে কোনো অপেক্ষমাণ তালিকা বা প্যানেল থাকবে না।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চূড়ান্ত ফলাফলে প্রতিটি উপজেলা বা শিক্ষা থানার জন্য নিয়োগযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা ছাড়া অন্য কোনো অপেক্ষমাণ তালিকা বা প্যানেল প্রস্তুত করা হবে না।

মৌখিক পরীক্ষার ২০ নম্বরের মধ্যে ১০ নম্বর এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতক শ্রেণির শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্ধারিত করা হবে। বাকি ১০ নম্বরের ওপর প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব, প্রকাশক্ষমতা, সাধারণ জ্ঞান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যাচাই করে ইন্টারভিউ বোর্ড নম্বর দেবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯’ অনুসরণ করে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। উত্তরপত্র মূল্যায়নসহ ফলাফল প্রস্তুতের সব কাজ সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবৈধ হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

দালাল বা প্রতারক চক্রের প্রলোভনে প্রলুব্ধ হয়ে কোনো প্রকার অর্থ লেনদেন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে। অর্থ লেনদেন বা অন্য কোনো অনৈতিক উপায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি হবে। কেউ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখালে তাঁকে নিকটস্থ থানায় সোপর্দ করা অথবা গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রাথমিকের প্রথম ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪০ হাজার ৮৬২ জন। দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৫৯৫ এবং তৃতীয় ধাপে ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।