‘একাধিক পরীক্ষা এক দিনে যাতে না হয়, সে জন্য ক্যাবিনেট ডিভিশন শাখা খুলতে পারে’

এক দিনে ১৪টি নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। কোনো কোনো নিয়োগ পরীক্ষা একই সময়ে নেওয়া হচ্ছে। এর সমাধানের জন্য কী করা উচিত বা সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) এখন কী করবে, তা নিয়ে চাকরি–বাকরির সঙ্গে কথা বলেছেন পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন।

সোহরাব হোসাইন

প্রশ্ন :

এক দিনে চাকরির ১৪টি পরীক্ষা আছে দেখেছেন নিশ্চয়ই। এতে পিএসসির একটি নন–ক্যাডারের পরীক্ষাও আছে। এখন আপনাদের পরিকল্পনা কী?

সোহরাব হোসাইন: এক দিনে এত পরীক্ষা পড়েছে, তাই চাকরি পরীক্ষার্থীদের বিপাকে পড়াই স্বাভাবিক। তবে আমরা ওই দিনের পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়েছি। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণায়ের নন–ক্যাডারের ওই পরীক্ষা ১৪ অক্টোবর নেওয়া হবে। আমরা নিয়োগজটের বিষয়টি মাথায় রেখে এখন থেকে নতুন যে নিয়োগ পরীক্ষা দেওয়া হবে, তা শুক্র ও শনিবার না রাখার চিন্তা করেছি। নিয়োগজট কমে গেলে আবার শুক্র–শনিবার পরীক্ষা নেবে পিএসসি। আমরা চাই না আমাদের পরীক্ষার কারণে কোনো চাকরিপ্রার্থী ভোগান্তির শিকার বা বঞ্চিত হোক। কেননা একজন চাকরিপ্রার্থী এক দিনে একাধিক পরীক্ষা দিলে কোনো পরীক্ষাই ভালোভাবে দিতে পারবেন না বা একটা মিস করতে পারেন।

প্রশ্ন :

শুক্র–শনিবারের পরিবর্তে অন্য দিন পরীক্ষা নিলে অনেকে চাকরি ছেড়ে আসতে পারবেন কি না, বিষয়টি কি আপনাদের ভাবনায় আছে?

সোহরাব হোসাইন: যাঁরা চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছেন, তাঁদের বড় অংশই তো বেকার। তাঁদের জন্য শুক্র বা শনিবার কোনো বিষয় নয়। আর যাঁরা চাকরি করছেন ও পরীক্ষায় অংশ নেবেন, তাঁরা ছুটি নিয়ে আসবেন। এ ছাড়া তো কোনো পথ নেই। সবার সুবিধা একসঙ্গে দেওয়া কঠিন। আর অন্য দিন পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি তো সাময়িক। পরীক্ষার জট কমে আসলে আবার শুক্র–শনিবার নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ দেব আমরা।

প্রশ্ন :

কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে?

সোহরাব হোসাইন: প্রায় দেড় বছর করোনার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ ছিল। কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো নিয়োগ পরীক্ষা নিতে পারেনি। কেবল আমরা ৪১তম বিসিএস, নার্স ও চিকিৎসক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছি, সেটিও জরুরি অবস্থায় বিশেষভাবে। যেহেতু কোনো প্রতিষ্ঠান নিয়োগ পরীক্ষা নিতে পারেনি, তাই এখন করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় সবাই পরীক্ষা নেওয়ার তারিখ দিয়েছে। সে জন্য এই জটের তৈরি হয়েছে। তবে এই জট থাকবে না। কয়েক সপ্তাহ পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

সোনিয়া জামানের স্বামী আসাদুজ্জামান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মিটার টেস্টার পদে নিয়োগ পরীক্ষা দিচ্ছেন। তিনিও প্রস্তুতি নিচ্ছেন পিএসসির চাকরির জন্য। ঘণ্টাব্যাপী পরীক্ষার সময়ে বাইরে বসে পড়াশোনা করছেন তিনি। মিরপুর গার্লস আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর
ছবি: জাহিদুল করিম

প্রশ্ন :

নিয়োগের একাধিক পরীক্ষা যেন এক দিনে না হয়, সে জন্য কী করা উচিত?

সোহরাব হোসাইন: একাধিক পরীক্ষা এক দিনে যাতে না হয়, সে জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কার্যক্রম তদারক বা সমন্বয়ের জন্য ক্যাবিনেট ডিভিশন একটি শাখা খুলতে পারে। সেখানে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়োগের ব্যাপারে চিঠি দিতে পারে। নিয়োগদাতার সেই চিঠি থেকে ক্যাবিনেট ডিভিশন চাকরির তারিখ নির্ধারণ করতে পারেন। এতে এক দিনে বা একই সময়ে একাধিক পরীক্ষার বিষয়টি এড়ানো যেতে পারে। এই পরিস্থিতি তো আগে কখনো হয়নি। বিশেষ পরিস্থিতির জন্য কেউ তৈরি ছিল না। তবে কয়েক সপ্তাহ পরীক্ষাগুলো নিয়মিত হলে নিয়োগ পরীক্ষার জট আর থাকবে না।