৪৩তম বিসিএসের চাকরিতে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক—কারা এগিয়ে

৪৩তম বিসিএসের নিয়োগের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে নিয়োগের সুপারিশ করেছে। এখন বিভিন্ন প্রতিবেদন যাচাই–বাছাই শেষ হলে এই বিসিএসের ক্যাডারদের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই বিসিএসের চূড়ান্ত ফলে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক—এই তিন শাখার প্রার্থীদের কে কতটা এগিয়ে, তা বের করেছে পিএসসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি সূত্র বলছে, ‘আমরা ৪৩তম বিসিএসের ফল বিশ্লেষণ করেছি। এতে বিজ্ঞানের প্রার্থীরাই সবচেয়ে এগিয়ে। এরপর আছেন মানবিকের প্রার্থীরা। ব্যবসায় শিক্ষার প্রার্থীদের অবস্থান সবার নিচে।’

সূত্রটি প্রথম আলোকে জানায়, বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী চাকরি পেয়েছেন প্রায় ৬৬ ভাগ। এর মধ্যে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় থেকে আছেন ৩৮ শতাংশের বেশি প্রার্থী, প্রকৌশলী আছেন ২৩ শতাংশের বেশি আর চিকিৎসক আছেন সাড়ে ৪ শতাংশের কিছু বেশি। তাঁরা সবাই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আসা। এ ছাড়া মানবিকের প্রার্থী আছেন প্রায় ২৪ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষার প্রার্থী আছেন মাত্র ৮ দশমিক ১৮ ভাগ ও অন্যান্য আছেন ২ শতাংশের কিছু বেশি।

পিএসসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, একসময় বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা বিসিএসে কম আসতেন। প্রকৌশলীরাও কম আসতেন। কিন্তু গত কয়েকটি বিসিএসে এই হার বেশ বেড়েছে। মানবিকের শিক্ষার্থীরাও আছেন। তবে ব্যবসায় শিক্ষার প্রার্থীরা কম আগ্রহী হচ্ছেন। পরিসংখ্যানও তা–ই বলছে।

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে ৪৩তম বিসিএসে ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। সিদ্ধান্ত অনুসারে ২ হাজার ১৬৩ জনকে ক্যাডার পদে ও ৬৪২ জনকে নন-ক্যাডার পদে মোট ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।

এই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। সেই হিসাবে সাড়ে তিন বছর চলে গেলেও আটকে আছে চূড়ান্ত নিয়োগের কার্যক্রম। এই বিসিএসে ২ হাজার ১৬৩ ক্যাডার পদের সর্বোচ্চ ৮০৩ জনকে সরকারি কলেজের প্রভাষক পদে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫, পুলিশ ক্যাডারে ১০০, কর ক্যাডারে ১০১, তথ্য ক্যাডারে ৪৩ ও সহকারী ডেন্টাল সার্জনে ৭৫ জনকে সুপারিশ করা হয়েছে।

নন-ক্যাডারে ৯ম, ১০ম ও ১২তম গ্রেডে মোট ৬৪২ জনকে বিভিন্ন পদে সুপারিশ করা হয়েছে। নন-ক্যাডারে ৬৪২ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭৪ জনকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

গত বছরের ২০ আগস্ট ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে পিএসসি। এতে উত্তীর্ণ হন ৯ হাজার ৮৪১ জন। জুলাইয়ে পিএসসি এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করেছিল। ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশিত হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ১৫ হাজার ২২৯ প্রার্থী। ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ কর্মকর্তা নেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ১০০, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫, শিক্ষা ক্যাডারে ৮৪৩, অডিটে ৩৫, তথ্যে ২২, ট্যাক্সে ১৯, কাস্টমসে ১৪ ও সমবায়ে ১৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল।

আরও পড়ুন

এই বিসিএসের কার্যক্রমের গতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, কিছুদিন আগেই ৪১তম বিসিএসের কার্যক্রম শেষ হলো। এখন ৪৩তম বিসিএসের কার্যক্রমও চলমান। বিভিন্ন প্রতিবেদনের চাহিদা পাঠানোর কাজ চলছে।