হোম অফিস না সরাসরি অফিস—উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কোনটি এগিয়ে
কর্মক্ষেত্রে কাজের ধরন বদলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি প্রশ্নও উঠছে—অফিসে নাকি বাসায় কাজের উৎপাদনশীলতা বেশি? সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা ও প্রবণতা বলছে, উভয়েরই সুবিধা–অসুবিধা রয়েছে। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান এখন হাইব্রিড মডেলকে এগিয়ে রাখছে।
কাজের পদ্ধতিতে এই পরিবর্তন প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতি, প্রযুক্তির ব্যবহার, এমনকি শহরের কর্ম–অর্থনীতিতেও প্রভাব রাখছে। রিমোট কাজের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান অফিস স্পেস কমাচ্ছে, অন্যদিকে কর্মীরা নতুন করে ভাবছেন কোথায় থাকবেন, কীভাবে সময় ব্যবস্থাপনা করবেন। একই সঙ্গে ডিজিটাল টুল ও অনলাইন সহযোগিতা প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার বেড়েছে, যা দূর থেকেও দলগত কাজকে সহজ করে তুলছে।
অফিসে কাজ: কাঠামো ও সরাসরি যোগাযোগ
অফিসে কাজ অনেকের জন্য শৃঙ্খলা ও মনোযোগ ধরে রাখার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। সরাসরি মিটিং, তাত্ক্ষণিক সিদ্ধান্ত ও সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
তবে দীর্ঘ যাতায়াত, সামাজিক আড্ডা বা অন্যান্য ব্যাঘাত কখনো কখনো মনোযোগ কমিয়ে দিতে পারে। যাঁদের রুটিন ও তদারকির মধ্যে ভালো কাজ হয়, তাঁদের জন্য অফিস পরিবেশ বেশি উপযোগী।
হোম অফিস: স্বাধীনতা ও নমনীয়তা
বাসা থেকে কাজের প্রধান সুবিধা হলো নমনীয়তা। যাতায়াতের ঝামেলা নেই, প্রয়োজনমতো বিরতি নেওয়া যায়। তা ছাড়া শান্ত পরিবেশে কাজের ফোকাস বাড়ে।
তবে ঘরোয়া কাজ, পরিবার, কিংবা অন্যান্য কারণে বিভ্রান্তি ঘটতে পারে, যা কাজের প্রতি মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। এর প্রভাব পড়তে পারে উৎপাদনশীলতায়। এ জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আলাদা কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।
অফিসে কাজ–জীবন ভারসাম্য: সীমারেখা স্পষ্ট
অফিসে কাজ করলে ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের মধ্যে স্পষ্ট সীমারেখা থাকে। কাজ শেষ করে অফিস থেকে বেরিয়ে এলেই ব্যক্তিগত সময় শুরু। কিন্তু কঠোর সময়সূচি ও দীর্ঘ যাতায়াত অনেক সময় ব্যক্তিগত সময় কমিয়ে দেয়, যা মানসিক চাপ বাড়াতে পারে।
হোম অফিস–জীবন ভারসাম্য: সীমারেখা ঝাপসা
রিমোট কাজ পরিবারে বেশি সময় দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে। ব্যায়াম, ছোটখাটো কাজ বা বিশ্রামের পরিকল্পনাও সহজ হয়। তবে সব সময় অনলাইনে থাকতে হবে—এমন চাপ ও কাজ ব্যক্তিগত জীবনের মিশ্রণ অনেকের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
কোনটি সেরা?
এ প্রশ্নের সরল কোনো উত্তর নেই। কাজের ধরন, ব্যক্তিত্ব, এবং বাসার পরিবেশের ওপর নির্ভর করে কার জন্য কোনটি কার্যকর হবে। এই কারণে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এখন হাইব্রিড মডেলের দিকে ঝুঁকছে—যেখানে অফিস ও বাসা দুই জায়গা থেকেই কাজের সুযোগ থাকে। এতে কর্মীরা যেমন নমনীয়তা পান, তেমনি প্রতিষ্ঠানও পায় প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের সুবিধা।
পরিশেষে, কাজের ধরণ যা–ই হোক, নিজের কর্মশৈলী বোঝা এবং সময়সীমা ঠিক করে চলাই উৎপাদনশীলতা ও সুস্থ কাজ–জীবন ভারসাম্য রক্ষার মূল চাবিকাঠি। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে