ইন্দোনেশিয়ায় ৪ দিনের অফিস, ৩ দিন ছুটি, মাসে দুই সপ্তাহে এ সুযোগ

প্রথম আলো ফাইল ছবি

কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, সৌদি আরব, ডমেনিকান প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন কোম্পানি চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করেছে। পরীক্ষামূলক পদ্ধতির সফলতার কারণে চার দিনের কর্মসপ্তাহের নিয়মকে অনেকে স্থায়ী করেছে। করোনা মহামারির পর থেকে নানা দেশে এ ব্যবস্থা চালু হয়ে আসছে। এবার এ পথে হাটছে ইন্দোনেশিয়া। ছয় মাস পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফল হওয়ার পর চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করেছে দেশটির একটি মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের কর্মীরা চার দিন অফিস করবেন, তিন দিন ছুটি কাটাবেন।

আরও পড়ুন

গতকাল রোববার যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য ইনডিপেনডেন্ট এক খবরে জানিয়েছে, ‘কমপ্রেসড ওয়ার্ক শিডিউল’ নামের এ উদ্যোগ স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে চালু করেছে ইন্দোনেশিয়ার মন্ত্রণালয়টি। এ ক্ষেত্রে সপ্তাহে তিন দিন ছুটি কাটানোর সুযোগটি পাবেন তাঁরাই, যাঁরা ৪ দিনের মধ্যে ৪০ ঘণ্টা কাজ করবেন। কর্মচারীরা প্রতি মাসে দুই সপ্তাহে এ সুবিধা নিতে পারবেন। যাঁরা নির্ধারিত ৪০ ঘণ্টার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন না, তাঁরা আগের মতোই সপ্তাহে ৫ দিন অফিস করবেন।

ইন্দোনেশিয়ার মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, প্রযুক্তি ও তথ্যবিষয়ক উপমন্ত্রী টেডি ভরত বলেন, যাঁরা এক সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার কাজ করবেন, তাঁরা চাইলে ৪ দিনের কর্মসপ্তাহ নিতে পারবেন। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয় এবং এটি অনুমোদনসাপেক্ষ ব্যাপার।

প্রাথমিকভাবে চার দিনের কর্মসপ্তাহ শুধু রাষ্ট্রীয়মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান–সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ে কার্যকর করা হয়েছে। এখনো নিশ্চিত নয় যে ইন্দোনেশিয়ার অন্য মন্ত্রণালয়ও এই কর্মসূচি গ্রহণ করবে কি না। তবে প্রাথমিক সাফল্য পেলে এটি দেশব্যাপী সম্প্রসারিত হতে পারে।

আরও পড়ুন

গত বছরের মার্চে ইন্দোনেশিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে এ কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। সে সময় মন্ত্রণালয়ের প্রধান এরিক তোহির বলেছিলেন, ‘তরুণ কর্মচারীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এ কর্মসূচি তাঁদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে। এই উদ্যোগ কর্মীদের অলস বানানোর জন্য নয়। এ ছাড়া এটি এমন নয় যে প্রতি শুক্রবার ছুটি থাকবে। যাঁরা নির্ধারিত ৪০ ঘণ্টা কাজ সম্পন্ন করবেন, শুধু তাঁরাই অতিরিক্ত ১ দিন ছুটি পেতে পারবেন।’

আরও পড়ুন

সপ্তাহে চার দিন কাজের ধারণাটির সঙ্গে অনেক দেশই যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম দেশ হিসেবে ২০২২ সালে চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করে বেলজিয়াম। জাপানেরও কিছু শহরও চার দিনের কর্মসপ্তাহ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে। যুক্তরাজ্যের ২০০টি কোম্পানি স্থায়ীভাবে চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করেছে। তারা কর্মীদের বেতন অপরিবর্তিত রেখেছে। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ঘোষণা দেয়, সব সরকারি সংস্থায় প্রতি সপ্তাহে সাড়ে চার দিন কাজ চলবে। সৌদি আরবের একটি প্রতিষ্ঠান পাঁচ দিনের অফিস ও দুই দিনের ছুটি বদলে তিন দিন ছুটি ও চার দিনের অফিস চালু করছে।

প্রথম আলো ফাইল ছবি

এদিকে সপ্তাহে চার দিন অফিস সময় চালুর পর যুক্তরাজ্যের ৯২ শতাংশ নিয়োগকর্তা বলেছেন, সংক্ষিপ্ত কর্মসপ্তাহ কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ও আউটপুট বাড়িয়ে দেয়। চার দিন অফিস চালু হওয়ায় তাঁদের চাপের মাত্রা কমে এসেছে। শারীরিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতারও উন্নতি হয়েছে।