সকালের অ্যালার্ম, না ফোনভীতি? জেন–জিরা কর্মজীবনের চ্যালেঞ্জ জয় করবেন যেভাবে

ট্রিনিটি কলেজ অব লন্ডনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ গবেষণায় মতামত দেন ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ। যুক্তরাজ্যজুড়ে ১৬ থেকে ২৯ বছর বয়সীরা এই জরিপে অংশ নেন।ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া

যদি আপনি একজন মিলেনিয়াল হন, তাহলে হয়তো অফিসের ফোন ধরা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাববেন না। কিন্তু জেনারেশন জেড (জেন জেড)–এর কাছে কর্মক্ষেত্রের এই সাধারণ কাজটিই উদ্বেগের বিশাল কারণ। এই সপ্তাহে প্রকাশিত একটি গবেষণার তথ্য অনুসারে, ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া কর্মজীবীরা যে বিষয়গুলো নিয়ে আতঙ্কিত, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—খুব সকালে ওঠা, বয়স্ক সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করা কিংবা কর্মক্ষেত্রে সাধারণ আলাপচারিতায় নিজেকে যুক্ত করা।

ট্রিনিটি কলেজ অব লন্ডনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ গবেষণায় মতামত দেন ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ। যুক্তরাজ্যজুড়ে ১৬ থেকে ২৯ বছর বয়সীরা এই জরিপে অংশ নেন। এতে দেখা যায়, তরুণদের ৩৮ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে ছোটখাটো আলাপচারিতায় ভয় পান। প্রায় ৬০ শতাংশ বলেছেন, বয়স্ক সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে তাঁদের সমস্যা হয়, আর ৩০ শতাংশ তরুণ ফোন ধরতে ভয় পান।

তবে এসব কর্ম–আতঙ্ক কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞরা জেনারেশন জেডের এই উদ্বেগগুলো দূর করার জন্য দিয়েছেন কিছু সহজ পরামর্শ—

গবেষণার তথ্য অনুসারে, ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া কর্মজীবীরা যে বিষয়গুলো নিয়ে আতঙ্কিত, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—খুব সকালে ওঠা, বয়স্ক সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করা কিংবা কর্মক্ষেত্রে সাধারণ আলাপচারিতায় নিজেকে যুক্ত করা।
ফাইল ছবি প্রথম আলো

ফোনভীতি কাটানোর কৌশল

একসময় ফোন করাই ছিল যোগাযোগের মূল উপায়, কিন্তু এখনকার টেক্সটিং, অনলাইন বুকিং ও এআই গ্রাহক পরিষেবার যুগে ফোন ধরাটা নতুন প্রজন্মের কাছে বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ফোনভীতি বা টেলিফোবিয়া কাটানোর জন্য অনুশীলন দরকার। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, প্রথম ধাপ হিসেবে বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের নিয়মিত ফোন করুন। এতে বাস্তব সময়ে দুজন মানুষের কথোপকথনের স্বাভাবিক ছন্দটি আয়ত্ত হবে। ফোন করার আগে কলটির উদ্দেশ্য কী, কেন করছেন ও কী কী তথ্য প্রয়োজন—সবই একটি কাগজে টুকে নিন। এতে নার্ভাস হয়ে গেলেও আপনি দ্রুত নোটস দেখে কথা এগিয়ে নিতে পারবেন। যদি কোনো সহকর্মী বা কলকারী রাগান্বিত বা অভদ্র আচরণ করেন, তবে মনে রাখবেন, এটি তাঁদের সমস্যা। এটাকে ব্যক্তিগতভাবে নেওয়া যাবে না।

আরও পড়ুন

সকালে ওঠার প্রস্তুতি

সকালে ঠিক সময়ে অফিসে পৌঁছানোর জন্য ভোরে অ্যালার্ম সেট করা ও বিছানা ছাড়া জেনারেশন জেডের আরেকটি বড় উদ্বেগের কারণ। ‘নো ইয়োর ওন পাওয়ার’ বইয়ের লেখক ড. রাধা মদগিলের পরামর্শ হলো, নতুন চাকরি শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই ঘুমের রুটিনে পরিবর্তন আনা শুরু করুন। প্রতিদিন একটু একটু করে ঘুমের সময় ও ঘুম থেকে ওঠার সময় এগিয়ে আনুন।

সকালের কাজগুলো আগের রাতে গুছিয়ে রাখুন। পোশাক রেডি রাখুন। নাশতার জিনিসপত্র বের করে রাখুন। এই ছোট প্রস্তুতিগুলো দুশ্চিন্তা কমাবে। তাড়াহুড়া না করে ধীরগতিতে কাজ করুন। এতে কাজের শক্তি বজায় থাকবে। এভাবে নতুন কর্মজীবনে সকালে ওঠার চ্যালেঞ্জ সহজেই জয় করা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন

সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় যুক্ত হবেন যেভাবে

নতুন মানুষের মুখোমুখি হওয়ার ভয় না পেয়ে এটিকে একটি অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে দেখার পরামর্শ দেন এক্সিকিউটিভ কোচ মেরি ও’রিওর্ডান। তিনি মনে করেন, কর্মক্ষেত্রেই অনেকে আজীবনের বন্ধু খুঁজে পান। সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতা শুরু করতে খুব ব্যক্তিগত বিষয় (কারও পারিবারিক জীবন) এড়িয়ে চলুন; বরং কাজ–সম্পর্কিত সাধারণ বিষয় দিয়ে শুরু করা ভালো। যেমন ‘আপনি কত দিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানে আছেন?’ বা ‘আপনার কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?’ এগুলো দিয়ে সহজেই কথা শুরু করা যেতে পারে। মনে রাখবেন, সরল প্রশ্ন করলে মানুষ খুশি হয় এবং উদারতা দেখায়। অন্যের অভিজ্ঞতা থেকে আপনিও অনেক কিছু শিখতে পারবেন।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন