পুলিশ ক্যাডারে প্রথম তারিক-উল্লাহ্ বলেন, দেশে থেকে যাওয়ার ইচ্ছা থেকেই বিসিএসে আসা
৪৩তম বিসিএসে ক্যাডার পছন্দক্রম (ক্যাডার চয়েস) তালিকায় এম এম তারিক-উল্লাহ্র প্রথম পছন্দ ছিল পুলিশ ক্যাডার। এ বিসিএসের প্রকাশিত ফলে নিজের পছন্দ অনুযায়ী শুধু পুলিশ ক্যাডারই পাননি, এই ক্যাডারে প্রথমও হয়েছেন তিনি। এম এম তারিক-উল্লাহ্ বলেন, ‘যেহেতু আমার প্রথম পছন্দ ছিল পুলিশ ক্যাডার, তাই ফলের তালিকা খুলেই পুলিশ ক্যাডারে নিজের রোল খুঁজতে শুরু করি। প্রথমেই নিজের রোল দেখে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। পাশের বন্ধুকেও মিলাতে বলে নিশ্চিত হই। আব্বুকে ফোন করে পুলিশে প্রথম হয়েছি এ কথা জানাতেও পারছিলাম না উত্তেজনায়।’
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) থেকে ২০১৯ সালে স্নাতক পাসের পর বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন এম এম তারিক-উল্লাহ্। করোনাভাইরাসের কারণে বাড়িতে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
এম এম তারিক-উল্লাহ্ বলেন, ‘প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেছি। বন্ধুদের পরামর্শে বই কিনেছি। কয়েকজন বন্ধু একসঙ্গে প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রিলিমিনারির ক্ষেত্রে বারবার রিভিশন এবং লিখিতের জন্য লেখার মানোন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছি। প্রতিযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্মে পরীক্ষা দিয়ে নিজের প্রস্তুতি যাচাই করেছি।’
মাগুরার সরকারি আর এস কে এইচ মডেল মাধ্যমিক স্কুল থেকে জিপিএ–৫ পেয়ে এসএসসি এবং নটরডেম কলেজ থেকে জিপিএ–৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন এম এম তারিক-উল্লাহ্। এরপর ভর্তি হন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে। আইইউটি থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ৩.৫০ সিজিপিএ পেয়ে স্নাতক পাস করেন তিনি।
বিসিএসে আসার পেছনে কারণ হিসেবে এম এম তারিক-উল্লাহ্ বলেন, দেশে থেকে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা থেকেই বিসিএস পরীক্ষা দেওয়া। দেশের প্রথম শ্রেণির চাকরিতে বিসিএস থেকে সর্বোচ্চ নিয়োগ হয়। পরিবারের উৎসাহে বিসিএসকে প্রধান লক্ষ্য করেছি। এ ছাড়া এ চাকরিতে সেবার মাধ্যমে মানুষের কাছাকাছি থাকার সুযোগ রয়েছে।
৪৩তম বিসিএস পরীক্ষা এম এম তারিক-উল্লাহ্র দ্বিতীয় বিসিএস পরীক্ষা। এ বিসিএসে তাঁর প্রথম পছন্দ ছিল পুলিশ ক্যাডার, দ্বিতীয় প্রশাসন ক্যাডার এবং তৃতীয় শুল্ক ও আবগারি ক্যাডার।
এম এম তারিক-উল্লাহ্ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম বিসিএস নানা জটিলতায় গুরুত্বসহকারে দিতে পারিনি। ৪৩তম বিসিএস আমার দ্বিতীয় বিসিএস, তবে এটাই ছিল প্রথম ভাইভা। ৪৫তম বিসিএসে প্রিলিমিনারিতে পাস করে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়েছি। তবে যেহেতু ইতিমধ্যে আমি আমার পছন্দের ক্যাডার পেয়েছি, তাই ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা নেই।’
বিসিএসের তিনটি ধাপ প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। এ তিনটি ধাপের মধ্যে এম এম তারিক-উল্লাহ্র কাছে প্রিলিমিনারি ও মৌখিক পরীক্ষা বেশি কঠিন মনে হয়েছে। তিনি বলেন, প্রিলিমিনারি ও ভাইভা কঠিন। কারণ, এই দুই ধাপে কম সময়ে অনেক বেশি পার্থক্য গড়ে দেয়। লিখিত পরীক্ষায় ৯০০ নম্বর থাকে, তাই কোনো একটি বিষয়ে খারাপ করলে অন্য বিষয় দিয়ে রিকভার করা যায়।
নতুন যেসব প্রার্থী বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের উদ্দেশে এম এম তারিক-উল্লাহ্ বলেন, উন্মাদনা নয়, ধারাবাহিকতা রক্ষা করে প্রস্তুতি নিতে হবে। ক্যাডার সার্ভিসে আসার ইচ্ছাটা জাগিয়ে রাখতে হবে। প্রতিযোগিতায় নিজের অবস্থানের সঠিক মূল্যায়ন করা শিখতে হবে। সে অনুযায়ী ধৈর্য ও পরিশ্রমের সঙ্গে নিজেকে এগিয়ে নিতে হবে, আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে।
এম এম তারিক-উল্লাহ্ বলেন, ক্যাডার সার্ভিসে গেলেও উচ্চশিক্ষা অর্জনের ইচ্ছা আছে। দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করব।