কর্মক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের কর্মীদের মধ্য জেন-জি কর্মীদের নিয়ে নানা আলোচনা আছে। জেনারেশন জেড (জেন–জি), অর্থাৎ ১৯৯৭ সালের পর জন্ম নেওয়া কর্মীরা অন্যদের তুলনায় বেশি প্রশংসা প্রত্যাশা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কয়েকটি জরিপে এ প্রজন্মের কাজের ধরন নিয়ে এম বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছিল। এবার দেশটির জানাল জেন–জি কর্মীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সেরা শহর কোনগুলো। তালিকার বেশির ভাগই এখন আমেরিকার মধ্য-পশ্চিম অঞ্চলে। নতুন এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে এইচআর টেকনোলজি কোম্পানি চাকরি।
মার্কিন জনশুমারি ব্যুরো এবং ব্যুরো অব ইকোনমিক অ্যানালাইসিসের তথ্য ব্যবহার করে তিনটি মূল সূচকের ভিত্তিতে শহরগুলোর র্যাঙ্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো চাকরির সুযোগ, সাশ্রয়িতা এবং সামাজিক জীবন।
সামাজিক জীবনের স্কোর এসেছে ওই শহরে জেন–জেড জনসংখ্যার অনুপাত এবং বিনোদনকেন্দ্র প্রতি জেন–জেড সদস্যের সংখ্যা থেকে। চাকরি ও সাশ্রয়িতা—দুটোই ৪০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে, আর সামাজিক জীবন ২০ শতাংশ।
চাকরির গবেষণা ও কনটেন্ট কৌশলবিদ স্যাম র্যাডবিল বলেন, এন্ট্রি-লেভেল বেতন পাওয়া জেন–জেডদের জন্য লস অ্যাঞ্জেলেস বা নিউইয়র্কে টিকে থাকা এবং সঞ্চয় করা ‘খুব কঠিন’।
চাকরির তথ্য অনুযায়ী জেন–জেড কর্মীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সেরা ১০ শহর হলো—
ম্যাডিসন শীর্ষে এসেছে মূলত ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের কারণে।
দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শিক্ষার্থীরা আসে এখানে—পড়াশোনা, খেলাধুলা এবং সামাজিক পরিবেশের জন্য। তাই স্নাতকদের জন্য এটি ‘ক্যারিয়ার শুরুর দারুণ জায়গা’, বলেন র্যাডবিল।
মধ্য-পশ্চিমের বড় শহরগুলোর একটি মিনিয়াপোলিস। এখানে শহুরে সব সুবিধা আছে, কিন্তু খরচ তুলনামূলক কম। এটি প্রগতিশীল মূল্যবোধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক পরিবেশের জন্যও জেন–জি কর্মজীবীদের কাছে আকর্ষণীয়।
ডেস মইনেস বিমা শিল্পের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে চাকরি পাওয়া সহজ জেন–জিদের জন্য। এ ছাড়া কম খরচ তরুণদের ‘বড় শহরের ক্লান্তি ছাড়াই অর্থবহ শুরু’ দেয়।
ওমাহা সৌজন্য আর বাস্তব অর্থনৈতিক গতি—দুয়ের মিশ্রণ। বিমা, ফাইন্যান্স, শিক্ষা খাতে চাকরির সুযোগ ছাড়াও একটি ছোট স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমও গড়ে উঠছে। এখানেই থাকেন কিংবদন্তি বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট।
সংগীতনগরী হিসেবে পরিচিত ন্যাশভিলে দ্রুত বাড়ছে টেক শিল্প ও উদ্যোক্তা সংস্কৃতি। র্যাডবিল ন্যাশভিলকে ‘এখনো পাগলাটে বাড়িভাড়ার দামে পৌঁছায়নি এমন অস্টিন’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
সেন্ট লুইসের প্রধান আকর্ষণ সাশ্রয়িতা। এটি এমন শহর, যেখানে তরুণেরা কম খরচে নিজেদের বাড়ির মালিক হওয়ার সুযোগ পায়। র্যাডবিল বলেন, ‘এখানে আপনি কম দামে আপনার জীবন শুরু করতে পারেন এবং সত্যিকারের নিজের বলে কিছু অনুভব করতে পারেন।’
সংস্কৃতিসমৃদ্ধ, আউটডোরবান্ধব পরিবেশ এবং তরুণের উপস্থিতিতে শহরটি প্রাণবন্ত।
টেসলা ও অ্যাপলের মতো বড় কোম্পানির উপস্থিতি, দ্রুত বর্ধনশীল স্টার্টআপ পরিবেশ—সব মিলিয়ে অস্টিনের চাকরির বাজার “অবিশ্বাস্য”।
ভালো চাকরির বাজার, যুক্তিসংগত খরচ—এ কারণে মিলওয়াকি জেন–জেডদের জন্য উপযোগী। র্যাডবিল বলেন, বড় শহরে যেখানে তরুণরা ছোট স্টুডিওই পায়, মিলওয়াকিতে ‘লেক মিশিগান-সম্মুখীন অ্যাপার্টমেন্টও পাওয়া সম্ভব।’
সল্ট লেক সিটি জেন–জেডদের জন্য ‘সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ শহরগুলোর একটি’—বর্ধমান অর্থনীতি, প্রকৃতির সহজ অ্যাক্সেস এবং তুলনামূলক সাশ্রয়িতা মিলিয়ে। রিমোট ওর্কারদের জন্যও এটি অসাধারণ স্থান।
হার্ভার্ড ও এমআইটির মতো ‘বিশ্বমানের’ বিশ্ববিদ্যালয় থাকার কারণে বিপুল তরুণ পেশাজীবী এখানে সমবেত হয়। বিজ্ঞান, বায়োটেক বা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির সুযোগ—সব মিলিয়ে বোস্টন জেন–জেডদের জন্য শক্তিশালী কর্মবাজার।