সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৪৫ প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করেছে সরকার
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সেবিকা সুলতানার সই করা আদেশে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক উচ্চতর গ্রেডের দাবিতে হাইকোর্টে রিট করে (নম্বর ৩২১৪/২০১৮)। ওই রিটের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল (নম্বর ৩৫৬৪/২০১৯) এবং পরবর্তী সিভিল রিভিউ পিটিশন (নম্বর ১২৪/২০২২) নিষ্পত্তির পর আপিল বিভাগ প্রধান শিক্ষকদের পক্ষে রায় দেন।
এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগের ২০২৫ সালের ৬ অক্টোবরের মতামতের ভিত্তিতে ৪৫ জন রিট আবেদনকারীর পদোন্নতির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়। তাঁদের বিদ্যমান ১১তম গ্রেড থেকে সরকারি বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে।
অন্যদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছেন, আদালতের রায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় দ্রুতই সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা অফিসে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার আদেশ পাঠানো হবে।
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিষয়টি আটকে ছিল। এখন তা চূড়ান্ত হলো। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, সারা দেশের সব প্রধান শিক্ষকের দশম গ্রেড করার বিষয়টি ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হতে পারে।
১০ম গ্রেডে বেতন স্কেল ১৬০০০–৩৮৬৪০ টাকা।
বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। তাঁদের বেতন গ্রেড ১১তম। আর সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম।
এদিকে ৪৫ জনকে দশম গ্রেড দেওয়ার বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজ। তাতে ১১ বছরের সংগ্রাম ও ৭ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর ৪৫ জন রিটকারীকে দশম গ্রেড দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদার প্রজ্ঞাপন জারি করায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ, সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, যদিও আদালতের রায়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। আদালতের রায় ও আইন মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে ২০১৪ সাল থেকে রায় কার্যকরের বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রজ্ঞাপনে তা উপেক্ষিত হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে প্রধান শিক্ষকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৬৫ হাজার ৫০২ জন প্রধান শিক্ষকের বিষয়েও প্রজ্ঞাপন জারি এবং সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ জানান রিয়াজ পারভেজ।