পিএসসির ৬ সদস্য বাদ পড়লেন কেন
পিএসসি ছয় সদস্যের নিয়োগের আদেশ বাতিলের পর এখন আলোচনা হচ্ছে, কেন এই ছয় সদস্য বাদ পড়লেন, কেন নিয়োগে সরকার আরও সতর্ক থাকল না এবং এতে চাকরিপ্রার্থীরা কী কী ক্ষতিতে পড়বেন। এসব বিষয় নিয়ে সরকারও কিছুটা বিব্রত বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্যপদে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ছয় ব্যক্তির নিয়োগের আদেশ বাতিল করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে এই নিয়োগের আদেশ বাতিল করা হয়েছে বলে গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। যাঁদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা হলেন অধ্যাপক শাহনাজ সরকার, মো. মুনির হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ এফ জগলুল আহমেদ, মো. মিজানুর রহমান, শাব্বির আহমদ চৌধুরী ও অধ্যাপক সৈয়দা শাহিনা সোবহান। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এই ছয় ব্যক্তি এখনো শপথ গ্রহণ করেননি। ছয় ব্যক্তির নিয়োগ বাতিলের আদেশ জনস্বার্থে জারি করা হয়েছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
পিএসসির নতুন সদস্য হিসেবে এই ছয় ব্যক্তিকে ২ জানুয়ারি নিয়োগ দিয়েছিল সরকার। তাঁদের শপথ স্থগিত চেয়ে ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল পিএসসি। পিএসসির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ছয় সদস্যের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্ট। পিএসসির একটি সূত্র তখন প্রথম আলোকে বলেছিল, নতুন নিয়োগ পাওয়া কয়েক সদস্যকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার কারণে তাঁদের শপথ স্থগিত করা হয়। নতুন নিয়োগ পাওয়া কয়েক সদস্য বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় এই সমালোচনা হচ্ছিল। এখন এই ছয়জনকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানসহ পিএসসির সদস্যসংখ্যা দাঁড়াল ৯।
তবে পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সদস্যদের নিয়োগ বাতিল সাময়িক সমস্যা। তবে এখন নতুন সদস্য পেলে ভালো হতো। কেননা আমিসহ আর যে ৯ সদস্য আছেন, তাঁদের অনেক বেশি কাজে যুক্ত থাকতে হচ্ছে। তবে আশা করি, সরকার দ্রুত আমাদের নতুন সদস্য নিয়োগ দেবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আগের ছয় সদস্য নিয়োগে সতর্কতা ছিল না। উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা আরও বলেন, ওই ছয়জনের কেউ কেউ আগের সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। কেউ মন্ত্রীঘনিষ্ঠ ছিলেন। একটা সরকার থাকার সময় তাঁরা সরকারের সিদ্ধান্ত যেগুলো পরে সমালোচনা হচ্ছে, সেই পদে ছিলেন ও অন্যতম প্রধান ব্যক্তি ছিলেন। ফলে পিএসসির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সদস্য হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আন্দোলনের স্পিরিটকে অবজ্ঞা করা হয়েছে।
এই নিয়োগ দীর্ঘায়িত করার মাধ্যমে পিএসসির গতি কমে গেল। নতুন সদস্যদের নতুন কাজ দেওয়ার ভাবনা ছিল পিএসসির, তা সহসাই হচ্ছে না। এখন সরকারও বিব্রত, তাই নতুন নিয়োগে বেশ বাছাই হবে। সময় লাগবে নিয়োগ পেতে। ভাইভা দির্ঘায়িত হচ্ছে। কম সদস্য দিয়ে বেশি বোর্ড চালানো যাচ্ছে না। ভাইভা নেওয়ার গতি বেগ পাচ্ছে না। ভাইভা নিতে যেহেতু অনেক সময় থাকতে হয়, তাই সেভাবে অন্য কাজ এগোচ্ছে না। অন্য বিসিএস বা নতুন ৪৭তম বিসিএসের কাজেও গতি কমে যাবে। তবে দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান চান চাকরিপ্রার্থীরা।