ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্কের কারণে ৪ লাখ মার্কিনি চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত আমদানি শুল্ক আরোপের কারণে দেশটিতে প্রায় চার লাখ মার্কিনি চাকরি হারানোর হুমকিতে আছেন বলে সতর্ক করেছে মেক্সিকো।
গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম এই সতর্ক বার্তা দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, তাহলে মেক্সিকোও দ্রুত পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে শুল্ক বাড়াবে।
গত সোমবার নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম দিনেই চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করবেন। শপথ নেওয়ার পরপরই মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আসা সব ধরনের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে নির্বাহী আদেশ জারি করবেন। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে এ কথা লিখেছেন তিনি।
ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
মেক্সিকোর অর্থমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ডও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন, নতুন এই শুল্কযুদ্ধ মার্কিন কর্মীদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। মেক্সিকোতে উৎপাদিত গাড়ি নির্মাতাদের পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেছেন, এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় চার লাখ মানুষ চাকরি হারাতে পারেন।
অর্থমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড আরও বলেন, এই শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব শুধু কর্মসংস্থান নয়, ভোক্তাদের ওপরও পড়বে। যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া অধিকাংশ পিকআপ, ট্রাক মেক্সিকোতে তৈরি হয়। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক আরোপ করা হলে প্রতিটি নতুন গাড়ির দাম তিন হাজার ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ‘নিজের পায়ে কুড়াল মারার মতো অবস্থা হবে’ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
অর্থনীতিবিদরা ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেনবাউম এর আগে ট্রাম্পের এই হুমকিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে জানিয়েছিলেন। পরে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অভিবাসন নিয়ে আলোচনার জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি ফোনে কথা বলেছেন। এ বিষয়ে তিনি তাঁর উদ্বেগের কথা টাম্পকে জানিয়েছেন।
এদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, তিনিও ইতিমধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং দুই দেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ওপর গুরত্বারোপ করেছেন।