শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসিএর ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি: সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও কেন অনিশ্চয়তায় অনেকে
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশপ্রাপ্তরা পড়েছেন নতুন ভোগান্তিতে। কেউ জেনারেল ক্যাটাগরির হয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন কারিগরিতে, আবার কাউকে এমন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে বলা হয়েছে, যেখানে পদ ফাঁকা নেই কিংবা কয়েক বছর পর পদ ফাঁকা হবে। এ রকম অসংখ্য অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন এনটিআরসিতে ভিড় করছেন সুপারিশপ্রাপ্তরা। এনটিআরসিএ বলছে, অভিযোগ যাচাই–বাছাই শেষেই সিদ্ধান্ত।
এ রকম একজন ভুক্তভোগী অনিক সাহা। জেনারেল ক্যাটাগরি থেকে স্কুলশিক্ষক পদে আবেদন করলেও তাঁকে সুপারিশ করা হয়েছে কারিগরি পদে। ফলে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও চাকরিতে যোগদান করতে পারছেন না তিনি। সংশ্লিস্ট প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ না করে অনিক বলেন, ‘এখানে পদ ফাঁকা ছিল কারিগরিতে, কিন্তু প্রতিষ্ঠান চাহিদাপত্রে ভুল করে তা উল্লেখ করেনি। আমার যে সাবজেক্ট তা কারিগরিতে নেই, কিন্তু আমাকে কারিগরিতে যোগদান করতে বলা হয়েছে। আমি নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্য এনটিআরসি আবেদন করেছি।’
শুধু অনিক সাহাই না, এ রকম অসংখ্য প্রার্থীর অভিযোগ জমা পড়ছে এনটিআরসিতে। ঠিক কতগুলো অভিযোগ জমা পড়েছে, তা জানাতে পারেনি এনটিআরসি। তবে ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, দুই শতাধিক প্রার্থী ভুল প্রতিষ্ঠান বা ভুল বিষয়ে সুপারিশের কারণে যোগদান করতে পারছেন না।
অপর ভুক্তভোগী মো. আশফাক আবেদন করেছিলেন মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে। সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসায় যোগাযোগ করা হলে তাঁকে জানানো হয় মাদ্রাসা এখনো নির্মাণাধীন। লাইজু আক্তার নামের অপর এক প্রার্থীর অভিজ্ঞতাও প্রায় একই রকম। তাঁকে যে পদে যোগদান করতে বলা হয়েছে, সেই পদ ফাঁকা হবে ২০২৬ সালের জুলাই নাগাদ। লাইজু আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কলেজে প্রত্যয়নপত্র আনতে গিয়ে শুনি আমার পদে একজন আছেন, তিনি ২০২৬ সালে অবসরে যাবেন। আমাকে এরপর যোগদান করতে বলা হয়েছে।’
এনটিআরসিএ সদস্য (যুগ্ম সচিব) ইরাদুল হক এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো প্রক্রিয়াটি অটোমেটেডভাবে সম্পন্ন হওয়ায় এক ক্যাটাগরিতে আবেদন করে অন্য ক্যাটাগরিতে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই। প্রার্থীরা আবেদনের সময় ভুল করলে এমনটি হয়। তবে যদি এমন হয় যে সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানে পদ ফাঁকা নেই, তাঁকে নতুন প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত করা হবে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা মোতাবেকই বরাদ্দ করা হয়।’ কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনো অনেক অভিযোগ জমা পড়ছে। আমরা যাচাই–বাছাই করব। যাঁদের আবেদনে ভুল নেই, তাঁরা নিয়োগ পাবেন। যদি প্রতিষ্ঠানের কারণে কেউ ১৮ তারিখের ভেতর নিয়োগপত্র না পান, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’