পর্তুগালে দক্ষ বাংলাদেশিদের চাকরির সুযোগ

ছবি: লেখক

ইউরোপের দক্ষিণ পশ্চিমের আইবেরীয় উপকূলীয় দেশ পর্তুগাল। দেশটিতে দুটি পদ্ধতিতে বাংলাদেশি প্রবাসী শিক্ষার্থীরা বিশ্বের নামকরা কোম্পানিগুলোতে কাজের জন্য আবেদন করতে পারেন। প্রথমত, বাংলাদেশ থেকে যাঁরা ব্যাচেলর, মাস্টার্স কিংবা ডক্টরেট ডিগ্রি লাভের জন্য আসেন, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই পারিবারিক সমস্যার কারণে কোর্স সম্পন্ন করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সনদকে ইকুইভ্যালেন্সের মাধ্যমে পর্তুগিজ সমমান সনদ নিয়ে কাজের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। আবেদনকারী শিক্ষার্থীর অবশ্যই রেসিডেন্স পারমিট থাকতে হবে। কারণ, ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলো যখন চাকরির ইন্টারভিউর জন্য ডাকে, বেশির ভাগ কোম্পানিই পর্তুগালে কাজের অনুমতি আছে কি না, তা যাচাই করে।

ছবি: লেখক

ইকুইভ্যালেন্স হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে Decreto-Lei nr. 238/83 আইন অনুযায়ী একজন পর্তুগিজ কিংবা বিদেশি নাগরিক দেশটিতে বৈধভাবে বসবাসরত সমমান পর্তুগিজ ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন। মূলত বিদেশিরা ডক্টরেট, মাস্টার্স কিংবা ব্যাচেলরসহ আরও বেশ কিছু নির্দিষ্ট সমমান ডিগ্রির স্বীকৃতির জন্য অনলাইনে ইউনিভার্সিটি লিসবনের www.ulisboa.pt এই লিংকে আবেদনের মাধ্যমে সেবাটি নিতে পারেন।

সমমান ডিগ্রির স্বীকৃতির জন্য প্রথমেই বাংলাদেশি নাগরিক এ দেশের যেকোনো উকিলের মাধ্যমে সার্টিফিকেট পর্তুগিজ ভাষায় ট্রান্সলেট এবং রোটারি করতে হবে। পরবর্তী সময়ে দেশটিতে অবস্থিত নিজ দেশের দূতাবাস কর্তৃক আসল সনদ কি না, তা যাচাই করে ফরেন মিনিস্ট্রি থেকে সত্যায়িত করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার আগে ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য ৬০০, মাস্টার্সের জন্য ৫৫০ ও ব্যাচেলরের জন্য ৫০০ ইউরো (অফেরতযোগ্য) ফি পরিশোধ করে আবেদন করতে হবে।

ছবি: লেখক

অপর দিকে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী যাঁরা এ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স, মাস্টার্স কিংবা ডক্টরেট ডিগ্রিতে পড়াশোনা করেন, পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা Linkedin–এ নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী প্রোফাইল তৈরি করে নিতে পারেন। পরবর্তীকালে কোন কোন কোম্পানির চাকরির জন্য শিক্ষার্থী যোগ্য, তা বাছাই করে Linkedin থেকে সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। বর্তমানে পর্তুগালে অনেক বাংলাদেশিই একই পদ্ধতি অবলম্বন করে বিশ্বের নামকরা কোম্পানিগুলোতে চাকরি করছেন।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আলী সাব্বির ডেটা সায়েন্সে ২০১৯ সালে ইউনিভার্সিটি অব নোভায় মাস্টার্সের জন্য লিসবনে আসেন। তিনি জানান, ‘আমার শুরুটা অনেক কঠিন ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হতে থাকে। আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পাই। Linkedin প্রোফাইলটা সম্পন্ন করার পর গত লকডাউনের মধ্যেই চাকরি খুঁজতে শুরু করি। অনেকগুলো কোম্পানিতে সাক্ষাৎকার দিই, প্রত্যাখ্যাতও হই, তবে কখনো হতাশ হইনি। অবশেষে বিশ্বের নামকরা জার্মানির কোম্পানি সিমেন্সে আমার চাকরি হয়। মূলকথা, চেষ্টা ও ধৈর্য একজন শিক্ষার্থীকে বিদেশের মাটিতে সামনে সফলভাবে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করে।’

*লেখক: মনির হোসেন, পর্তুগালপ্রবাসী