প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ আবেদনে তথ্য সংশোধন শুরু

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের আবেদন করার পর যদি কোনো সংশোধনের প্রয়োজন হয়, সে সুযোগ দিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। আবেদন ফি পরিশোধ করা প্রার্থীরা আজ শনিবার (২৮ নভেম্বর) থেকে আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংশোধনের এ সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা।

২৫ অক্টোবর থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু করেন প্রার্থীরা আবেদনপ্রক্রিয়া শেষ হয় ২৪ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা বাদে দেশের বাকি সব জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পেরেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন হবে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর গ্রেড ১৩ অনুযায়ী ১১০০০ থেকে ২৬৫৯০ টাকা।

অনলাইনে আবেদন করার সময় একাডেমিক সার্টিফিকেট গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত না থাকায় আবেদন সম্পন্ন না হওয়া, জেন্ডার (লিঙ্গ) নির্বাচনে ভুলসহ বিভিন্ন ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হন আবেদনকারীরা। বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আবেদনে ভুল সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিপিই।

ডিপিইর সহকারী পরিচালক নিয়োগ হিসেবে কর্মরত সিনিয়র সহকারী সচিব আতিক এস বি সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক আবেদনে ভুলত্রুটি হচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে এসব অভিযোগ আসছে। আবেদনের ভুল সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৮ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব সংশোধন করা হবে। এর মধ্যে প্রার্থীর ও বাবা-মায়ের নাম, জেন্ডার, জন্মতারিখ, জিপিএ-সংক্রান্ত ভুল থাকলে তা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড থেকে সংশোধন করে নিতে হবে। বোর্ডে সংশোধন হলে আমাদের সার্ভারেও তা সংশোধন করা যাবে। এর বাইরে আবেদন ফি জমা দেওয়া প্রার্থীদের কোনো তথ্য লিখতে ভুল হলে সে জন্য কারেকশন অপশনে গিয়ে রিকোয়েস্ট দিলে তা সংশোধন করতে তাকে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে লিংক পাঠানো হবে। সংশোধন হওয়ার পর তাকে একটি এসএমএস দিয়ে নিশ্চিত করা হবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে পদের সংখ্যা উল্লেখ না থাকলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩২ হাজার ৫৭৭ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ২৫ হাজার ৬৩০ জন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে ৬ হাজার ৯৪৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

২০০৯-১৯ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মুজিব বর্ষে সব শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হয়নি। তবে সেপ্টেম্বরে নিয়োগপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অক্টোবরে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলো।

মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগের পর সেপ্টেম্বরে কোটামুক্ত রেখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রাথমিকের শিক্ষক পদটি ১৩ তম গ্রেড হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে মোট উত্তীর্ণ হন ৫৫ হাজার ২৯৫ জন, নিয়োগ দেওয়া হয় ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে। এর আগে একই বছর ২০১৪ সালের স্থগিত পরীক্ষাটিও নেওয়া হয়। ওই পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হন ২৯ হাজার ৫৫৫ প্রার্থী। এর মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয় ৯ হাজার ৭৬৭ জনকে। এ দুই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চূড়ান্ত নির্বাচিত হননি ৫৬ হাজার ৯৩৬ প্রার্থী। উত্তীর্ণ এসব প্রার্থী ২০১০-১১ সালের মতো প্যানেল নিয়োগ চান। তবে মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, প্যানেলে নিয়োগ দেওয়া হবে না। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।