বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার পদের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও করণীয়

মডেল: নুসরাত, হাদী ও ইয়াসফি
ছবি: খালেদ সরকার

বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) পদের লিখিত পরীক্ষা ১৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। হাতে সময় নেই বললেই চলে। শেষ মুহূর্তে কীভাবে প্রস্তুতি নিলে সফল হওয়া যাবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে সুপারিশপ্রাপ্ত মো. মাজহারুল হাসান নাহিদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার পদে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। সময় থাকে দুই ঘণ্টা। ইতিমধ্যে সবার প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। যেহেতু পরীক্ষার সময় বেশি নেই, তাই এখন নতুন করে কিছু না পড়াই ভালো। আগের পড়া বিষয়গুলোয় চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।

তবে দিন-রাত শুধু পড়ে প্রস্তুতি নিলেই হবে না। পাশাপাশি পরীক্ষায় ভালো করতে পরীক্ষার হলে এবং এর আগে কিছু কৌশল প্রয়োগ করতে হবে। কিছু বিষয় মাথায় রেখে পরীক্ষা দিতে হবে। এসব বিষয় মেনে পরীক্ষা দিতে পারলে, আপনি প্রস্তুতি অনুসারে সর্বোচ্চ ভালো পরীক্ষা দিতে পারবেন।

প্রশ্নের নির্দেশনা পড়া
পরীক্ষার হলে প্রশ্ন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর দেওয়া শুরু করা যাবে না। উত্তরপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় পরীক্ষার্থীর জন্য সাধারণ কিছু নির্দেশনা থাকে। একজন পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই এসব নির্দেশনা পালন করতে হবে। এসব নির্দেশনার কোনো ব্যত্যয় ঘটলে, পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন

সময় ব্যবস্থাপনা
ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময় ব্যবস্থাপনা। ২০০ নম্বরের একটি পরীক্ষায় সময় থাকে মাত্র ১২০ মিনিট। এই পরীক্ষার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুন্দর করে সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারা। পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে, প্রতি ১ নম্বরের জন্য সময় মাত্র ৩৬ সেকেন্ড। পরীক্ষার্থীর সময়ের হিসাবের সুবিধার্থে পুরো পরীক্ষাকে দুই ভাগে ভাগ করে নিতে পারেন। পরীক্ষার্থী দুটি ফোকাস ও আর্গুমেন্টের ১০০ নম্বর উত্তর করতে পারেন ৬০ মিনিট বা ১ ঘণ্টায়। অবশিষ্ট গণিত, সাধারণ জ্ঞান, কম্প্রিহেনশন এবং অনুবাদের ১০০ নম্বর উত্তর করতে পারেন বাকি ৬০ মিনিটে। এভাবে উত্তর করলে সময়ের মধ্যে সুন্দর করে সব প্রশ্নের উত্তর করা সম্ভব।

পৃষ্ঠা অনুযায়ী উত্তর করা
ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষায় উত্তর লেখার জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা থাকে। সাম্প্রতিক সময়ের পরীক্ষাগুলোয় দেখা যায়, একটা পুরো খাতা দিয়ে দেওয়া হয় কিন্তু অতিরিক্ত কোনো পৃষ্ঠা পরীক্ষায় দেওয়া হয় না। এর অর্থ পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই সরবরাহ করা পৃষ্ঠার মধ্যেই লেখা শেষ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তরপত্রটি হাতে পাওয়ার পরই পরীক্ষার্থীকে খসড়া করে নিতে হবে, কোন প্রশ্ন কতটুকু লেখা যাবে। নইলে অনেক পৃষ্ঠা ফাঁকা থাকবে অথবা সরবরাহ করা পৃষ্ঠার মধ্যে লেখা শেষ হবে না।

আরও পড়ুন

হাতের লেখা
কোনো পরীক্ষার্থীর হাতের লেখা যদি সুন্দর হয়ে থাকে, তাহলে এটি অবশ্যই তাঁর জন্য বড় আশীর্বাদ। তবে এই পরীক্ষায় হাতের লেখা সুন্দরের চেয়েও দ্রুত হওয়া বেশি প্রয়োজন। কারণ, কম সময়ের মধ্যে অনেক বেশি লিখতে হয়। পরীক্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হাতের লেখার ভারসাম্যপূর্ণ সৌন্দর্য থাকতে হবে। একটি কথা না বললেই নয়, হাতের লেখা সুন্দর হোক বা না হোক, অবশ্যই সুস্পষ্ট হতে হবে, পরীক্ষকের যেন উত্তরপত্র পড়তে কোনো বেগ পেতে না হয়। এককথায়, দ্রুত, সুন্দর ও সুস্পষ্ট হাতের লেখা হতে হবে।

আনকমন বিষয়ে লেখা
ব্যাংকে লিখিত পরীক্ষায় হুবহু কোনো কিছু কমন পড়বে, এমনটা আশা করা একদম বোকামি। পরীক্ষায় সর্বোচ্চ টপিক কমন পাওয়া যেতে পারে। মাঝেমধ্যে এমনও হতে পারে, আপনি টপিক সম্পর্কে খুব বেশি জানেন না। তারপরও আপনাকে সুন্দর করে লিখতে হবে। একটি জানা, অজানা অথবা কম জানা টপিক থেকে কীভাবে বস্তুনিষ্ঠভাবে লেখা যায়, সেটি পরীক্ষার্থীকে আয়ত্ত করতে হবে।

আরও পড়ুন

নির্ভুল ও সুন্দর বাক্য
লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে হলে নির্ভুল, সুন্দর বাংলা ও ইংরেজি বাক্যে পরীক্ষায় লিখতে হবে। এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং, কম্প্রিহেনশন ও অনুবাদ অংশের মোট ১৪০ নম্বরে ভালো করতে হলে নির্ভুল বানান ও সুন্দর বাক্যে খাতায় লেখাগুলো লিখতে হবে।

ডেটা ও কোটেশনের ব্যবহার
ডেটা ও কোটেশনের ব্যবহার শিখতে হবে। তবে যেখানে ডেটা বা উক্তি দেওয়ার দরকার নেই, সেখানে দিলে নম্বর বাড়ার পরিবর্তে উল্টো কমে যাবে। আপনি যদি কোনো বিশ্লেষণ, বিবৃতি কিংবা যুক্তি দেন, সে ক্ষেত্রে আপনার লেখাকে শক্তিশালী করার জন্য আপনি ডেটা ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুন

নিজস্ব কৌশল
নিজেকে নিজের মূল্যায়ন করতে হবে। আপনাকে আপনার শক্তি এবং দুর্বলতার জায়গা চিহ্নিত করতে হবে। এসব বিষয়ে বিশ্লেষণ করে আপনার নিজের জন্য কার্যকরী কৌশল, রুটিন, পড়ালেখার বিষয় ইত্যাদি প্রস্তুত করতে হবে। তবেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্যে পৌঁছাতে পারবেন।