তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপান যেতে চাইলে

প্রশিক্ষণ নিয়ে ২৫০ জন বর্তমানে জাপানে চাকরি করছেনছবি: সংগৃহীত

আইটি-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি থাকলে তথ্যপ্রযুক্তির প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরি নিয়ে জাপান যাওয়ার সুযোগ রয়েছে দেশের শিক্ষার্থীদের। বাংলাদেশ-জাপান আইসিটি ইঞ্জিনিয়ার্স ট্রেনিং (বি-জেট) প্রোগ্রামের অধীন তথ্যপ্রযুক্তির এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) সহযোগিতায় ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আটটি ব্যাচ পরিচালনা করা হয়। পরে ২০২১ সালে বি-জেট প্রোগ্রামে যুক্ত হয় জাপানের ইউনিভার্সিটি অব মিয়াজাকি, বাংলাদেশের নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং বিজেআইটি লিমিটেড। এ প্রোগ্রামের অধীন ১৪তম ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। অনলাইনে আবেদন করা যাবে ২১ মার্চ পর্যন্ত।

প্রোগ্রাম সম্পর্কে

জাপানের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উপযোগী করে আইটি ইঞ্জিনিয়ারদের দক্ষতা উন্নয়ন ও তাঁদের জাপানে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া বি-জেট প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য। এই প্রোগ্রামের অধীন ইতিমধ্যে ৪০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৫০ জন বর্তমানে জাপানে চাকরি করছেন। প্রোগ্রামের অষ্টম ব্যাচ পর্যন্ত অর্থায়ন করেছে জাইকা। বর্তমানে অর্থায়ন করছে জাপানের মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয় ও শিঙ্কোশুপাংশা কেইরিনকান কোম্পানি লিমিটেড। এ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রোগ্রামটির প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কারিগরি সহায়তা, জাপানে কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় সহায়তাসহ অন্যান্য সহযোগিতা করে বিজেআইটি লিমিটেড। অনলাইন ও অফলাইন—দুই মাধ্যমেই ক্লাস হয়। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ প্রশিক্ষণের অফলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়।

আবেদনের যোগ্যতা

বি-জেট প্রোগ্রামের ভর্তির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি বা আইসিটি বিষয়ে স্নাতক পাস নবীন শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং বিষয়ে দুই বছর বা তার বেশি সময় চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। জাপানি ভাষা শেখার প্রবল আগ্রহ থাকতে হবে। অনলাইনে ক্লাস করার জন্য কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। প্রশিক্ষণ শেষে জাপানে চাকরি করার মানসিকতা থাকতে হবে।

বি-জেট প্রোগ্রামের পরিচালক ইউকি মরিশিতা প্রথম আলোকে বলেন, আবেদনের বিজ্ঞপ্তিতে আইসিটি বিষয় বলতে কম্পিউটার সায়েন্স, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন টেকনোলজি, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার ইনফরমেশন সিস্টেম, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিষয়গুলো বোঝানো হয়েছে।

যেভাবে আবেদন

১৪তম ব্যাচে ভর্তির জন্য ইতিমধ্যে আবেদন শুরু হয়েছে। আবেদন করা যাবে ২১ মার্চ পর্যন্ত। অনলাইনে এই লিংকের (https://forms.gle/eBJZseBgnShbTmu9A) মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সময় সিভি জমা দিতে হবে। বিস্তারিত জানা যাবে বি-জেট প্রোগ্রামের ফেসবুক পেজে (https://www.facebook.com/bjet.org/)। এ ব্যাচে প্রায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী নেওয়া হবে।

ভর্তিপ্রক্রিয়া

বি-জেট প্রোগ্রাম থেকে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন পাওয়ার পর সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়। এরপর লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। পরীক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির বেসিক বিষয়গুলো (অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং, ডেটা স্ট্রাকচার এবং অ্যালগরিদম, বিশ্লেষণাত্মক এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, গাণিতিক অপারেশন, পারমুটেশন/কম্বিনেশন, ডায়নামিক প্রোগ্রামিং, রিকারশন, সংখ্যা সিরিজ) নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। লিখিত ও ভাইভায় পাস করলে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হয়। বছরে দুবার শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হয়। 

সুযোগ-সুবিধা

বি-জেট প্রোগ্রামের পরিচালক ইউকি মরিশিতা বলেন ‘সফলতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষ করতে পারলে প্রার্থীদের জন্য জাপানে চাকরির সুযোগ রয়েছে। জাপানের বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান আমাদের প্রার্থীদের চাকরির ভাইভা নিয়ে থাকে। ভাইভায় পাস করলে তাঁরা কোম্পানির খরচে জাপান যাওয়ার সুযোগ পান। প্রোগ্রাম শেষে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে শিক্ষার্থীদের সনদ দেয়।’