বাপেক্সে চাকরির প্রস্তুতির এখনই সময়

পেট্রোবাংলার কোম্পানি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) একাধিক কর্মকর্তা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, প্রতিষ্ঠানটিতে ৯০ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে অনলাইনে আবেদন শেষ হয়েছে। শিগগিরই পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে। তাই প্রস্তুতির জন্য এখনই পড়াশোনা শুরু করতে হবে। সঠিক প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছেন ৪০তম বিসিএসে (ফিশারিজ ক্যাডার, মেধাক্রম ৮ম) সুপারিশপ্রাপ্ত মিঠু মোকাররম।

বাপেক্সে কর্মকর্তা পদে অনলাইনে আবেদন শেষ হয়েছে। এখন নিতে হবে প্রস্তুতি। মডেল: রবিউল হাসান ও নাহিদা আহমেদছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

পেট্রোবাংলার আওতাধীন একটি সরকারি লিমিটেড কোম্পানি বাপেক্স। তেল, গ্যাস এবং অন্যান্য পেট্রোলিয়াম–জাতীয় পদার্থের উৎপাদন, অনুসন্ধান, পরিশোধন, মজুত ও বিপণন নিয়ে কাজ করে পেট্রোবাংলা। বাপেক্স শুধু পেট্রোলিয়াম–জাতীয় পদার্থের অনুসন্ধান ও উৎপাদন নিয়ে কাজ করে। সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাপেক্সের চাকরি আকর্ষণীয়। নিজস্ব যাতায়াত–সুবিধা, আবাসন–সুবিধা, বিদেশে ট্রেনিং-ওয়ার্কশ ও বিভিন্ন ভাতার সুবিধা পাওয়া যায় বাপেক্সের চাকরিতে।

সম্প্রতি প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাপেক্স যেসব পদে লোক নেবে এর মধ্যে অধিকাংশ কারিগরি পদ। যেমন সহকারী ব্যবস্থাপক (ভূতত্ত্ব), সহকারী ব্যবস্থাপক (ভূপদার্থ), সহকারী ব্যবস্থাপক (ইলেকট্রনিকস) ও সহকারী ব্যবস্থাপক (রসায়ন)। আবার দশম গ্রেডেও কারিগরি পদ বেশি, যেমন বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক উপসহকারী প্রকৌশলী। সাধারণ পদও রয়েছে, যেমন সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ও সহকারী কর্মকর্তা (প্রশাসন)। সাধারণ পদে সব বিষয়ের স্নাতক (সম্মান) পাস করা প্রার্থীরা আবেদন

করতে পেরেছেন। কিছু পদ বাণিজ্য বিভাগের প্রার্থীদের জন্যও আছে।

সাধারণ পদ ও বাণিজ্য বিভাগের পদগুলোয় একই সঙ্গে এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই ধাপে পাস করলে মৌখিক পরীক্ষায় বসতে হয়। সাধারণত এমসিকিউ ৭০ থেকে ৭৫ নম্বর এবং লিখিত পরীক্ষায় ২৫ থেকে ৩০ নম্বর থাকে। মৌখিক পরীক্ষায় এক পদের বিপরীতে পাঁচ থেকে আটজন থাকেন। কারিগরি পদগুলোতেও একই নিয়মে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এমসিকিউ পরীক্ষায় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। কারিগরি পদের জন্য এগুলোর পাশাপাশি কিছু বিষয়ভিত্তিক এমসিকিউ আসতে পারে।

লিখিত পরীক্ষা বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে নেওয়া হয়। আর কারিগরি পদের জন্য বিষয়ভিত্তিক কিছু প্রশ্ন থাকে। কারিগরি পদের প্রশ্ন যদি বুয়েট করে, তাহলে পুরো প্রশ্ন বিষয়ভিত্তিক হয়। বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে কম নম্বর রাখে বা অনেক সময় রাখে না। আইবিএ বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান প্রশ্ন করলে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন তেমন থাকে না। প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দুভাবেই নেওয়া উচিত। কারণ, কোন প্রতিষ্ঠান প্রশ্ন করবে, তা আগে জানা অসম্ভব।

এমসিকিউয়ে বাংলার জন্য পদের প্রকারভেদ, সমাস, কারক, ধ্বনি, সন্ধি বিচ্ছেদ, ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান, প্রকৃতি-প্রত্যয়, সমার্থক ও বিপরিতার্থক শব্দ এবং বাগধারা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে কয়েকটি সাহিত্য–সম্পর্কিত প্রশ্নও আসতে পারে। ইংরেজির জন্য ভোকাবুলারি, সিনোনিম-এন্টোনিম, রাইট ফর্মস অব ভার্ব, আর্টিকেল, ন্যারেশন, ভয়েস, প্রিপজিশন, ইডিওম অ্যান্ড ফ্রেজ ও প্রোভার্বস ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ।

গণিতে পাটিগণিত বেশি আসে। সুদকষা, ঐকিক নিয়ম, নল ও চৌবাচ্চা, ট্রেন, সময় ও কাজ, অনুপাত-সমানুপাত, অংশীদারি কারবার ও লাভ-ক্ষতি গুরুত্বপূর্ণ। জ্যামিতি থেকে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত, ঘড়ি ও ঘন জ্যামিতি আসে। মাঝেমধ্যে দু-একটা ত্রিকোণমিতি দিতে পারে। বীজগণিত থেকে বীজগণিতীয় সূত্রাবলি, সূচক, লগারিদম, ধারা, বিন্যাস ও সমাবেশ গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়াবলি, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানকারী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সংবিধান, তেল-গ্যাস বা খনিজ সম্পদ–সম্পর্কিত বিষয় এবং কৃষি ও আর্থসামাজিক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক থেকে অল্প কিছু প্রশ্ন থাকে। আর নিকট অতীতের বা সাম্প্রতিক কিছু সাধারণ জ্ঞান এসে থাকে। লিখিত পরীক্ষায় একটি বাংলা ও ইংরেজি রচনা, দুটি গণিত ও সমসাময়িক একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন থাকে। তবে সব সময় একই ধরনের প্রশ্ন না–ও আসতে পারে।