প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

শেষ মুহূর্তে আগে পড়া বিষয়গুলো আবার পড়ে নিন।
মডেল: মোনালিসা মুন্নি ও নাহিদা আহমেদ

আর মাত্র সাত দিন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগদানের স্বপ্ন জয়ের প্রথম ধাপ প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ অক্টোবর। ‘নক আউট’ভিত্তিক এ পর্বে ‘কার্ট মার্ক’ যা–ই হোক, লাখো পরীক্ষার্থীকে টপকে টিকে থাকার লড়াইয়ে ‘ইয়েস কার্ড’ পেতে শেষ মুহূর্তের পড়াশোনা ও প্রস্তুতি কৌশল খুব গুরুত্বপূর্ণ।

আগামী শুক্রবার দিনের শুরুতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা যা প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নামে পরিচিত। এক ঘণ্টাব্যাপী ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পুরোটা সময় সক্রিয় ও সতর্ক থাকতে হবে। তাই সতেজ মনে হলে প্রবেশ করার চেষ্টা করুন। ঢাকার বাইরে থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁরা হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে রওনা দিন; পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখুন। কোনোভাবেই যেন ঝিমুনি, অস্থিরতা বা চিন্তাজট তৈরি না হয়।

বাড়তি বইপত্র, নোট, খাতা, স্মার্টফোন ও ক্যালকুলেটর সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষার আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে চাপ বাড়াবেন না। হিতে বিপরীত হতে পারে। এমসিকিউ পরীক্ষার ক্ষেত্রে কত কিছু পড়েছেন, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রেখে কতটা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারছেন।

ক্রিকেটে ক্রিজে টিকে থাকার মতো পরীক্ষার হলে ঠান্ডা মাথায় দেখে–বুঝে বৃত্ত ভরাট করতে পারলে নম্বর আসবে। হাত ফসকে ভুল উত্তর দাগালে বা অনুমানে সব বৃত্ত ভরাট করতে গেলে নম্বর কাটা হতে পারে। তাই পরীক্ষার চলাকালীন সচেতনতা, তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা, সার্বক্ষণিক মনোযোগ ও মনোবল ধরে রাখা জরুরি।

কত সংখ্যক পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন, ‘কার্ট মার্ক’ কত হবে এসব হিসাব–নিকাশ না করে পড়াশোনা করুন। নিজের ওপর সর্বোচ্চ আস্থা রেখে শেষ কয়টা দিনে প্রয়োজনে পড়াশোনার পরিধি কমিয়ে আয়ত্তে আনার চেষ্টা করুন।

নিজের মতো রুটিন করে নিতে পারেন। বিশেষ কোনো বিষয়ে দুর্বলতা থাকলে সেখানে বাড়তি সময় দিন।

বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান এবং কম্পিউটার প্রযুক্তি—যে অংশের ওপর আপনার দখল ভালো, সেখান থেকেই শুরু করুন। প্রতিটি প্রশ্নের মান যেহেতু সমান, তাই নিজের পছন্দ ও পারদর্শিতা সবার আগে বিবেচনায় আনুন। পরীক্ষার সময় আগে সহজ ও জানা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সময় সাশ্রয় করতে পারেন। এতে মনোবলও বেড়ে যায়। প্রায় একই রকম চারটি উত্তর দেখে দ্বিধান্বিত হয়ে ভুল উত্তর দেওয়ার প্রবণতা রোধ করতে পারলে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

আনুপাতিক হারে গণিতে বেশি সময় লাগে। গণিত ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট মিলে এ অংশে মোট ৩০টি প্রশ্ন থাকে। আপনার প্রস্তুতি যেমনই থাক, গণিতে অনেক প্রশ্ন পাবেন যেগুলো সাধারণ মানের ও সহজ। জটিল বা অপরিচিত অঙ্ক নিয়ে মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট না করে ছেড়ে দিতে পারেন।

বাংলা ও ইংরেজি উভয় অংশ থেকে ২০টি করে প্রশ্ন আসে। বাংলার ক্ষেত্রে সাহিত্য অংশ থেকে অর্ধেক সংখ্যক প্রশ্ন এলেও ইংরেজিতে সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দসহ ব্যাকরণ অংশের প্রাধান্য থাকে। বাংলায় বানান বা বাক্য শুদ্ধিকরণ, প্রবাদ প্রবচন, বাগ্​ধারা, সন্ধি, সমাস, প্রকৃতি ও প্রত্যয়, এককথায় প্রকাশ থেকেও প্রশ্ন আসে।

কম্পিউটার প্রযুক্তি অংশ থেকে ১০টি প্রশ্ন থাকে। অনেকেই এই অংশ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে। বিষয়ভিত্তিক একাডেমিক পড়াশোনা ছাড়া এ অংশে ভালো করা সম্ভব। নির্দিষ্ট কিছু বিষয় ভালোভাবে আয়ত্ত করতে পারলে যে কেউ এ অংশে পূর্ণ নম্বর পেতে পারেন। বিগত পাঁচ বছরের প্রশ্ন-সমাধান অনুশীলন করলে ভালো ফল পাবেন। শেষবারের মতো চোখ বুলিয়ে যান।

সাধারণত সাধারণ জ্ঞান অংশ থেকে বাংলাদেশ ও আর্ন্তজাতিক বিষয়াবলি মিলে ১০টি প্রশ্ন থাকে। এ অংশে ভালো করতে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি প্রস্ততি। সমসাময়িক নানা বিষয়, চলতি ঘটনা নিয়ে সম্যক ধারণা থাকলে পরীক্ষায় কাজে আসবে। যে ধরনের প্রশ্নই আসুক, পরীক্ষার পুরোটা সময় মনোবল ও মনোযোগ ধরে রেখে উত্তর দিতে পারলে প্রাথমিক বাছাই পর্বের বৈতরণী পার হয়ে পরবর্তী ধাপে যাওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।