প্রিলিমিনারির শেষ সময়ের প্রস্তুতি কিভাবে নেবেন

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে ১৯ মার্চে। এছাড়াও সাত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাও হবে আসছে মাসগুলোতে। এসব পরীক্ষায় যারা অংশ নিচ্ছেন তাদের প্রস্তুতির জন্য প্রথম আলো অনলাইনের নিয়মিত এ আয়োজন—
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে ১৯ মার্চে
ফাইল ছবি

প্রিলিমিনারি বা বাছাই পরীক্ষা সম্পর্কে ভীতি অনেকের মনেই অযথা ঘুরপাক খায় বলে মনে হয়। এ ভীতি বা শঙ্কা থেকে মুক্ত না থাকলে প্রার্থীর অনেক ক্ষতি হতে পারে। টেনশনমুক্ত থাকাটা সাফল্যের সহায়ক। টেনশনমুক্ত এবং সাবলীল অবস্থায় থাকতে পারলে পরীক্ষা ভালো হবেই।

পরীক্ষা হলে একটু সময় নিয়ে আগে যাওয়া উত্তম। প্রশ্নপত্রের সেট, উত্তরপত্রের সেট এবং নিয়মাবলি যথাযথভাবে দেখে এবং মেনে চলতে হবে। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে ভুল যেন না হয়। বিগত কয়েক বছরে প্রিলিমিনারি এমনকি লিখিত পরীক্ষায়ও দেখা গেছে যে, হাজিরা তালিকায় প্রার্থী অনুপস্থিত অথচ উত্তরপত্র আছে। সে ক্ষেত্রে প্রার্থীর ভাগ্য মন্দ হলে কিছু করার থাকে না।

উত্তরপত্রে কাটাকাটি চিহ্ন, ভুল ঘর পূরণ করা, নির্দিষ্ট আসনের পরিবর্তে ভিন্ন স্থানে বসা, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঘোষিত নিষিদ্ধ সামগ্রী হলে নেওয়া, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হলে না পৌঁছা, প্রবেশপত্র সঙ্গে না নেওয়া, পরস্পর কথাবার্তা বলা ইত্যাদি বিষয় পরিহার করতে হবে। ভুল করেও নিষিদ্ধ সামগ্রী নিয়ে হলে প্রবেশ করা যাবে না।

বিসিএসের ক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ২০০ নম্বরের মধ্যে হয়ে থাকে। এ বিষয়ে সিলেবাসে বিস্তারিত আছে। তা ভালোভাবে দেখে নিতে হবে প্রস্তুতির সময়ই। অন্যান্য চাকরির পরীক্ষায়ও সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা নেওয়া হলে প্রস্তুতি অনেক সহজ হয়। মনে রাখতে হবে, হঠাৎ দু–চার দিনের প্রস্তুতিতে যথাযথ সুফল না–ও পাওয়া যেতে পারে। সে জন্য দীর্ঘদিন ধরে বারবার চর্চা করতে হবে। শুধু এমসিকিউ নয়, বরং একটু বড় আকারে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা থাকা প্রয়োজন। এর ফলে ছোট প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া সহজ হয়।

অনেকে কয়েকজন মিলে গ্রুপ করে অবৈধ উপায় অবলম্বন করার সুযোগ খুঁজে থাকেন। এসব গ্রুপে থেকে সাহায্য তো হবেই না, বরং নিজের সর্বনাশ ত্বরান্বিত হবে। নিজের জ্ঞান, মেধা, জানা ও প্রস্তুতির মাধ্যমেই উত্তর খুঁজে নেওয়া উত্তম। প্রতিযোগিতায় আপনাকে এগিয়ে থাকতে হলে একাই লড়াই করতে হবে।

বিসিএস প্রস্তুতি নিয়ে নিজেকে উচ্চতর স্থানে নিয়ে যেতে পারেন। মডেল: মেহেদী ও মিশু
ফাইল ছবি

কেউ কেউ নিশ্চিত না হয়ে এলোপাতাড়ি টিক চিহ্ন বা বৃত্ত ভরাটের কাজ করে থাকেন। নিশ্চিত না হলে আন্দাজে উত্তর দেওয়া বুদ্ধিমানের লক্ষণ নয়। আপনি ২০০ নম্বরের মধ্যে ১৩০ সঠিক করলেন। এরপর আন্দাজে কিছু ভুল ঘরে উত্তর দিলেন। অবস্থা অনুকূল না–ও হতে পারে এ ক্ষেত্রে। যে উত্তরগুলো জানা, শুধু সেগুলোই রাখা দরকার। উল্লেখ্য, কয়েক লাখ প্রার্থীর মধ্যে ওপরের দিকে থাকা প্রার্থীরাই লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হবেন।

কেউ কেউ অনুমান করেন এবং আগেই আন্দাজ করে বলেন যে কাটমার্ক এই পরিমাণ হতে পারে। এ অনুমান যে ভুল, তা তাঁরা জানেন না; এমনকি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও তা হয়তো জানেন না। এতসব হিসাবনিকাশ, অনুমান ইত্যাদি না করে আগে থেকে প্রস্তুতি নিন, প্র্যাকটিস করুন, সঠিক উত্তরের বৃত্ত ভরাট বা টিক চিহ্ন দিন। আপনি পারবেন। সাহস ও মানসিক স্থিরতা আপনার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।

বৃত্ত পূরণে কাটাকাটি নয়, রেজিস্ট্রেশন নম্বরে ভুল নয়, মনোবল হারানো নয়—সাফল্যের পথে এগিয়ে যান।

*লেখক: সমর পাল, পিএসসির সাবেক সদস্য