লিংকডইনে নিজেকে যেভাবে তুলে ধরবেন

লিংকডইন

বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপস্থিতি কিন্তু পেশাজীবন কিংবা চাকরির ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। পেশাজীবীদের জন্য যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম। পেশাজীবনে উন্নতি কিংবা নতুন চাকরি সন্ধানে কিন্তু লিংকডইন বেশ কার্যকর। এখন অনেক নিয়োগের ক্ষেত্রেই লিংকডইন প্রোফাইল সংযুক্ত করতে হয়। ধীরে ধীরে লিংকডইনের ব্যবহার অনলাইন মাধ্যমে বাড়ছে।

লিংকডইনের প্রোফাইল পেশাদারদের নতুন সংযোগ ও নতুন কাজের সুযোগ পেতে বেশ সহায়তা করে। ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নয় বলে লিংকডইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে পেশাদার আচরণ করতে হবে। যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখবেন:

১.

লিংকডইন প্রোফাইলে আপনার সার্টিফিকেটের নাম, নিজের সম্পর্কে লেখা, শিক্ষাগত স্বীকৃতি, পেশাদার অভিজ্ঞতা, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের অভিজ্ঞতা, প্রশিক্ষণ, পুরস্কার এবং দক্ষতার বিস্তারিত সংযুক্ত করতে হবে। আপনার জীবনবৃত্তান্তে যেসব তথ্য আছে, তার সঙ্গে তথ্যের কোনো ফারাক থাকা যাবে না। ভুল তথ্য যাতে কোনোমতে না যায়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। বাড়িয়ে লেখা যাবে না।

২.

প্রোফাইলের ছবিটি চেষ্টা করুন পেশাদার রাখতে। সেলফি কিংবা ফেসবুকের মতো সাধারণ ছবি দেওয়া যাবে না। অনেক পেশাজীবী সঠিক ছবি ছাড়া লিংকডইনে কাউকে যুক্ত করে না।

৩.

লিংকডইনের কভার ছবিটি আপনার সম্পর্ক ও কাজে আগ্রহ তৈরি করে—এমন করে যুক্ত করুন। কোনো সেমিনারে অংশগ্রহণ কিংবা কোনো প্রেজেন্টেশন বা কোনো অর্জনের ছবি যুক্ত করতে পারেন।

৪.

লিংকডইনে বিভিন্ন বিষয়ে লেখার সময় বানান ও ব্যাকরণ সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত। পেশাদার বাক্য ও যোগাযোগের ধরন প্রয়োগে গুরুত্ব দিন।

৫.

ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক মতামত লিংকডইনে এড়িয়ে চলুন।

প্রতিষ্ঠানের নতুন কাজের সুযোগ কিংবা অর্জন লিংকডইনে নিয়মিত প্রকাশ করুন
ছবি: সংগৃহীত

৬.

লিংকডইনে আপনার প্রোফাইলটির বিশেষ ওয়েব ঠিকানা থাকা উচিত, যা আপনার নামের সঙ্গে মেলে।

৭.

লিংকডইনে যা লিখছেন বা প্রকাশ করছেন কিংবা নিজের কোনো কাজের তথ্য প্রকাশ করলেন, তা বিভিন্ন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মীরা যাচাই করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে ভুল তথ্য পরিহার করুন।

যারা লিংকডইনে নবীন

বিশ্ববিদ্যালয়–জীবন থেকেই লিংকডইনকে নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা শিখতে হবে। যাঁরা কর্মজীবনে নবীন, কিংবা প্রথম চাকরি খুঁজছেন, তাঁরা লিংকডইনকে বেশ কার্যকর উপায়ে ব্যবহার করতে পারেন।
১.

আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব কোর্স করছেন বা শেষ করেছেন, তা যুক্ত করুন। বিশেষ কোনো কোর্সে অংশগ্রহণ বা কোনো আলোচিত শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে কাজ করলে তা যুক্ত করুন।

২.

বিশেষ কোনো কর্মশালা কিংবা প্রশিক্ষণ নিলে তা যুক্ত করুন।
৩.

সৃজনশীল ও এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস সংযুক্ত করুন।

৪.

কোনো বিষয়ে জানার আগ্রহ থাকলে লিংকডইনের বিভিন্ন গ্রুপে সংযুক্ত হোন। এ ছাড়া কোনো কিছু পোস্ট করলে কার্যকর হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন।
৫.

যে ক্ষেত্রে বা যেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে আগ্রহী, তা অনুসরণ করুন। তাদের কর্মসংস্কৃতি বোঝার চেষ্টা করুন।

৬.

আপনার নেটওয়ার্কে যাঁরা যুক্ত হবেন, তাঁদের বিভিন্ন পেশাসংশ্লিষ্ট পোস্টে আপনার পেশাসংক্রান্ত মত লিখে নিজের কথা প্রকাশের চেষ্টা করুন।

৭.

লিংকডইন থেকে নিজের পেশাদার সংযোগ তৈরির জন্য কার্যকর যোগাযোগ কৌশল শিখুন, যা পরবর্তী সময়ে পেশাজীবনেও কাজে আসবে।

৮.

আপনার পেশা কিংবা শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে নোট প্রকাশ করে নিজের লেখার দক্ষতা ও সৃজনশীল ভাবনার কথাও প্রকাশ করতে পারেন।

ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক মতামত লিংকডইনে এড়িয়ে চলুন
ছবি: সংগৃহীত

পেশাজীবীদের জন্য লিংকডইন

যাঁরা এরই মধ্যে পেশাজীবনে অনেক সময় কাটিয়েছেন, লিংকডইন তাঁদের জন্য নতুন সংযোগ, নতুন দক্ষতা সম্পর্কে জানার সুযোগের ক্ষেত্র কিন্তু। এ ক্ষেত্রে নিজের গুরুত্ব বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিন।
১.

গুণগত অবস্থান বনাম সংখ্যা: কয়েক হাজার অপ্রাসঙ্গিক সংযোগের চেয়ে কিছু উচ্চ মানের কার্যকর কম সংখ্যায় সংযোগ থাকা ভালো। লিংকডইনে জনপ্রিয়তার প্রতিযোগিতা নয়।
২.

সংযোগ: যেহেতু লিংকডইন তারকা কিংবা সেলিব্রিটিদের কার্যকর কোনো প্ল্যাটফর্ম নয়, তাই লিংকডইনে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। নিজের পেশা কিংবা শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়ার চেষ্টা করুন। নিজে শিখুন, নিজের সহকর্মী বা সংযুক্ত মানুষের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করুন।

৩.

নিজের প্রতিষ্ঠানের নতুন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে লিংকডইন ব্যবহারের চেষ্টা করুন। প্রতিষ্ঠানে বহুমাত্রিক সংস্কৃতি তৈরির জন্য লিংকডইনের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।

৪.

প্রতিষ্ঠানের নতুন কাজের সুযোগ কিংবা অর্জন লিংকডইনে নিয়মিত প্রকাশ করুন।

৫.

লিংকডইনে পরিচিত কিংবা প্রাক্তন সহকর্মী বা শিক্ষকদের কাছ থেকে সুপারিশ নেওয়ার সুযোগ থাকলে নিন। কাউকে সুপারিশ দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজের গুরুত্ব ও সম্পর্কের দিকে নজর দিন।