বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রমাণিত হলেই পরীক্ষা বাতিল, কঠোর ব্যবস্থা

সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বলেছে, বিসিএসের যেকোন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে সেই পরীক্ষা বাতিল করে আবার নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ ছাড়া কেউ অসদুপায় অবলম্বন করলে কমিশনের আইনের পাশাপাশি প্রচলিত আইনে তাঁর শাস্তি হবে। প্রার্থিতা বাতিলসহ ভবিষ্যতে পিএসসির অধীনে কোনো পরীক্ষায় তাঁকে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে পিএসসিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দাদের একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই আলোচনা হয়। ২৪ জুলাই শুরু হতে যাওয়া ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বোচ্চ কঠোর হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মোট ১৫টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা হবে।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছেন, এমন কয়েকজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সভায় পিএসসি পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়। সেখানে কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, যদি পিএসসির কোনো পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, তাহলে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? এ সময় আলোচনা করা হয়, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস যাতে না হয়, সে জন্য সবাই সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করবেন। তবে যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রমাণিত হয়, তাহলে সেই পরীক্ষা বাতিল করে আবার পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ ছাড়া এই ফাঁসের সঙ্গে যে জড়িত থাকবেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনের কঠোর দিকটি সামনে এনে বিচার করা হবে।

সভা সূত্র জানায়, পরীক্ষার হলে যদি কেউ দেখাদেখি করেন বা কথা বলেন বা নকল করেন, তাহলে কী করা হবে? এ সময় ঠিক হয়, ওই পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে। এ ছাড়া অপরাধ গুরুতর হলে দেশের প্রচলিত আইনে তাঁর বিচার হবে ও ভবিষ্যতে তাঁকে পিএসসির কোনো পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হবে না। পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের কথা বলা ও দেখাদেখিতে কঠোর হতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও হলের দায়িত্বে থাকা পরীক্ষককে এ বিষয়ে সজাগ ও তৎপর থাকতে বলা হয়।

প্রশ্নপত্র ফাঁস ও গুজব ছড়ালে কী করা হবে, এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হলে গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, যেহেতু বিসিএস দেশের একটি মর্যাদাপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়োগ হয় এর মাধ্যমে, তাই এটি পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও বেশি সচেষ্ট থাকবেন ও আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।
আজকের সভার বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চাই, পরীক্ষা মানে পরীক্ষা। যে প্রার্থী যতটা জানেন, ঠিক ততটাই তাঁর পরীক্ষাতে প্রতিফলিত হবে। অন্যের সঙ্গে কথা বলে বা দেখাদেখি করে কেউ কোনো অবৈধ সুযোগ নিক, সেটা আমরা হতে দেব না। এ জন্য যতটা কঠোর হতে হয়, আমরা হব। এই বিষয়ে সভায় সবাই একমত হয়েছেন। আমরা কোনোভাবেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে দেব না। দুর্ভাগ্যক্রমে যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রমাণিত হয়, তাহলে পরীক্ষা বাতিল করে আবার নেওয়া হবে।’

পিএসসির এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার আজ প্রথম আলোকে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে সেটা বাতিল করাই উচিত। না হলে এগুলো বাড়তেই থাকবে।