করোনায় সরকারের চেয়ে আপনার-আমার করণীয় বেশি

দুদিন আগে করোনাভাইরাসে বাবা হারানো এক পুত্রের করুন কাহিনি পড়লাম প্রথম আলোয়। ছেলেরা ধারণা করছেন, ভদ্রলোক হয়তোবা জনসমাগম থেকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। শেষের দিকে ওনার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। ছেলেরা সারা রাত মুমূর্ষু বাবাকে নিয়ে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ছোটাছুটি করেছেন, সব হাসপাতাল থেকে ফেরত দিয়েছে। অধিকাংশ হাসপাতাল বলেছে, আইসিইউ ইউনিট খালি নেই। শেষমেশ যদিও এক হাসপাতালে ওনার বাবাকে ভর্তি করাতে পেরেছেন, তখন বাবার শেষ অবস্থা। ভদ্রলোক ইন্তেকাল করেছেন।

দেশে এখনো হাতে গোনা কিছু লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তাই এই অবস্থা। আমি এখানে কোনো কিছুর দোষারোপ করছি না। আমাদের তো সীমাবদ্ধতা আছেই। এই রোগ সামাল দিতে অনেক বড়, অনেক ধনী রাষ্ট্র যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমাদের মতো সীমিত সম্পদের দেশে সরকার বা চিকিৎসাব্যবস্থা কতটুকুই–বা এই মহামারি সামাল দিতে পারবে। আল্লাহ না করুক, এখনো এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশে অনেক বড় বিপর্যয় ঘটে যাবে।

সরকার যা বলছেন, বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন, পুরোপুরি মেনে চলতে হবে সবাইকে। ভুলেও ভাবেন না যে আপনি সুস্থ আছেন, বয়স কম; আপনার কিছু হবে না।

আপনার কিছু না হতে পারে, আপনি হয়তো বুঝতেও পারবেন না যে আপনার দ্বারা আপনার অতি প্রিয়জন আক্রান্ত হয়ে পড়বে। তখন সরকার, হাসপাতাল, কেউ কোনো কিছু করতে পারবে না। সারা পৃথিবী সামাজিক দূরত্ব (তিন ফুট), লকডাউনের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আপনিও এই প্রচেষ্টায় আপনার ভূমিকা শতভাগ পালন করুন। নিজে সুস্থ থাকুন, পরিবার, সমাজ, তথা দেশকে এই মহাবিপদ থেকে রক্ষাকল্পে আপনার ভূমিকা যথাযথ পালন করুন। যদি শহরে থাকেন, অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না। এমনকি পাশের বাসার পরিচিত জন থেকেও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। আপনি তো জানেন না উনি এই রোগের জীবাণু বহন করছেন কি না। আপনি আগিয়ে গেলেই আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবেন। আল্লাহ আপনাকে, আমাকে, তথা আমাদের দেশকে হেফাজত করুন।