করোনায় বাংলাদেশের পাশে কোরিয়ার বাংলাদেশি ছাত্ররা

বিএসএকে বাংলাদেশের ৩৫০টি পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
বিএসএকে বাংলাদেশের ৩৫০টি পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিএসএকে), দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থিত সব বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীর কাছে একটি অতি সুপরিচিত নাম। সংগঠনটি ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই বছরজুড়ে নানা রকম কাজ করে যাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থিত সব বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীসহ সব পেশাজীবী নাগরিকের কাছে সুবিদিত একটি নাম বিএসএকে। পড়ালেখার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন সামাজিক কাজেও অবদান রাখার চেষ্টা করে থাকে এই সংগঠনটি। শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যাকবলিত এলাকায় সাহায্য করাসহ দেশের যেকোনো দুর্যোগময় ক্রান্তিলগ্নে সহযোগিতার সব ধরনের চেষ্টা করে থাকে বিএসএকে।

বর্তমান সময়ে করোনাভাইরাসের কারণে থমকে গেছে চিরাচরিত আমাদের পৃথিবী। যার প্রভাব পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের রান্নাঘর থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতির দপ্তর পর্যন্ত। চলমান মহামারির কারণে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে বরাবরের মতো এবারও এগিয়ে এসেছে সংগঠনটি।

বিএসএকে ফেসবুকে একটি পেজ খুলে কয়েক দফায় অনুদান সংগ্রহ শুরু করার কথা চিন্তা করে। যেখানে এগিয়ে আসে কোরিয়ায় অবস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সব পেশাজীবীর বাংলাদেশি নাগরিক। প্রথম দফা শেষ করে সংগৃহীত অনুদান পাঠানো হয় বাংলাদেশে। এই অনুদান দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের জন্য ক্রয় করা হয় দৈনন্দিন জীবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী। উপহারসামগ্রী পে ইট ফরোয়ার্ড বাংলাদেশ ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনসহ অন্যান্য বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে নরসিংদী, টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, কুড়িগ্রাম ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের প্রায় ৩৫০টির মতো পরিবারের কাছে পৌঁছানো হয়। মানুষের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে পণ্যসামগ্রী পাঠানোর ধারা অব্যাহত থাকবে।

মানুষের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে আরও পণ্যসামগ্রী পাঠাবে বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিএসএকে)। ছবি: সংগৃহীত
মানুষের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে আরও পণ্যসামগ্রী পাঠাবে বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিএসএকে)। ছবি: সংগৃহীত

করোনা শুরুর প্রাক্কালে চীনের পরেই বেশি আক্রান্ত হয় দক্ষিণ কোরিয়া। যদিও কর্তৃপক্ষের অসাধারণ ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায় আজ দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা প্রায় শূন্যের কোঠায়। তখন দেশে অবস্থিত পরিবার-পরিজন নিয়মিত ফোন করে খোঁজ নিত, সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় ঘেরা থাকত তাদের সময়। আজও ফোন আসে, কিন্তু দৃশ্যপট সম্পূর্ণ বদলে গেছে। আজ কোরিয়াপ্রবাসীরা সদা উদ্বিগ্ন থাকে দেশের কথা চিন্তা করে।

হঠাৎ করে থেমে যাওয়া পৃথিবীতে করোনার কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করা মানুষগুলা আবার মিলিত হবে তাদের স্বজনদের সঙ্গে, আবারও চলতে শুরু করবে সময়ের চাকা, সবার এখন এই একটাই আশা।
লেখক: নির্বাহী সদস্য, বিএসএকে। পিএইচডি শিক্ষার্থী, ফটোনিক ন্যানো ম্যাটেরিয়ালস ল্যাবরেটরি, দক্ষিণ কোরিয়া।