১৫ টাকায় পেঁয়াজ, ২৫ টাকা রসুন

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে পণ্য আনা–নেওয়ার একটি মাধ্যম নৌপথ। ট্রলারে পণ্য ওঠাচ্ছেন শ্রমিকেরা (বাঁয়ে)। রসুনের কোয়া ঝাড়ার কাজে ব্যস্ত এক নারী শ্রমিক (ডানে ওপরে)। দোকানে শুকনা মরিচ সাজিয়ে রাখছেন এক তরুণ। গত রোববার শ্যামবাজারে।  ছবি: প্রথম আলো
পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে পণ্য আনা–নেওয়ার একটি মাধ্যম নৌপথ। ট্রলারে পণ্য ওঠাচ্ছেন শ্রমিকেরা (বাঁয়ে)। রসুনের কোয়া ঝাড়ার কাজে ব্যস্ত এক নারী শ্রমিক (ডানে ওপরে)। দোকানে শুকনা মরিচ সাজিয়ে রাখছেন এক তরুণ। গত রোববার শ্যামবাজারে। ছবি: প্রথম আলো
• সবচেয়ে কম দর দেশি হল্যান্ড জাতের বড় পেঁয়াজের।
• এ বছর দেশে পেঁয়াজের আবাদ ও ফলন খুব ভালো হয়েছে।
• বাজারে নতুন দেশি রসুনও উঠতে শুরু করেছে।


পুরান ঢাকার পাইকারি বিক্রয়কেন্দ্র শ্যামবাজারে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম কমেছে। নতুন মৌসুম শুরু হওয়া ও আমদানি বৃদ্ধির কারণে এসব পণ্যের দর পড়তি জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর পবিত্র রমজান মাসে বাজার পরিস্থিতি ক্রেতাদের জন্য ভালো যাওয়ার আশা আছে।

সরেজমিনে গত রোববার শ্যামবাজারে গিয়ে দেখা যায়, নতুন বাজারে আসা দেশি হালি পেঁয়াজ (সংরক্ষণ করার মতো) কেজিপ্রতি ৩০-৩২ টাকা দরে বিক্রি করছেন আড়তদারেরা। কিছুদিন আগেও দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি ছিল। বাজারে এখন সবচেয়ে কম দর দেশি হল্যান্ড জাতের বড় পেঁয়াজের, প্রতিকেজির দাম ১৫ টাকা। এ পেঁয়াজ ভারতীয় সুখসাগর জাতের, যা এ দেশে হল্যান্ড নামে পরিচিত। এসব পেঁয়াজ মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ায় চাষ হয়। ভারতীয় জাত থেকে দেশে উৎপাদিত কিং নামের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-২৬ টাকা কেজি দরে।

শ্যামবাজারের নবীন ট্রেডার্সের মালিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, এ বছর দেশে পেঁয়াজের আবাদ ও ফলন খুব ভালো হয়েছে। বৃষ্টি আর কয়েকটা দিন পরে হলে কৃষকেরা কোনো ক্ষতি ছাড়াই পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পারবেন। হালি পেঁয়াজের দর কিছুদিনের মধ্যে ২৫ টাকায় নামবে আশা করে তিনি বলেন, রোজায় পেঁয়াজের ভালো সরবরাহ থাকবে। ফলে দরও স্থিতিশীল থাকার আশা করা যায়।

নতুন পেঁয়াজের মতো বাজারে নতুন দেশি রসুনও উঠতে শুরু করেছে। বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২৫ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা দরে। এ দরও পড়তি।

শ্যামবাজারে এখন তিন দেশের আদা মিলছে। চীনা আদার কেজিপ্রতি দর ৭৫ টাকা, ভারতীয় আদা ৩০-৩২ টাকা এবং মিয়ানমারের আদা ৩৮-৪৩ টাকা। পদ্মা বাণিজ্যালয়ের মালিক কামরুজ্জামান পাটোয়ারি বলেন, এখন আদার সরবরাহ ভালো। দামও পড়তির দিকে।

বিভিন্ন আড়তে গিয়ে দেখা যায়, দাম কিছুটা বেড়েছে মরিচের। শ্যামবাজারে তিন ধরনের শুকনা মরিচ মিলছে। বেশি ঝালের ভারতীয় তেজা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬০-১৭০ টাকা দরে। কম ঝালের ভারতীয় ঘুন্টি মরিচ প্রতি কেজি ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এক মাসে ভারতীয় মরিচের দর কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া দেশি মরিচ ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে।

শ্যামবাজার থেকে এসব পণ্য কিনে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন বিক্রেতারা। শ্যামবাজারে সরাসরি আমদানিকারকের কাছ থেকে পণ্য কেনা হয়। ফলে কারওয়ান বাজার, মিরপুর, কচুক্ষেত, যাত্রাবাড়ীর পাইকারি দোকানগুলোর চেয়ে শ্যামবাজারে পণ্যের দাম কম।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, ঢাকার খুচরা বাজারে এখন পেঁয়াজ ২৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগের তুলনায় ৩২ শতাংশ কম। দেশি রসুনের দর ২৩ শতাংশ কমে ৪০ টাকা ও আদার দর ১০ শতাংশ কমে কেজিপ্রতি ৬০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।