রপ্তানিতে উৎসে কর কমিয়ে গেজেট প্রকাশ

পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিমূল্যের ওপর উৎসে কর কর্তনের হার কমিয়েছে সরকার। প্রথম আলো ফাইল ছবি
পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিমূল্যের ওপর উৎসে কর কর্তনের হার কমিয়েছে সরকার। প্রথম আলো ফাইল ছবি

পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিমূল্যের ওপর উৎসে কর কর্তনের হার কমিয়েছে সরকার। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে এটি ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

পৃথক আরেকটি গেজেটে তৈরি পোশাকশিল্প খাতেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ খাতের পণ্য রপ্তানি থেকে আয়ের ওপর আয়কর হার সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ এ অর্থবছরেও (২০১৮-১৯) বহাল রাখা হয়েছে। কোনো কারখানার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেট’ থাকলে এ হার ১০ শতাংশ রাখা হয়েছে।

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ৫৩ বিবি ও ৫৩ বিবিবিবিতে যেসব পণ্যের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোয় রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিমূল্যের ওপর ১ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য ছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য পাটজাত দ্রব্য ছাড়া সব পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার কমিয়ে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়। এ নিয়ে একটি গেজেটও জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সে গেজেটের মেয়াদ গত জুন মাসে শেষ হয়েছে। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে এই উৎসে কর হার শূন্য দশমিক ৬০ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) গেজেটের মাধ্যমে এই হার পরিবর্তন করা হলো। পাটজাত পণ্য বাদে সব পণ্যে এ হার প্রযোজ্য হবে। পাটজাত দ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি এসআরওর মাধ্যমে রপ্তানিমূল্যের ওপর উৎসে কর শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা আছে।

গত অর্থবছরে নিটওয়্যার ও ওভেন গার্মেন্টস উৎপাদন ও রপ্তানিতে নিয়োজিত করদাতার রপ্তানি আয়ের ওপর আয়কর হারে ছাড় পেয়েছিল। কোম্পানি করদাতার ক্ষেত্রে আয়করের হার ১২ শতাংশ। তবে গত অর্থবছরে করদাতার কারখানা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন’ থাকলে ওই কারখানায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি থেকে আয়ের ওপর আয়কর হার ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। যেহেতু এটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য প্রযোজ্য ছিল, নতুন ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এটি কার্যকর হয়নি। এ সুবিধা আবারও বহাল রেখে নতুন গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘সরকারের এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমাদের তৈরি পোশাক খাত এখন বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ইউরোপ-আমেরিকাতে অন্য সবকিছুর দাম বাড়লেও তৈরি পোশাকের দাম বাড়ছে না। আপনারা জানেন, লোকসানে পড়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ কারখানা ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা উৎসে কর কমানোর জন্য সরকারকে অনুরোধ করছিলাম। সরকার কমিয়েছে। অবশ্য আমরা আরও কমানোর কথা বলেছিলাম। তবে এই পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’