চা-শিল্পে শোভনকর্ম বাস্তবায়নে ত্রিপক্ষীয় কর্মশালা

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা–শিল্প খাতে শোভনকর্ম বাস্তবায়নে ত্রিপক্ষীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: প্রথম আলো
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা–শিল্প খাতে শোভনকর্ম বাস্তবায়নে ত্রিপক্ষীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা–শিল্প খাতে শোভনকর্ম বাস্তবায়নে ত্রিপক্ষীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে । 

মঙ্গলবার উপজেলার গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফের হলরুমে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ইনডিজিনাস পিপলস ডেভলেপমেন্ট সার্ভিসের (আইপিডিএস) যৌথ আয়োজনে এই কর্মশালা হয়।

আইপিডিএসের প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব দ্রংয়ের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর তৌমো পৌশিয়েনেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাকিউন নাহার বেগম, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম, ফিনলে টি সিইও (চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার) তাহসিন আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাখন লাল কর্মকার। এর আগে ধারণাপত্র উপস্থাপন করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী ও আইএলওর ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর আলেক্সসিউস চিছাম। এ সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন চা–বাগান থেকে চা–শ্রমিক নেতারা অংশ নেন।
কর্মশালায় চা–শ্রমিক প্রতিনিধিরা বলেন, ‘অখণ্ড ভারত থেকে চা–শ্রমিকদের এই দেশে আনা হয়েছিল, ভালো থাকার লোভ দেখিয়ে। তাদের বলা হয়েছিল, এখানে সবুজ লতাপাতায় ঘেরা জায়গায় সুখেশান্তিতে থাকতে পারবে। কিন্তু বছরের পর চা–শ্রমিকেরা শোষণ, বঞ্চনা সহ্য করে বেঁচে আছে। তারা মৌলিক চাহিদার পুরোটা পাচ্ছে না। চায়ের উৎপাদন বাড়াতে তারা কঠোর পরিশ্রম করেও প্রয়োজনীয় সুযোগ–সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’

বাগানমালিকের প্রতিনিধিরা বলেন, চা–শ্রমিক ও বাগানমালিক একটি পরিবার। এই পরিবারের সবার প্রচেষ্টায় চা–শিল্প টিকে আছে। বাগান কর্তপক্ষ চা–শ্রমিকদের চাহিদা পূরণ করতে কাজ করে যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম বলেন, চা–বাগানের জায়গার মালিক হচ্ছে সরকার। বাগানমালিকেরা সরকারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লিজ নিয়ে বাগান করেন। লিজ দেওয়ার সময় অনেকগুলো শর্ত দেওয়া হয়ে থাকে। শর্ত ভঙ্গ করলে লিজ বাতিল হয়। তিনি বলেন, ‘চা–বাগানে শ্রমিকদের খাওয়ার জন্য (লাইসেন্সকৃত) বাংলা মদের পাট্টা (দোকান) রয়েছে। চা–শ্রমিকেরা যদি মনে করেন, এই মদ তাঁদের ক্ষতি করছে, তাহলে আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা মদের পাট্টা তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’

কর্মশালার প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল আমিন বলেন, বর্তমান সরকার চায় না, কেউ পিছিয়ে থাকুক। সরকার সব ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সন্তানদের পড়ালেখার কথা চিন্তা করে তাদের নিজস্ব ভাষায় বই করে দিয়েছে। তেমনি চা–শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি চা–বাগানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি করে দিচ্ছে সরকার। যেসব বাগানে স্কুল নেই, সেখানে স্কুল নির্মাণের কাজ চলছে।