মুন্সিগঞ্জে চালু হলো হোন্ডার কারখানা

মুন্সিগঞ্জের আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
মুন্সিগঞ্জের আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

বাংলাদেশে চালু হলো জাপানের হোন্ডা মোটর করপোরেশনের কারখানা। আজ রোববার মুন্সিগঞ্জের আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে ২৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত কারখানাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।

দেশে হোন্ডা বাংলাদেশ লিমিটেড (বিএইচএল) নামে যৌথ উদ্যোগে কোম্পানি খুলে কারখানা করেছে হোন্ডা মোটর করপোরেশন। এর অংশীদার সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি)। নতুন কারখানায় আপাতত বছরে এক লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদনের সক্ষমতা তৈরি করেছে হোন্ডা, যা ২০২১ সালে দুই লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এখন নতুন কারখানায় উৎপাদিত মোটরসাইকেলে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ বা বাংলাদেশে তৈরি কথাটি লিখতে সরকারের কাছে আবেদন জানাবে হোন্ডা। এ স্বীকৃতি পেলে কর ছাড় পাওয়া যাবে। এতে মোটরসাইকেলের দামও কমবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

কারখানার উদ্বোধন উপলক্ষে রোববার সকালে আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হোন্ডা বাংলাদেশ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এ ছাড়া সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং হোন্ডার মূল কার্যালয় ও স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের কারখানার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, এখন নতুন কারখানায় মোটরসাইকেলের কাঠামো বা বডি ফ্রেম ও সুইচ আর্ম তৈরি করা হবে। ঝালাই ও রঙ করার কাজও হবে কারখানায়। বাকি যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ এনে সংযোজন করা হবে। তবে শিগগিরই একে একে যন্ত্রাংশ তৈরিতে যাবে হোন্ডা।

বিএইচএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইওচিরো ইশি বলেন, বাংলাদেশে নতুন কারখানার মাধ্যমে স্থানীয়করণের শুরু হলো। ভবিষ্যতে এ দেশেই বেশির ভাগ যন্ত্রাংশ তৈরি হবে। দাম কমবে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের কাছে এখন তারা কর ছাড়ের জন্য আবেদন করবেন। কর ছাড় পেলে সে অনুযায়ী দাম কমবে। কতটা কমবে, তা এখন বলা যাচ্ছে না।

এর আগে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সময়মতো নির্মাণকাজ শেষ কারখানা চালু করায় হোন্ডাকে অভিনন্দন জানান। তিনি দেশে গাড়ি তৈরিতে বিনিয়োগ করার জন্য জাপানি কোম্পানিগুলোকে অনুরোধ করেন।

ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোয়াসু ইজুমি বলেন, হোন্ডার কারখানা জাপানি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, দেশে জাপানিদের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলছে। আরেকটি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সরকার ইতিবাচক।

বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ২০১২ সালে হোন্ডার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে হোন্ডা বাংলাদেশ নামে কোম্পানি করে বিএসইসি। নতুন কারখানায় হোন্ডার বিনিয়োগ ১৯০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর বিএসইসির বিনিয়োগ ১০৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। ভবিষ্যতে মোট বিনিয়োগ বেড়ে ৬৮০ কোটিতে উন্নীত হবে। কর্মসংস্থান হবে দুই হাজার মানুষের।

হোন্ডা মোটর করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়োশি ইয়ামানে বলেন, হোন্ডা বিশ্বব্যাপী গত বছর ১ কোটি ৯৫ লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে। কোথাও মানের ক্ষেত্রে হোন্ডা কোনো ছাড় দেয় না।

অনুষ্ঠানে সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী, বেজার নির্বাহী সদস্য মো. হারুনুর রশিদ, হোন্ডা মোটরসের মোটরসাইকেল বিভাগের প্রধান নোরিয়াকি আবে, এশিয়া ও ওশেনিয়ার প্রধান মাসায়াকি ইগারাশি, বিএইচএলের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ আশিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।