৫-জির জন্য দরকার সুলভ মূল্যে তরঙ্গ

বাংলাদেশে সুলভ মূল্যে পর্যাপ্ত তরঙ্গ বা স্পেকট্রাম না পেলে পঞ্চম প্রজন্মের মুঠোফোন সেবা বা ফাইভ-জি ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে মনে করে মুঠোফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএ। সংগঠনটি বলেছে, ফাইভ-জি সেবা চালু করতে প্রয়োজন বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ। এর জন্য বাংলাদেশ সরকার, নীতিনির্ধারক ও মুঠোফোন অপারেটরদের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন।

ফাইভ-জি তরঙ্গ নিয়ে বৈশ্বিক অবস্থানপত্রে বাংলাদেশ সম্পর্কে এ মন্তব্য করেছে জিএসএমএ। এতে তারা জানায়, বিভিন্ন দেশে ফাইভ-জি তরঙ্গের নিলাম শুরু হয়েছে। তরঙ্গের পরিমাণ, অবস্থান ও মূল্যের ভিত্তিতে নেটওয়ার্কের গতি, প্রকৃতি ও মানের দিক দিয়ে দেশগুলোতে ভিন্নতা দেখা যাবে। প্রথম সারির তরঙ্গ গ্রাহক দেশগুলো ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের সর্বাধিক সুযোগ-সুবিধা পাবে। এর মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেটের উচ্চগতি, স্বনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালনা ও অত্যাধুনিক কারখানাসংবলিত স্মার্ট শহর।

জিএসএমএ মনে করে, ফাইভ-জি সেবা একটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। জিএসএমএর বিশেষজ্ঞ দল অনুমান করছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১৩০ কোটি ফাইভ-জি সংযোগ চালু হবে, যার মধ্যে ৭৫ কোটি হবে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। কিন্তু এর সবটুকুই নির্ভর করছে অপারেটররা কতটুকু তরঙ্গ পাচ্ছে, তার ওপর।

অবস্থানপত্রে জিএসএমএর তরঙ্গ বিভাগের প্রধান ব্রেট টার্নুজার বলেন, ভবিষ্যতে ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের অবিরাম ও অবিচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিতে অপারেটরদের আরও বেশি তরঙ্গ প্রয়োজন। মূলত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরই ফাইভ-জি সেবার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। সরকারের সহায়তা ছাড়া পরবর্তী প্রজন্মের মুঠোফোন সেবা সহজভাবে ও নিশ্চিন্তে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। স্বল্প সময়ে অধিক আয়ের উদ্দেশ্যে তরঙ্গের নিলামে বাড়তি কর নেওয়া উচিত নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশে তরঙ্গের ওপর সরকার উচ্চ হারে কর আরোপ করে রেখেছে বলে বিভিন্ন সময় বলে আসছে মুঠোফোন অপারেটররা। অন্যদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, অপারেটররা বাড়তি তরঙ্গ কেনে না বলেই তাদের সেবার মান আশাব্যঞ্জক নয়।

আগামী বছর ওয়ার্ল্ড রেডিও কমিউনিকেশন কনফারেন্স (ডব্লিউআরসি) অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয় জিএসএমএর প্রতিবেদনে। সংগঠনটি বলেছে, সরকার ও নীতিনির্ধারকেরা কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারে। এর মধ্যে আছে সর্বোচ্চ গতি ও অধিক ট্রাফিক নিশ্চিতে ফাইভ-জির বিস্তৃত ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড নিশ্চিতকরণ। সরকার ও নীতিনির্ধারকদের উচিত, ফাইভ-জির জন্য তরঙ্গের দাম বাড়ানোর প্রবণতা বাদ দেওয়া। কারণ, অত্যধিক মূল্য যেমন নেটওয়ার্কে বিনিয়োগ কমাবে, তেমনি সেবার মূল্যও বাড়াবে।