ঢাকায় হচ্ছে নতুন নতুন প্রকল্প

নাভানার কনডোমিনিয়াম প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলছে। গতকাল ঢাকার মিরপুরে।  ছবি: প্রথম আলো
নাভানার কনডোমিনিয়াম প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলছে। গতকাল ঢাকার মিরপুরে। ছবি: প্রথম আলো

নগর জীবনে বসবাসের জন্য মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে কনডোমিনিয়াম প্রকল্প জনপ্রিয় হচ্ছে। সে জন্য বড় আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন সে দিকে ঝুঁকছে। মিরপুর, মগবাজার, মোহাম্মদপুর, রামপুরা, মালিবাগ, কাঁচপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় কনডোমিনিয়াম প্রকল্প হাতে নিয়েছে বেশ কয়েকটি আবাসন প্রতিষ্ঠান।

আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে মধ্যবিত্ত মানুষ কনডোমিনিয়াম প্রকল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বেচাবিক্রি ভালো। তাই নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান একাধিক প্রকল্পও হাতে নিয়েছে।

এবিসি রিয়েল এস্টেট দ্য ওয়েসিস নামে মগবাজারে কনডোমিনিয়াম প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেখানে ২০৫০ থেকে ২৫৫০ বর্গফুটের ৪৫৭টি ফ্ল্যাট হবে। প্রকল্পের ৫২ শতাংশ জমিই ফাঁকা থাকবে। তাতে ২০ হাজার বর্গফুটের খেলার মাঠ, ইনডোর সুইমিংপুল, নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা ব্যায়ামাগার, ১ কিলোমিটার লম্বা হাঁটার জায়গা, ছোট সিনেমা হল, শিশুদের দিবাযত্ন কেন্দ্র, কাঁচাবাজার, এটিএম বুথ, সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য চারটি হল, ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা থাকবে। ৬৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। ২০২২ সালে প্রকল্পটি শেষ হবে। প্রতি বর্গফুটের দাম সাড়ে ১১০০০ থেকে ১২০০০ টাকা। ইতিমধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে গেছে।

ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করছেন অধিবাসীরা। রাজধানীর একটি কনডোমিনিয়ামে।  ছবি: প্রথম আলো
ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করছেন অধিবাসীরা। রাজধানীর একটি কনডোমিনিয়ামে। ছবি: প্রথম আলো

কমপ্রিহেনসিভ হোল্ডিংস মিরপুরের কাজীপাড়ায় মাঝারি আকারের কনডোমিনিয়াম নির্মাণ করছে। নাম ভিক্টোরিয়াস পার্ক। সেখানে ১৪৫৮ থেকে ১৫৬৪ বর্গফুটের ৭২টি ফ্ল্যাট হবে। প্রকল্পের ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ জায়গাই খোলা। তার মধ্যে ২৭ শতাংশ জায়গা নিয়ে বাচ্চাদের খেলার জায়গা হবে। তা ছাড়া হাঁটার জায়গা, সুইমিংপুল, ব্যায়ামাগার, ছাদের ওপর বাগান ও বসার জায়গা, প্রার্থনার কক্ষ ইত্যাদি থাকবে। প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে।

রাকিন ডেভেলপমেন্ট ‘বিজয় রাকিন সিটি’ নামে প্রথম কনডোমিনিয়াম করেছে মিরপুরে। সেখানে ১৯৫০টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৯১ শতাংশ ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। প্রকল্পটিতে ১৫৫৩ ও ১৮৭২ বর্গফুটের ফ্ল্যাট আছে। প্রায় ১৬ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কনডোমিনিয়ামের ৬২ শতাংশ জায়গাই খোলা। সেখানে একাধিক খেলার মাঠ ও সুইমিংপুল, মসজিদ, হাঁটার জায়গা, কনভেনশন হল, ব্যায়ামাগার, বাণিজ্যিক ভবন, বিদ্যালয় ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা আছে। এ ছাড়া রাকিন কাঁচপুরে নিজস্ব দেড় শ বিঘা জমির ওপর নতুন কনডোমিনিয়াম প্রকল্প হাতে নিয়েছে। রাকিন ট্রাঙ্কুয়েল টাউন নামের এই প্রকল্পে মিরপুরের প্রকল্পের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

শেল্‌টেক্ বীথিকায় সুইমিংপুল। গতকাল রাজধানীর মিরপুরের মাজার রোডে।  ছবি: প্রথম আলো
শেল্‌টেক্ বীথিকায় সুইমিংপুল। গতকাল রাজধানীর মিরপুরের মাজার রোডে। ছবি: প্রথম আলো

সিদ্ধেশ্বরীতে রূপায়ণ স্বপ্ন নিলয় নামে কনডোমিনিয়াম করেছে রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট। সেখানে ১৩০টি ফ্ল্যাট আছে। আকার ২২৭১ থেকে ৩৪০৯ বর্গফুট। নির্মাণকাজ শেষ হওয়া এই প্রকল্পে সুইমিংপুল, কমিউনিটি হল, ব্যায়ামাগার, সেলুন, ওষুধের দোকান ইত্যাদি আছে। প্রতিষ্ঠানটি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বড় আকারের একটি কনডোমিনিয়াম প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সেখানে ১৪৬০ থেকে ৩৪৫৫ বর্গফুট আয়তনের ২৮৩টি ফ্ল্যাট থাকবে। সেখানে হাঁটার জায়গা, ছোট খেলার মাঠ, ইনডোর সুইমিংপুল, চারদিকে খোলা সবুজ চত্বর, ছাদে বাগান ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

নাভানা রিয়েল এস্টেট মিরপুর-১৫তে ৩০ বিঘা জমির ওপর কনডোমিনিয়াম করছে। সেখানে ৫২ শতাংশ খোলা জায়গা আছে। প্রকল্পটিতে ১৩২৮ থেকে ২০৪৮ বর্গফুট আয়তনের ১৪৭৫ ফ্ল্যাট হবে। বাচ্চাদের খেলার জায়গা, হাঁটার জায়গা, ব্যায়ামাগার, মসজিদ, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, বিউটি পারলার ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা থাকছে। এ ছাড়া মিরপুর-১১ ও মোহাম্মদপুরে তাদের দুটি কনডোমিনিয়াম প্রকল্প আছে।