ভবনের স্থায়িত্বে ভালো রড ও কংক্রিটের বিকল্প নেই

প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব ভবন নির্মাণ করা হয়, সেখানে সব সময় ভালো মানের রড ও কংক্রিট ব্যবহার হয় না। ফলে যেসব ভবন নির্মাণে ভালো মানের রড ও কংক্রিট ব্যবহার হয় না, সেগুলো টেকসই হয় না। তাই যেকোনো ভবনকে মজবুত ও টেকসই করতে হলে ভালো মানের রড ও কংক্রিট ব্যবহার করতে হবে।

বিশ্ব করোশন সচেতনতা দিবস উপলক্ষে প্রথম আলো ও বিএসআরএম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রকৌশলীরা এই মত দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ভবনের ক্ষয় রোধ করতে ভালো মানের রড ও কংক্রিট ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে আর্দ্রতা বেশি থাকে, ফলে রডে মরিচা পড়ার প্রবণতা থাকে।

হাউজিং ও বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এইচবিআরআই) সাবেক পরিচালক আবু সাদেক বলেন, বাংলাদেশসহ মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য করোশন (ক্ষয়) সচেতনতা দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশে ভবন ও সেতু তৈরির সময় তার শক্তির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হলেও স্থায়িত্বের ওপর গুরুত্ব আরোপ করি না। এক শ বছরের জন্য কোনো ভবন বা সেতু নির্মাণ করলে দেখা যাচ্ছে, সেটি ৪০-৫০ বছরের বেশি স্থায়ী হয় না। সারা বিশ্বেই এই সমস্যার কারণে অনেক অর্থের ক্ষতি হয়। মরিচা পড়ার কারণে আমাদের দেশে রক্ষণাবেক্ষণের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ কারণে যে জাতীয় ক্ষতি হচ্ছে, তা অঙ্ক করে মেলানো যাবে না।

ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. তারেক উদ্দিন বলেন, ভবন নির্মাণের সময় আমরা ভবনের শক্তির দিকে দেখি। কিন্তু এতে যে রড বা কংক্রিট ব্যবহার করা হচ্ছে, তার মানের দিকে দেখি না। এ জন্য ভবনের স্থায়িত্ব আশানুরূপ হয় না। এক শ বছরের জন্য কোনো ভবন নির্মাণের পর যদি দেখা যায়, ১০ বছর পর তাতে মরিচা পড়েছে, তাহলে সেই ভবন তো এক শ বছর টিকবে না। রানা প্লাজার যে ঘটনা ঘটেছিল, তা ভালো মানের কংক্রিট বা রড ব্যবহার না করার কারণে ঘটেছিল। এ ছাড়া অনেক ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে, শুধু ভালো রড ও কংক্রিট ব্যবহার না করার কারণে। এ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। ৯০-এর দশকে আমরা ৭ হাজার সাইক্লোন সেন্টার চালু করেছিলাম। কিন্তু বেশির ভাগই ভালো নেই, উপকূলবর্তী এলাকার লবণাক্ততার কারণে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু সালেহ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ভবনে যে রড ব্যবহার করা হবে, তার যেন গুণগত মান ভালো হয়, সেটি লক্ষ রাখতে হবে। কংক্রিট হতে হবে শক্তিশালী, যাতে ভেতরের রডে পানি বা বাতাস প্রবেশ না করে। পানি বা বাতাস প্রবেশ করলে রডে মরিচা পড়ে, বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এভাবে ভালো রড ও কংক্রিট ব্যবহার করলে ভবন ও স্থাপনা দীর্ঘস্থায়ী হবে।