নিম্নমানের গুঁড়া দুধে বাড়তি শুল্ক আরোপের দাবি

>

গোখাদ্য আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি করেছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন।

দেশীয় দুগ্ধশিল্পের সুরক্ষায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে নিম্নমানের ভর্তুকি পাওয়া গুঁড়া দুধ আমদানিতে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপের পাশাপাশি আমদানি শুল্ক ৫০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি করেছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন।

নিম্নমানের গুঁড়া দুধ আমদানি নিয়ন্ত্রণের পেছনে ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের যুক্তি, দেশের দুগ্ধ খামারিদের তরল দুধের চাহিদা বাড়ার কারণে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমদানি করা নিম্নমানের গুঁড়া দুধ পানিতে গুলিয়ে ভোক্তাদের প্রতারিত করছে। এটি শক্ত হাতে বন্ধ না করা গেলে দেশের উদীয়মান দুগ্ধশিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। আর একবার ধ্বংস হয়ে গেলে চড়া দামে দুধ কেনা ছাড়া বিকল্প থাকবে না। আবার দেশের দুগ্ধশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে কৃষকেরাও ক্ষতির মুখে পড়বেন। কারণ, দুগ্ধ খামারে ধান, গম ও ভুট্টার খড় বিক্রি করে কৃষকেরা বাড়তি আয় করেন। দুগ্ধ খামার না থাকলে তাঁরা সেগুলো বিক্রি করতে পারবেন না।

সমিতির অভিযোগ, দেশের দুগ্ধশিল্পকে ধ্বংস করার জন্য একটি মহল সব সময় নিম্নমানের গুঁড়া দুধ আমদানির পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ খামারিদের ভর্তুকি দিয়ে থাকে। সেসব খামার দুধ থেকে ননি তুলে বিভিন্ন খাদ্য তৈরি করে। আর ননিবিহীন সেই দুধে ভেজিটেবল ফ্যাট মিশ্রণ করে কমমূল্যে বিক্রি করে। সেগুলোই বাংলাদেশে আমদানি হচ্ছে। এতে দেশীয় খামারগুলো অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ছে।

সমিতির তথ্যানুযায়ী, গত সাত বছরে দেশে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত দুগ্ধ খামারের সংখ্যা বেড়ে ১২ লাখ হয়েছে। ফলে দুধের উৎপাদন বেড়েছে চার গুণ। বর্তমানে দেশের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ দুধের জোগান দেওয়ার সক্ষমতা আছে খামারগুলোর। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুগ্ধ খামার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত আছেন ৯৪ লাখ মানুষ।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে গোখাদ্য আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি করেছে ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন। এ ছাড়া পোলট্রি ও মৎস্যশিল্পের মতো দুগ্ধ খামারিদের আগামী ২০ বছরের জন্য আয়কর অব্যাহতি চায় তারা। আর দুগ্ধ খামারের বিদ্যুৎ ও পানির বিল কৃষির আওতায় আনা হোক, বাণিজ্যিক নয়।

এ ছাড়া খামারের জন্য বিদেশি যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার, তরল দুধের সঠিক বাজারজাতকরণ, এলাকাভিত্তিক দুধ সংরক্ষণ, ভোক্তাদের সচেতনতার জন্য প্রচারণা, খামারিদের বিনা জামানতে ঋণ দেওয়ার দাবি করেছে ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন।