পশুর কাঁচা চামড়া বাংলাদেশেই সস্তা: বাণিজ্যসচিব

বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশেই পশুর কাঁচা চামড়ার দাম কম বলে মনে করেন বাণিজ্যসচিব মো. মফিজুল ইসলাম। চামড়া খাতের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘পশুর কাঁচা চামড়ার দাম বাংলাদেশের চেয়েও সস্তা বিশ্বের কোনো দেশে আছে কি?’

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার দর গতবারের তুলনায় আরও কমানোর দাবি জানালে বাণিজ্যসচিব এ কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ–সংক্রান্ত বৈঠকে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, কয়েকটি সমস্যায় ভুগছে এ খাত। যেমন ট্যানারিগুলোর স্থানান্তর ঠিকমতো হয়নি। এক দিনের নোটিশে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে। ওই সময় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ক্রেতাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আর আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়াজাত পণ্যের দামও বাড়ছে না। এখনকার তরুণেরা বরং কৃত্রিম চামড়ার প্রতি ঝুঁকছেন।


বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার ও লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুই দিন আগে তিনি ইউরোপ থেকে এসেছেন। আসলে চামড়াজাত পণ্যের দাম কমেনি বরং বেড়েছে। কৃত্রিম চামড়াজাত পণ্য তৈরি হওয়ার কারণে চামড়াজাত পণ্য এখন বিলাসদ্রব্য হিসেবে গণ্য হচ্ছে। ফলে এ পণ্যের ভোক্তা কমেছে। এ খাত যে ভালো নেই, কয়েক বছরের রপ্তানি চিত্র দেখলেই বোঝা যাবে।

ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আবু রায়হান আল বেরুনী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তুলনা করে তারা দেখেছেন, প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৪৫ থেকে ৭৫ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ২০ থেকে ৩৫ টাকা হওয়া উচিত। কিন্তু এ তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভাবাবেগে তাড়িত না হয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো থেকে তিন মাসের পরিসংখ্যান নিলেই বোঝা যাবে চামড়া খাতের বাস্তব অবস্থা কী, আর কাঁচা চামড়ার দরই–বা কত হওয়া উচিত।

সব শেষে বাণিজ্যসচিব গতবারের দরটাই থাকুক তাহলে—এমন প্রস্তাব দিলে উপস্থিত সবাই হাততালি দিয়ে মেনে নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গরুর কাঁচা চামড়ার দর হবে ঢাকায় প্রতি বর্গফুট ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। আর সারা দেশে খাসির চামড়ার বর্গফুট হবে ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া হবে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। এ দর গতবারও ছিল।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, কোরবানির চামড়া গরিবের হক। তারা যেন ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।

এদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এ বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১ কোটি ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬৩টি।