ব্র্যাকে নতুন ভূমিকায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ

স্যার ফজলে হাসান আবেদ, প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন, ব্র্যাক ছবি: প্রথম আলো
স্যার ফজলে হাসান আবেদ, প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন, ব্র্যাক ছবি: প্রথম আলো

ব্র্যাক বাংলাদেশ ও ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন পদ থেকে অবসর নিচ্ছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তিনি ‘চেয়ার ইমেরিটাস’ পদে নতুন ভূমিকায় থাকবেন। নতুন নেতৃত্বের কাছে সংস্থাটির পরিচালনার দায়িত্বভার অর্পণের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। চেয়ার ইমেরিটাস হিসেবে তিনি ব্র্যাকের কৌশলগত পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। আগামী দিনগুলোয় ব্র্যাকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বিশ্বব্যাপী এর প্রভাব ও অবস্থান কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়, তা নিয়ে কাজ করবেন তিনি।

ব্র্যাকের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯৭২ সালে ৩৬ বছর বয়সে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিরি। ৬৫ বছর বয়সে নির্বাহী পরিচালকের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁকে চেয়ারপারসন নির্বাচিত করে ব্র্যাকের তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ। পরবর্তী সময়ে তিনি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের তত্ত্বাবধায়ক পর্ষদেরও চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘বিগত কয়েক বছর আমি ব্র্যাকে আমার পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে অনেক ভেবেছি এবং সেই মতো প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন আমার বয়স ৮৩ বছর। ব্র্যাককে সামনে এগিয়ে নেওয়ার কাজে যথাযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি ছিল আমার সিদ্ধান্তের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। গর্ব এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, যাতে আমার অবর্তমানেও ব্র্যাক তার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পারে।’

আসিফ সালেহকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ব্র্যাক বাংলাদেশ। এর আগে গত মে মাসে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালে যোগ দেন মুহাম্মাদ মুসা। নির্বাহী পরিচালকেরা ব্র্যাকের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবেন।

শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান ও জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আমিরা হক যথাক্রমে ব্র্যাক এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

মুক্তিযুদ্ধ–পরবর্তী বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ছোট্ট একটি ত্রাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৯৭২ সালে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। গত ৪৭ বছরে বিশ্বজুড়ে অন্তত ১১ কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে ব্র্যাক পরিণত হয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এবং কার্যকর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায়। ব্র্যাক একটি অনন্য সামগ্রিক উন্নয়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে যার আওতায় রয়েছে সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ, মাইক্রোফাইন্যান্স, উচ্চশিক্ষা, বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন কর্মসূচি। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের ১১টি দেশে বিস্তৃত হয়েছে সংস্থাটির কার্যক্রম। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ব্র্যাকের অ্যাফিলিয়েট কার্যালয় রয়েছে।