ক্যাসিনো অর্থনীতি কত বড়

আগ্রহীরা ক্যািসনো িসনেমাটাও দেখে নিতে পারেন
আগ্রহীরা ক্যািসনো িসনেমাটাও দেখে নিতে পারেন

নগরবাসী চমকে গেছেন। অনেকেরই হাঁটার দূরত্বে ক্যাসিনোর অস্তিত্বের খবর জেনে অবাক হয়েছেন। আবার অনেকের কাছেই ঢাকার ক্যাসিনোর খবর ​​‘ওপেন সিক্রেট’। বাংলাদেশে ক্যাসিনো আইনত নিষিদ্ধ। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্যাসিনো আইন মেনেই চালু আছে। বিশ্বজুড়ে ক্যাসিনোর অর্থনীতিও অনেক বড়। পকেটে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে ক্যাসিনোতে ছুটে যাওয়া মানুষের সংখ্যা মোটেই কম নয়।

নামটি কী করে এল

ক্যাসিনো কথাটা এসেছে মূলত ইতালি থেকে। ইতালীয় শব্দ–রুট কাসা, এর অর্থ বাড়ি। আনুষ্ঠানিকভাবে জায়গা বানিয়ে জুয়া খেলার প্রথম উদাহরণও ইতালির ভেনিসে, ১৬৩৮ সালে। তবে জুয়া খেলার ক্যাসিনো জনপ্রিয় করেছে আমেরিকানরাই। আইনি বৈধতা পেয়ে প্রথম ক্যাসিনো প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৩১ সালে, নেভাদায়।

ক্যাসিনো মানেই লাস ভেগাস নয়

প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো, ক্যাসিনো অর্থনীতির হালনাগাদ তথ্য পাওয়া কঠিন। অনেক তথ্যই এক, দুই বা তিন বছরের পুরোনো। অনেকেই বলে থাকেন, জুয়া খেলার যে শিল্প, তা পৃথিবীর অন্যতম বড় শিল্প। বলা হয় এটি মোটামুটি ৫০০ বিলিয়ন ডলারের শিল্প। আর অনলাইনে জুয়া খেলার যে ব্যবসা গড়ে উঠেছে, তাও ক্রমেই বড় হচ্ছে। যেমন ২০১৭ সালে অনলাইন জুয়ার বাজার ছিল ৪৫.৮ বিলিয়ন ডলারের। 

ক্যাসিনো বললেই অনেকের কল্পনায় আসে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের নাম। তবে অনেকেই হয়তো অবাক হবেন, ক্যাসিনোতে কিন্তু এশিয়াই এগিয়ে। ২০১৫-১৬ সময়ে বিশ্বব্যাপী ক্যাসিনো থেকে যে আয় হয়েছে, তার ৪৩.৪ শতাংশই এসেছে এশিয়া ও প্যাসিফিক থেকে। এরপরই আছে যুক্তরাষ্ট্র, ৪০.১ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে আছে ইএমইএ (ইউরোপ, মধ্য এশিয়া ও আফ্রিকা) অঞ্চল। এই অঞ্চলের আয় ১০ শতাংশ। পরের অবস্থানে থাকা কানাডার আয় ৩.৪ শতাংশ এবং সবশেষে লাতিন আমেরিকা, ৩.১ শতাংশ।

এগিয়ে ম্যাকাও

ম্যাকাও এখন চীনের আওতায় থাকা একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এটি পর্তুগিজ কলোনি ছিল। এই ম্যাকাও হচ্ছে বিশ্বের জুয়া খেলার সবচেয়ে বড় জায়গা। এরপরই আছে নেভাদার লাস ভেগাস। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্যাসিনো আছে এখানে। সিঙ্গাপুর হচ্ছে জুয়া খেলার আরেকটি বড় জায়গা। অল্প জায়গা, কিন্তু খেলা হয় বেশি অর্থমূল্যে। ফলে আয়ও বেশি। 

কারা বেশি জুয়া খেলে

মার্ক ডি গ্রাফিত হচ্ছেন জুয়াশিল্পের অন্যতম বড় গবেষক। তাঁর হিসাবে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জুয়া খেলে যুক্তরাজ্যের মানুষ। এরপরই আছে অস্ট্রেলিয়া। বাকি দেশগুলোর মানুষ হচ্ছে যথাক্রমে চীন ও ম্যাকাও, ভারত, আয়ারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইতালি।
বিশ্বে সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো কোম্পানি হচ্ছে লাস ভেগাস স্যান্ডস। ১৯৮৮ সালে নেভাদায় এর প্রতিষ্ঠা। ২০১৮ সালে এই কোম্পানির বার্ষিক আয় ছিল ১৩.৮ বিলিয়ন ডলার। এরপরই আছে যুক্তরাষ্ট্রের এমজিএম রিসোর্ট (১১.৮ বিলিয়ন ডলার)। পরের তিন প্রতিষ্ঠান হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সিজার এন্টারটেইনমেন্ট (আয় ৮.৪ বিলিয়ন ডলার), হংকংয়ের গ্যালাক্সি এন্টারটেইনমেন্ট (৭ বিলিয়ন ডলার) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইন রিসোর্ট (৬.৭ বিলিয়ন ডলার)। শীর্ষ দশে একটি মালয়েশিয়ান কোম্পানিও আছে, জেনটিং। তাদের আয় ১.৯ বিলিয়ন ডলার।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের ক্যাসিনো শিল্প আসলে কত বড়?

—শওকত হোসেন