শেয়ারবাজার নিয়ে ১১টি গল্প

শেয়ারবাজারের দুরবস্থার কথা আমরাও তো এভাবে মানতে চাই না
শেয়ারবাজারের দুরবস্থার কথা আমরাও তো এভাবে মানতে চাই না

পতনে দিশেহারা দেশের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। হাসিঠাট্টার ছলে শেয়ারবাজারের আসল গল্পগুলো জানা থাকলে খানিকটা মনের শান্তি হয়তো মিলতে পারে।

শেয়ারবাজারে টাকা নেই, তারল্য সংকট আছে, কথাটা কিন্তু ঠিক না। এখানে টাকা সব সময়ই থাকে, কেবল পকেট বদলে যায়।

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষক কেন সৃষ্টি হয়েছিল জানেন তো? যাতে আবহাওয়া বিশ্লেষকদের প্রতি সামান্য হলেও মানুষের বিশ্বাস থাকে।

ব্রোকার শেয়ারবাজারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। ব্রোকার হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, যাঁর বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের ওপর আপনি বিশ্বাস রাখবেন এবং সেই বিশ্বাস তিনি ভাঙবেন না। এবার ইংরেজিতে ব্রোকার শব্দটি লিখুন, তারপর শেষ ‘আর’ অক্ষরটি বাদ দিয়ে পড়ুন।

ব্রোকার আপনার পক্ষে বিনিয়োগ সিদ্ধান্তটি নেবেন, বিনিয়োগ করবেন এবং তার বিনিময়ে আপনি তাঁকে কমিশন দেবেন। মনে রাখবেন, এই কমিশনই হচ্ছে শেয়ারবাজারের একমাত্র নির্ভরযোগ্য আয়ের পথ।

ও! প্রাথমিক শিক্ষাটাই তো হলো না। শেয়ারবাজারে শেয়ার বা স্টক হচ্ছে আসলে একটি জাদুর কাগজ। যেমন, ধরেন আপনি কিনলেন ১০ টাকায়, কিনেই দেখলেন সেটি আসলে ৪ টাকা। বিশেষ করে দেশের বর্তমান সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইপিওর মাধ্যমে যেসব কোম্পানির শেয়ারবাজারে এনেছে, সেগুলোর বেশির ভাগই তো আসলে জাদুর কাগজ।

বিশ্বমন্দায় সময়ের গল্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাকি নতুন এক মারণাস্ত্র আবিষ্কার করেছে। তাতে ভবন, রাস্তাঘাট ঠিক থাকে, খালি মানুষগুলোই উধাও হয়ে যায়। আর সেই মারণাস্ত্রের নাম শেয়ারবাজার।

শেয়ারবাজার হলো এমন এক বাজার, যেখানে প্রতিদিন সকালে দুই দল মানুষ মিলিত হয়। এর মধ্যে এক দলের থাকে অর্থ, আরেক দলের অভিজ্ঞতা। দিন শেষে তারা কেবল নিজেদের সম্পদ হাতবদল করে। যাদের অর্থ ছিল তারা অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফেরে আর অভিজ্ঞরা ফেরে অর্থ নিয়ে।

শেয়ারবাজারে তিন ধরনের বিনিয়োগকারী থাকেন। এর মধ্যে ১০ শতাংশ বাজারের কিছুই জানেন না। ১০ শতাংশ আছেন, যাঁরা কিছুটা জানেন। আর ৮০ শতাংশ জানেনই না যে তাঁরা আসলে কিছুই জানেন না। সুতরাং আপনাকে কিছু জানার দলে থাকতে হবে।

এক নব্য বিনিয়োগকারী ভাবলেন, তাঁকে কিছু জানতে হবে। চলে গেলেন এক ব্রোকারের বাসায়। ড্রয়িংরুমে বসে আছেন ব্রোকার ভদ্রলোকের অপেক্ষায়, রুমে ঢুকল ছয় বছরের এক ছেলে। তিনি কথা বলতে লাগলেন ছেলেটার সঙ্গে।

‘তোমার বাবা কই? কী করেন তিনি?’

‘আমার বাবা মাছ ধরে।’

একটু খাবি খেলেন তিনি। অবাক হয়ে বললেন, ‘মাছ ধরে?’

ছেলেটা মাথা দুলিয়ে বলল, ‘মাছই তো ধরে। বাবার কাছে আপনার মতো লোকজন আসে, চলে যাওয়ার পর আমার বাবা মাকে বলে, আরও একটা বড় মাছ ধরলাম। ভালোই লাভ হবে।’

১০

নিউইয়র্ক শহরে একবার চরম ঠান্ডা পড়েছিল। ওয়াল স্ট্রিটের এক নামকরা ব্রোকারকে সে সময়ে নিজের প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে একবার হাঁটতে দেখা যায়। ওই একবারই নাকি ব্রোকাররা নিজের পকেটে হাত দিয়েছিলেন আর বাকি সময় তাঁদের হাত থাকে অন্যের পকেটে।

১১

বড় সাহেব অফিসে গিয়েই খবর দিলেন ক্যাশিয়ারকে, কিন্তু ক্যাশিয়ার সাহেব আর আসেন না। বারবার খবর দিয়েও পাওয়া গেল না। শেষে হাত কচলাতে কচলাতে অফিসের ম্যানেজার এসে জানালেন, ক্যাশিয়ার অফিসে নেই, স্টক মার্কেটের দিকে গেছেন।

‘স্টক মার্কেটে কেন?’

‘স্যার, তিনি তো তিন দিন ধরেই যাচ্ছেন, কিন্তু তাঁকে বলে দেওয়া হয়েছে যে আজই শেষ দিন।’

‘শেষ দিন কেন?’

‘না, মানে, হিসাব মিলছে না তো, তাই শেষ চেষ্টা হিসেবে শেয়ারবাজারে গেছেন। আজও যদি টাকা নিয়ে এসে হিসাব মেলাতে না পারেন, তাহলে তো পুলিশকে খবর দিতেই হবে।’