জানুয়ারি থেকে উৎপাদন খাতে ঋণের সুদ কমে ৯ শতাংশ

উৎপাদন খাতে ঋণের সুদ কমিয়ে ৯ শতাংশ নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ আজ মঙ্গলবার রাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী জানুয়ারি থেকে নতুন সুদহার কার্যকরের নির্দেশনা দিয়ে দুই-একদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে ব্যাংক ভেদে উৎপাদন খাতে সুদ হার ১১ থেকে ১৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিচালনা পর্ষদে সুদ হার কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন উৎপাদন খাতে ৯ শতাংশ সুদ হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’

দীর্ঘদিন ধরে সরকারের পক্ষ থেকে এক অঙ্কে (১০ শতাংশের কম) সুদ হার কমানোর ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংক মালিকেরাও দেড় বছর ধরে এমন ঘোষণা দিয়ে নানা সুবিধা নিয়ে আসছেন। তবে সুদ হার আর কমেনি। এবার ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণের সুদের সীমা বেঁধে দিতে যাচ্ছে, যা মুক্তবাজার অর্থনীতির দেশে নজিরবিহীন ঘটনা বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা।

তবে ব্যাংক খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ব্যাংকগুলোর আয়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাঁরা বলেন, সরকারের ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করলে সাড়ে ৮ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। আবার ব্যাংক ভেদে আমানতের সুদ হার সাড়ে ৫ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো কেন ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন খাতে ঋণ দেবে? তাই সুদের হার এক অঙ্কে নামলে উৎপাদন খাতের উদ্যোক্তারাই সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন। যার প্রভাব পড়বে রাজস্ব আয় ও শেয়ারবাজারেও। উৎপাদন খাতের মধ্যে কোন কোন শিল্প পড়বে, সেটিও এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সুদ হার কমানো হলে প্রতিটি ব্যাংকের আয় ১৫০ কোটি টাকার বেশি কমে যাবে। যার ফলে ব্যাংকগুলোর মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে রাজস্ব আদায় ও শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।