শেষের দিকে সংকট প্রকট হয়েছে

>বিদায়ী ২০১৯–এর শুরুটা ভালো ছিল, শেষটা তেমন ভালো হলো না। শুরুতে ছিল অনেক প্রতিশ্রুতি, শেষটা ছিল অনেক ক্ষেত্রেই আশাভঙ্গের। কারণ, চাপের মুখে আছে অর্থনীতি। অর্থনীতির সঙ্গে যাঁরা নানাভাবে সম্পর্কিত, তাঁরা কীভাবে দেখছেন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে। কেমন গেল বিদায়ী বছরটি। অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী। তাহলে নতুন বছরে যাচ্ছি কী নিয়ে, প্রত্যাশাগুলো কী। ঠিক এই প্রশ্নগুলোই রাখা হয়েছিল দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে। তাঁরা অর্থনীতির মূল্যায়ন যেমন করেছেন, তেমনি বলেছেন কী তাঁরা চান, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে অর্থনীতি।
ফজলুল হক
ফজলুল হক

কেমন গেল
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে হতাশাজনক বছর পার করলাম। কারণ, বছরের শেষ চার-পাঁচ মাস রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি আমাদের জন্য বিরাট ধাক্কা। কারণ, বিগত বছরগুলোতে আমরা এমন চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়িনি। তৈরি পোশাকের বাইরেও বছরটি কিছুটা হতাশাজনক। আমরা যেসব জায়গায় এগিয়ে যাচ্ছিলাম, সেখানেও বাধা পড়ছে। অর্থনীতির গতি কিছুটা শ্লথ। বছরের শুরুটা খারাপ না হলেও শেষের দিকে সংকট প্রকট হয়েছে।

চ্যালেঞ্জ
ব্যবসায়িক দিক থেকে বললে ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের অবস্থা ভয়াবহ। ব্যাংকে টাকা নেই। সুদের হারও বেশি। শেয়ারবাজারে নতুন আইপিও অনিশ্চিত। ফলে নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সুদের হার কমানো বড় চ্যালেঞ্জ। কেবল প্রজ্ঞাপন জারি করে সুদের হার কমানো যাবে না। সে জন্য অন্যান্য ব্যবস্থাও নিতে হবে। সুদের হার বেঁধে দেওয়া মানে তো ব্যাংকগুলোকে ন্যূনতম মুনাফা করার নিশ্চয়তা প্রদান করা। অন্য কোনো ব্যবসায় তো এমন সুযোগ নেই। অন্যদের চেয়ে ব্যাংক খাত বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। রপ্তানিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির ধারা নিয়ে নতুন বছর শুরু করছে পোশাক খাত। সেখান থেকে বেরিয়ে আসাটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। কেবল সরকারের দিকে না তাকিয়ে উদ্যোক্তাদের নিজেদের কিছু কর্মকৌশল নিতে হবে।

তিন প্রত্যাশা
ব্যাংক ব্যবস্থার উন্নতির জন্য সরকার ও ব্যাংকাররা কাজ করবেন। পুঁজিবাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। ব্যাংকঋণের সুদের হার কমে আসবে। রপ্তানিতে দুই অঙ্কের ঘরে প্রবৃদ্ধি থাকবে। আশা করি, এসব বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ফজলুল হক
সাবেক সভাপতি
বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ)