মানুষের আস্থা যাতে থাকে

>বিদায়ী ২০১৯–এর শুরুটা ভালো ছিল, শেষটা তেমন ভালো হলো না। শুরুতে ছিল অনেক প্রতিশ্রুতি, শেষটা ছিল অনেক ক্ষেত্রেই আশাভঙ্গের। কারণ, চাপের মুখে আছে অর্থনীতি। অর্থনীতির সঙ্গে যাঁরা নানাভাবে সম্পর্কিত, তাঁরা কীভাবে দেখছেন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে। কেমন গেল বিদায়ী বছরটি। অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী। তাহলে নতুন বছরে যাচ্ছি কী নিয়ে, প্রত্যাশাগুলো কী। ঠিক এই প্রশ্নগুলোই রাখা হয়েছিল দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে। তাঁরা অর্থনীতির মূল্যায়ন যেমন করেছেন, তেমনি বলেছেন কী তাঁরা চান, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে অর্থনীতি।
আহসান খান চৌধুরী
আহসান খান চৌধুরী

কেমন গেল
২০১৯ সাল আমাদের ভালোই গেছে। প্রতিকূলতার মধ্যে খাদ্য খাতে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি ছিল। প্রতিকূলতার মধ্যে একটি হলো, সুদের হার বেড়ে গিয়েছিল। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ততটা ভালো ছিল না। সব মিলিয়ে আর্থিক খাতটা কষ্টকর ছিল। এ ছাড়া খাদ্য খাতে বিভিন্ন তদারককারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় দরকার ছিল। এর মধ্যেও ভালো করার কারণ, গ্রামীণ অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী ছিল। প্রাণ–আরএফএলের ব্যবসা প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত।

চ্যালেঞ্জ
প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে আমি আর্থিক খাতকে রাখব, আর্থিক সঠিক ব্যবস্থাপনা বড় চ্যালেঞ্জ। আমি শুধু কম হারে সুদের কথা বলছি না, আমি চাইব ভালো ব্যবস্থাপনা। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ পুঁজিবাজার। আমি চাই পুঁজিবাজারে যেন ভালো কোম্পানি আসে। মানুষ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে যাতে আস্থা পায়, সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। তৃতীয় চ্যালেঞ্জ, সার্বিকভাবে মানুষের আস্থা মজবুত রাখা। আস্থা যদি না থাকে, তাহলে যেকোনো কিছুই কঠিন হয়ে যায়। 

তিন প্রত্যাশা
প্রথম প্রত্যাশা হলো, আগামী দিনগুলোতে প্রবৃদ্ধি আসবে রপ্তানি খাত থেকে। আমরা যারা অভ্যন্তরীণ বাজারে ভালো করছি, তাদের দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে রপ্তানির ওপর বাড়তি নজর দিতে হবে। আমি আশা করছি, রপ্তানি খাতে খাদ্য কোম্পানিগুলো আগামী বছর আরও ভালো করবে। এর কারণ, মার্কিন–চীন বাণিজ্যযুদ্ধের সুফল পাওয়া যাবে। ভালো ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা সেটা নিশ্চিত করতে পারলে রপ্তানি বাড়বে।

দ্বিতীয় প্রত্যাশা, স্থানীয় বাজারও ভালো যাবে। কারণ বিনিয়োগ ও সরকারি ব্যয় বাড়বে। অবকাঠামো উন্নয়নের সুফল আগামী বছর পাওয়া যেতে পারে। রপ্তানি বাড়বে। সব মিলিয়ে কর্মসংস্থান পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এতে স্থানীয় বাজার আরেকটু ভালো যাওয়ার আশা আছে।

তৃতীয় প্রত্যাশা, আর্থিক খাতে সরকার কিছু ভালো সিদ্ধান্ত নিলে আগামী বছরটি ভালো যাবে। আমি মনে করি না, আর্থিক খাতের সমস্যা নিরসন–অযোগ্য। চেষ্টা করলে ঠিক করা যাবে।

আহসান খান চৌধুরী
চেয়ারম্যান
প্রাণ–আরএফএল গ্রুপ