দেশে ডিজেলের মজুত কম

রয়টার্স ফাইল ছবি।
রয়টার্স ফাইল ছবি।

দেশে জ্বালানি তেল তথা ডিজেলের মজুত কমে এসেছে। নিয়মিত আমদানি না হওয়াই মজুত কমে আসার অন্যতম কারণ। এতে সেচ মৌসুমে ডিজেলের সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্র জানায়, দেশে মাত্র ৭ থেকে ৮ দিনের ডিজেল মজুত আছে। যদিও ২০০৪ সালে ঘোষিত জাতীয় জ্বালানি নীতিমালায় কমপক্ষে ৬০ দিনের জ্বালানি মজুত রাখার বিধান রয়েছে।

আগামী ২৯ জানুয়ারি সিঙ্গাপুর থেকে ডিজেল ভর্তি একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ার কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার ডিজেল ভরে জাহাজাটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। ওই জাহাজে করে মাত্র ৩০ হাজার টন ডিজেল আনা হচ্ছে, যা দিয়ে কেবল দুদিনের চাহিদা মিটবে।

বিপিসির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, দেশে বিভিন্ন ডিপোতে মাত্র ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭১৭ টন ডিজেল মজুত আছে। ওই মজুত থেকে অবিক্রেয় মজুত বা ‘ডেড স্টক’ বাদ দিলে সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ দিনের চাহিদা মিটবে। ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন ডিপোতে রেশনিং করে ডেজেলের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। এমনকি এক কোম্পানি আরেক কোম্পানির ডিপোতে ডিজেল সরবরাহ দিচ্ছে।

বিপিসি সূত্র জানায়, দেশে প্রতিদিন গড়ে ১৪ হাজার ৪১৬ টন ডিজেলের চাহিদা রয়েছে। ভরা মৌসুমে চাহিদা ২০ হাজার টন ছাড়িয়ে যায়। কয়েক দিন পর ভরা মৌসুম শুরু হচ্ছে। বোরো ধানের আবাদের জন্য বীজতলাও বসানো হয়েছে। বোরো ধান রোপণও শুরু হয়েছে দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে। এই সময়ে সেচের জন্য ডিজেলের প্রয়োজন হবে।
বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ইস্টার্ন রিফাইনারির মোট ২৪টি ডিপো রয়েছে। বর্তমানে দেশে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের অনেক ডিপোতে ডিজেলের সংকট রয়েছে। কিছু জ্বালানি মজুত আছে পদ্মা ও যমুনার ডিপোতে, যা পর্যাপ্ত নয়।

জ্বালানির দুটি জাহাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে না পৌঁছানো সংকটের কারণ বলে জানিয়েছেন বিপিসির পরিচালক (পরিচালন ও পরিকল্পনা) ও সরকারের যুগ্ম সচিব মো. সরওয়ার আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ডিপোগুলো এখনো “ড্রাই” (তেলশূন্য বা ডেড স্টক) হয়নি।’

এক প্রশ্নের জবাবে সরওয়ার আলম আরও বলেন, ৩০ জানুয়ারি ছাড়াও ফেব্রুয়ারিতে ডিজেল নিয়ে আরও কিছু জাহাজ বন্দরে ভেড়ার কথা রয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ডিজেল এলে ভরা মৌসুমে সংকট হবে না।

মেঘনা পেট্রোলিয়ামের একজন ডিপো ব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করে প্রথম আলোকে জানান, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আন্দোলনের কারণে জ্বালানির সংকট দেখা দিয়েছিল। পরিবহনব্যবস্থা ঝুঁকির মধ্যে থাকার কারণে তখন জ্বালানির সংকট তৈরি হয়। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। নিয়মিত আমদানি না হওয়ার কারণে এবারের সংকট।