উন্নত দেশ ভারতের জিএসপির প্রয়োজন নেই: যুক্তরাষ্ট্র

ভারতকে একটি উন্নত অর্থনীতির দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির অফিস (ইউএসটিআর) বলছে, ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দেওয়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর সুবিধা এখন নেওয়ার যোগ্য নয় ভারত। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভারত চাইলেও অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা (জিএসপি) আর দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।

জিএসপি যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সবচেয়ে পুরোনো ও বড় বাণিজ্যসুবিধা। এর মাধ্যমে উন্নয়শীল অর্থনীতির দেশগুলোকে বিনা শুল্কে শত শত পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এত দিন ভারত এই বিশেষ মর্যাদা পেত। গত বছরের ৫ জুন থেকে ভারতকে দেওয়া জিএসপি বাতিল করছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতকে উন্নত দেশ বলার মাধ্যমে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে এই সুবিধা পুনরায় দাবি করলেও তা পাওয়ার সম্ভাবনা ভারতের খুবই কম। আজ বুধবার বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

উন্নয়নশীল দেশের মানদণ্ড অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশেরও কম অংশ রয়েছে উন্নয়নশীল দেশের, যে সীমা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে ভারত। ২০১৭ সালে বিশ্ববাণিজ্যের ভারতের রপ্তানির অবদান ২ দশমিক ১ শতাংশ এবং আমদানি অবদান ২ দশমিক ৬ শতাংশ। ইউএসটিআরের যুক্তি, ভারত, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো জি-২০ ব্লকের অংশ, তাই তাদের বিশ্বব্যাংকের তত্র অনুযায়ী মোট জাতীয় উৎপাদনে (জিএনআই) মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৩৭৫ ডলারের নিচে থাকার পরেও উন্নত হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে।

অবশ্য ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল বলেন, ‘অন্য দেশগুলোর সরবরাহ করা জিএসপির মতো সুবিধা এখন আর ভারতের প্রয়োজন নেই। আমাদের নিজেরই এখন প্রতিযোগিতামূলক বাজার হয়ে ওঠা উচিত। বিষয়টি এখন কেবল ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনার অংশ হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।

জিএসপি ব্যবস্থাপনার সুবিধা যে কটি দেশ পেত, তার মধ্যে ভারতের উপকার হতো সবচেয়ে বেশি। ইউএসটিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ২৬ কোটি ডলার শুল্কছাড় সুবিধা পেয়েছে তারা। গত বছরের জানুয়ারি মাসে কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০১৭ সালে সাড়ে ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায় ভারত। কিন্তু এবার বন্ধ হচ্ছে সেই রাস্তা। ২০১৭ সালে তুরস্ক ছিল পঞ্চম বৃহত্তম সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো ভারত সফরে যাচ্ছেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি দুই দিনের সফরে ভারত পৌঁছানোর কথা রয়েছে তাঁর। এই সফলে বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, যদি সঠিক মনে হয়, তবে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে সই করবেন।