উচ্চ আয়ের দেশগুলোর প্রভাব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে

>
এসডিজি-বিষয়ক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফায়াজ বাকির ও হাসানুজ্জামান।
এসডিজি-বিষয়ক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফায়াজ বাকির ও হাসানুজ্জামান।
বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, ভারত, পাকিস্তান, পেরু, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সাব সাহারা আফ্রিকার দেশসমূহের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে বইটি লেখা।

স্থানীয় পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনে কীভাবে আরও কার্যকর পদ্ধতিতে অর্থ ব্যয় করা যায়, তা নিয়ে লেখা একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। কানাডার অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। রাউটলেজ প্রকাশিত এ বই সম্পাদনা করেছেন ফায়াজ বাকির, নীপা ব্যানার্জি ও সান্নি ইয়াইয়া। 

বেটার স্পেন্ডিং ফর লোকালাইজিং গ্লোবাল সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস: এক্সামপলস ফ্রম দ্য ফিল্ড শীর্ষক এই বই এক লাখ শব্দে লেখা। বইটি আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, ভারত, পাকিস্তান, পেরু, দক্ষিণ আফ্রিকা, সাব সাহারা আফ্রিকার দেশসমূহ ও উরুগুয়ের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে রচিত। 

বইয়ের শুরুতে উন্নয়ন সহযোগিতার ধারণা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এত দিন বিশ্বের উচ্চ আয়ের দেশগুলো নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে সহায়তা করেছে। এর মধ্য দিয়ে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ওপর উচ্চ আয়ের দেশগুলো প্রভাব বিস্তার করেছে। কিন্তু এখন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেও নতুন এক দাতাগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। ফলে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর প্রভাব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আবার কাজের নতুন এক কাঠামোও তৈরি হয়েছে। 

বইটির একটি অধ্যায় লিখেছেন কানাডায় গবেষণারত বাংলাদেশি নাগরিক হাসানুজ্জামান। সেই অধ্যায়ের আলোকে তিনি ‘ডেভেলপমেন্ট মিরর অব বাংলাদেশ ফর সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ লিখেছেন। এতে তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগিতা আরও সংহত করার একটি পদ্ধতি হচ্ছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি। 

নীতি স্থানান্তর প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। এই যে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা সেই সম্পর্কে বইটিতে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়া কাজে লাগিয়ে এসডিজি খাতে ব্যয় প্রক্রিয়া উন্নত করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সমস্যা চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে সমাধানের প্রক্রিয়া। নিম্ন মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ ও উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ পেরুর মধ্যে কীভাবে নীতি স্থানান্তরিত হতে পারে, তা নিয়েও বিশ্লেষণ করা হয়েছে বইটিতে। 

বইটির দুটি অধ্যায়ে আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যদিও দুই দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভিন্ন। আফগানিস্তান যেখানে পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র উন্নয়নশীল দেশ, সেখানে বাংলাদেশ এখন এশিয়ার দ্রুততম প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। বলা হয়েছে, ভিন্নতা থাকলেও বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান যে সামাজিক নেতৃত্বে পরিচালিত উন্নয়ন কর্মসূচিতে বিনিয়োগ করছে, তা এসডিজির অভীষ্ট অর্জনে সহায়ক। বইয়ে দুই দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা আরও বাস্তবসম্মত এবং চাহিদাভিত্তিক হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। 

বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের প্রশংসা করা হয়েছে বইটিতে। আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে তুলনা করে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের জাতীয় সংহতি কর্মসূচির মাধ্যমে যেখানে সামাজিক উন্নয়ন কাউন্সিল গঠিত হয়েছে, সেখানে ব্র্যাকের প্রণীত সামাজিক নেতৃত্বে পরিচালিত কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ সামাজিক ক্ষমতায়নের উচ্চস্তরে পৌঁছেছে।