এক দিনে বিপুল সম্পদ হারালেন শীর্ষ ১০ ধনী

করোনাভাইরাসের প্রভাবে অর্থনীতির অনেক হিসাব-নিকাশই নতুন করে লিখিত হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটার কারণে বিমানের উড়ান বাতিল থেকে শুরু করে শেয়ারবাজারে ধস—কিছুই বাদ নেই। চলতি সপ্তাহের সোমবার মার্কিন শেয়ারবাজারের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ও ডাও জোনস সূচক ৮ শতাংশ হারে পড়েছে। আর তাতে সেদিন বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদমূল্য কমেছে ৩ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার।

১৯৮৭ সালের এক সোমবার শেয়ারবাজারে বড় ধস নেমেছিল। সেই কুখ্যাত দিনটি ‘ব্ল্যাক মানডে’ হিসেবে পরিচিত। আর এই সপ্তাহের সোমবার বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর ৯ জনের সম্পদ কমেছে ১০০ কোটি ডলারের ওপরে।

টাকার অঙ্কে ও হারে সোমবার সবচেয়ে বেশি সম্পদমূল্য কমেছে বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা বার্নার্ড আরনল্ট। তাঁর সম্পদমূল্য কমেছে ৬০০ কোটি ডলার বা ৬ শতাংশ। তিনি প্যারিসভিত্তিক এলভিএমএইচের প্রধান নির্বাহী এবং বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী। সোমবার তাঁর সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৯ হাজার ২৬০ কোটি ডলার, শুক্রবার যা ছিল ৯ হাজার ৮৬০ কোটি ডলার।

সোমবার দিন শেষে বিশ্বের শীর্ষ ধনী জেফ বেজোসের সম্পদমূল্য কমেছে ৫৬০ কোটি ডলার। আগের সপ্তাহেই তাঁর সম্পদ কমেছিল ১ হাজার ৪১০ কোটি ডলার। সোমবার আমাজনের শেয়ারমূল্য কমেছে ৫ শতাংশের বেশি। ফলে দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে নেমে এসেছে আমাজনের শেয়ার। বিনিয়োগ-গুরু ওয়ারেন বাফেটও বাদ যাননি। তাঁর সম্পদমূল্য কমেছে ৫৪০ কোটি ডলার। দুই সপ্তাহে আগেই বাফেট করোনাভাইরাসকে মার্কিন অর্থনীতির সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।

>সোমবার মার্কিন শেয়ারবাজারের পতনে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর সম্পদমূল্য কমেছে ৩ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার। কুখ্যাত ‘ব্ল্যাক মানডের’ পুনরাবৃত্তি।

এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ ধনীদের মধ্যে কেউ কেউ ব্যবস্থা নিয়েছেন। মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বিল গেটস ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোষণা দিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় তাঁদের ফাউন্ডেশন ১০ কোটি ডলার দিতে যাচ্ছে। এই ফাউন্ডেশন সাধারণত স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করে থাকে। গত মাসে এক নোটেও বিল গেটস এই ভাইরাস সম্পর্কে লিখেছিলেন।

করোনাভাইরাস নিয়ে নানা বিজ্ঞাপন সত্ত্বেও শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানি ফেসবুক ও অ্যালফাবেটের শেয়ারের দাম কমেছে। এতে মার্ক জাকারবার্গ ও ল্যারি পেজের সম্পদমূল্য কমেছে যথাক্রমে ৪২০ কোটি ও ৩৩০ কোটি ডলার।

তবে এই পরিস্থিতির মধ্যে মাইকেল ব্লুমবার্গের সম্পদমূল্য কমেনি। এর কারণ, তাঁর কোম্পানি ব্লুমবার্গ এলপির শেয়ারবাজারে লেনদেন হয় না। এটি প্রাইভেট কোম্পানি। মাইকেল ব্লুমবার্গ একবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ফলে তাঁর শেয়ার সোমবার লেনদেন হলে নিঃসন্দেহে দাম কমত।

ধনীদের ব্যাপারটাই এ রকম। সাধারণত প্রতিদিনই শেয়ারের দাম ওঠানামার সঙ্গে তাঁদের সম্পদমূল্য বাড়ে বা কমে। আর যখন এ রকম বিশেষ কিছু ঘটে, তাহলে তো কথাই নেই।