পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করলে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনার এই সময়ে উৎপাদিত বা সরবরাহ করা পোশাকের কোনো ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত করলে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ক্রয়াদেশের এফওবি (ফ্রেইড অন বোর্ড) মূল্যের শতভাগ পরিশোধ করতে বিদেশি ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্টার নেটওয়ার্ক।

স্টার নেটওয়ার্ক বুধবার এক বিবৃতিতে করোনা সংকট মোকাবিলায় এই আহ্বান জানিয়েছে। এশিয়ার ছয় দেশের পোশাক, বস্ত্র, হোসিয়ারি ও টাওয়েল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের নয়টি ব্যবসায়িক সংগঠনের জোট এই স্টার নেটওয়ার্ক বা সাসটেইনেবল টেক্সটাইল অব দ্য এশিয়ান রিজিওন। এতে যুক্ত রয়েছে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।

বিবৃতিতে ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতি স্টার নেটওয়ার্ক পণ্যে কোনো ক্রয়াদেশ জাহাজীকরণ হয়ে গেলে তার মূল্য পরিশোধ করার পাশাপাশি কারখানায় কোনো ক্রয়াদেশের পণ্য উৎপাদন হয়ে গেলে কিংবা উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল প্রস্তুত হলে সেই ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত না করার আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে উৎপাদিত বা জাহাজীকরণ সম্পন্ন কোনো ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত করলে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছে স্টার নেটওয়ার্ক।

এ ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতির কারণে পণ্য উৎপাদন বা সরবরাহে বিলম্ব হলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি না করা, ক্রয়াদেশের শর্তাবলি সঠিকভাবে মেনে চলা, কোনো ধরনের সমস্যা হলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার বিষয়ে জোর দিয়েছে স্টার নেটওয়ার্ক।

স্টার নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। এ ছাড়া চীনের ন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল কাউন্সিল (সিএনটিএসি), গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ইন কম্বোডিয়া (জিএমএসি), মিয়ানমার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এমজিএমএ), পাকিস্তান হোসিয়ারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিএইচএমএ), পাকিস্তান টেক্সটাইল এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিটিইএ), টাওয়েল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তান (টিএমএ) এবং ভিয়েতনাম টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ভিআইটিএএস) স্টার নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

করোনার কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত। গতকাল পর্যন্ত ১ হাজার ১১৯ কারখানার ৯৬ কোটি পিস পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। তাতে ৩০৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এমনটাই জানিয়েছে বিজিএমইএ।

অবশ্য সুইডেনভিত্তিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম তাদের মনোনীত কারখানায় ইতিমধ্যে যেসব পোশাক তৈরি হয়েছে, সেসব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অনেকটা সেই পথেই হাঁটবে বলে পোশাক রপ্তানিকারকদের ইতিমধ্যে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পিভিএইচ, স্পেনের ইন্ডিটেক্স, যুক্তরাজ্যের মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার (এমঅ্যান্ডএস), ফ্রান্সের কিয়াবি, যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেটসহ কয়েকটি ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া প্রাইমার্ক পোশাকশ্রমিকদের জন্য একটি তহবিল গঠন করেছে। তহবিলের অর্থ পাবেন বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের শ্রমিকেরা।