আশঙ্কার চেয়েও বেশি সংকুচিত হয়েছে চীনের অর্থনীতি

চীনের অর্থনীতি প্রথম প্রান্তিকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ছবি: রয়টার্স
চীনের অর্থনীতি প্রথম প্রান্তিকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ছবি: রয়টার্স

কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো সংকুচিত হয়েছে চীনের অর্থনীতি। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে কলকারাখানা সব বন্ধ রাখায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

আজ শুক্রবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই অর্থনীতি প্রথম প্রান্তিকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।

করোনাভাইরাস চীনের অর্থনীতিতে যে ক্ষতি করেছে, তা অন্য দেশগুলোর জন্যও ব্যাপক উদ্বেগের বিষয়। কারণ, চীন হলো এই বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারখানা। বড় বড় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মাঝারি–ছোট সব ধরনের কারখানার পণ্য উৎপাদন হয় এখানে।

এর আগে ১৯৯২ সালে এক প্রান্তিকে অর্থনৈতিক সংকোচন দেখেছিল চীন।

ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গবেষক ইউয়ি সু বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে জিডিপি সংকোচন স্থায়ী আয়ের ক্ষতির কারণে হয়েছে। সেই সঙ্গে ছোট সংস্থাগুলোর দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ও কর্মসংস্থানের ক্ষতিতে প্রতিফলিত হয়েছে।’

গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধ ছিল তুঙ্গে। তবে ওই অস্থিরতার মধ্যেও চীনের মোট দেশজ উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি হয় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। গত দুই দশকে চীন গড়ে প্রায় ৯ শতাংশ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। যদিও সরকারি পরিসংখ্যান নিয়ে বিশ্লেষকদের প্রশ্ন রয়েছে, তবে তারপরও তা আশাব্যঞ্জক ছিল।

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে চীনের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ে। কারণ জানুয়ারির শেষ দিকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে বৃহৎ আকারে শাটডাউন এবং কোয়ারেন্টিন চালু করেছিল তারা। তাই অর্থনীতিবিদেরা ভালো কিছু প্রত্যাশা করছিলেন না। তবে সরকারি তথ্য যা ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়েও খারাপ হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে এটায় প্রতিফলিত হয় যে ভাইরাসের বিশাল প্রাদুর্ভাব এবং এটি সম্পর্কে সরকারের কঠোর প্রতিক্রিয়া, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছে। গত বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয় ৬ শতাংশ। এবার সেই আশাও করা যাচ্ছে না। তবে বেইজিং ইঙ্গিত দিয়েছে যে অর্থনীতি স্থিতিশীল ও পুনরুদ্ধার করার জন্য কিছুদিনের মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সমন্বয় করবে তারা।