প্রযুক্তির সহায়তায় করণাকালীন কৃষকের সমাধান

এবার বোরো ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে । জমিতে সোনালি ফসল দেখে কৃষক যতটা না খুশি তার থেকে বেশি চিন্তাগ্রস্থ কিভাবে এই ফসল ঘরে তুলবেন? একে তো শ্রমিক স্বল্পতা তার উপর আবার করোনা ভাইরাসের প্রকোপ।

দেশের মোট ধান উৎপাদনের প্রায় ৬০ ভাগ আসে এই বোরো ফসল থেকে। যার সিংহভাগই চাষ হয় হাওর জেলাগুলোতে। অন্যান্য হাওরের মতো এবার সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে প্রায় ২ লাখ ২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন হবে এবার।

কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ধান কাটার মৌসুমে প্রায় ৪৪ ভাগ শ্রমিক স্বল্পতা থাকে। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ইতোমধ্যে অনেক উপজেলা লকডাউন হয়ে যাওয়ায় অন্যান্য জেলা বা উপজেলা থেকে আসতে পারছেন না শ্রমিকেেরা। যাও অল্প সংখ্যক শ্রমিক মাঠে কাজ করছেন ধান কাটার সময় তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারছেন না। এর ফলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

এমন অবস্থায় কৃষক ভাইদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার। দেশের অন্যতম কৃষি যন্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসিআই মটরস সরকারী উন্নয়ন সহায়তায় হাওরের কৃষকদের মাঝে জাপানি প্রযুক্তির ইয়ানমার কম্বাইন হারভেস্টার সরবরাহ করছে। এই হারভেস্টার ব্যবহার করে কৃষক ১ ঘণ্টায় ১ একর জমির ধান একই সাথে কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করতে পারবেন। এতে তেল খরচ ৮-১০ লিটার ডিজেল। দিনে এই হারভেস্টার দ্বারা ৮-১০ একর জমির ধান কাটা মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তা বন্দী করা যায়। প্রতি একর এ খরচ মাত্র ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা । একটি হারভেস্টার ১ দিনে প্রায় ১৭০ জন শ্রমিকের কাজ করতে পারে । এতে যেমন সময় ও খরচ বেঁচে যাচ্ছে সেই সাথে শ্রমিক স্বল্পতার সমাধান হচ্ছে এবং সামাজিক দূরত্ব বা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকছে না ।

হারভেস্টার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসিআই মটরস হারেভস্টার সরবরাহের পাশাপাশি ড্রাইভার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে ও সার্বক্ষণিক বিক্রয়ত্তর সেবাও নিশ্চিত করছে।

সরকারী উন্নয়ন সহায়তায় যতগুলো হারভেস্টার হাওর এলাকায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কৃষক ভাইদের সোনার ফসল ঘরে তোলার জন্য এরকম গুনগত মানসম্পন্ন আরও হারভেস্টার প্রদানের জন্য সরকারের অতি দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন।